আজকের শিরোনাম :

গিরিশ ঘোষের শেষ অভিনয়

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২১, ১৬:১২

তারিখটা ছিল ক’দিন আগের, ১৫ জুলাই। সাল ১৯১১। সে ছিল এক শনিবার।  

গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটার এবং মিনার্ভা থিয়েটারে একইসঙ্গে অভিনীত হচ্ছে নাট্যাচার্য গিরিশচন্দ্র ঘোষ রচিত ‘বলিদান’। 

প্রথমটিতে নায়ক করুণাময়ের চরিত্রে অমরেন্দ্রনাথ দত্ত। দ্বিতীয়টিতে ওই ভূমিকায় স্বয়ং গিরিশ ঘোষ। সন্ধ্যার পর থেকেই তুমুল বৃষ্টি। দর্শকও আসেননি তেমন। সর্বসাকুল্যে ৫০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। অসুস্থ শরীরেই মিনার্ভায় এসে হাজির হলেন গিরিশচন্দ্র। হাঁপানির টান বেড়েছে। তার উপর খালি গায়ে মঞ্চে উঠতে হবে। 

মিনার্ভার মালিক মহেন্দ্রলাল মিত্র সেদিনের অভিনয় বাতিলের অনুরোধ করলেন। কিন্তু, ভীষণ দুর্যোগ উপেক্ষা করে যাঁরা তাঁর অভিনয় দেখতে এসেছেন, তাঁদের বঞ্চিত করতে রাজি হলেন না নাট্যাচার্য। ততক্ষণে মুষলধারায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে ভিড় বাড়ছে দর্শকদের। প্রায় চারশো টাকার টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। হবে নাই বা কেন, একে এই নাটক নগ্ন করে দিয়েছে সমাজে পণপ্রথার বীভৎস রূপ। 

গিরিশচন্দ্র, অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফি, দানিবাবু, অপরেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, তারাসুন্দরী, সুশীলাবালা, কিরণবালা-কে নেই সেই নাটকে। পরিচালক ছিলেন গিরিশচন্দ্র ও অর্ধেন্দুশেখর।

সেই রাতের শীতল আবহাওয়ায় ভীষণ ঠাণ্ডা লেগে যায় নাট্যাচার্যের। পরদিন থেকেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গিরিশচন্দ্রের বাড়ির সামনে বস্তি ছিল। সেখানে প্রচুর ধোঁয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যায়। সেবার কলকাতায় প্রচন্ড শীত পড়েছিল। শেষপর্যন্ত ১৯১২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রয়াত হন গিরিশচন্দ্র ঘোষ। সেই ১৫ জুলাই ছিল তাঁর অভিনয়ের শেষ রজনী! আজ থেকে ঠিক ১০০ বছর আগে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ