আজকের শিরোনাম :

ঈদের আগে খুলছে না বেশির ভাগ শপিংমল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ মে ২০২০, ০৯:৫৯ | আপডেট : ১০ মে ২০২০, ১০:৩৪

আজ রবিবার থেকে সীমিত আকারে শপিংমলসহ সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে সরকারের পক্ষ থেকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে অনুমতি পেলেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির কথা চিন্তা করে রাজধানীসহ সারাদেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমল খুলছেন না ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (০৯ মে) বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘রমজান ও ঈদ সামনে রেখে শর্ত সাপেক্ষে রোববার (১০ মে) থেকে দোকান-পাট ও শপিংমল খোলার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কায় রাজধানীসহ সারাদেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমল খুলবে না।’

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সেজন্য সারাদেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমল বন্ধ থাকবে। এছাড়া ঝুঁকি এড়াতে অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।  রাজধানীতে নিউ সুপার মার্কেট ছাড়া সব শপিংমলই বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহীসহ প্রায় সব বিভাগেই শপিংমল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

হেলাল উদ্দিন বলেন, যারা একেবারেই চলতে পারছেন না, সেসব দোকানদারের দোকান খোলা রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর সংখ্যা খুব একটা বেশি হবে না।

এদিকে, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক জরিপে বলা হয়েছে, দেশের ৯৩ শতাংশ মানুষ চান না শপিংমল খোলা হোক। শপিংমল খুলে দিলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে বলে তারা মনে করেন।

গতকাল শনিবার আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের জন্য সিপিডির সুপারিশমালা উপস্থাপনের আগে ফেসবুক জরিপের এই ফলাফল জানান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

ঈদের আগে যেসব মার্কেট না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেগুলোর অন্যতম হলো বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, যমুনা ফিউচার পার্ক, বায়তুল মোকাররম মার্কেট, ঢাকা নিউ মার্কেট, মৌচাক, আনারকলি মার্কেট, মোতালিব প্লাজা ইত্যাদি। তবে রাজধানীর ইস্টার্ন প্লাজা, গাজী শপিং কমপ্লেক্স ও এলিফ্যান্ট রোডের সব দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

নিউ মার্কেটের পাশে থাকা গাউছিয়া মার্কেট, চাঁদনী চক মার্কেট, হকার্স মার্কেট ও চন্দ্রিমা মার্কেটও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজ নিজ দোকান মালিক সমিতির নেতারা। গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে গাউছিয়া মার্কেটে গিয়ে সামনে বেশ কয়েকজন দোকান মালিকের দেখা পাওয়া গেল। তাঁরা জানালেন, নিউ মার্কেট না খুললেও গাউছিয়া ও হকার্স মার্কেট খুলতে পারে। তবে, বিকেল ৪টার দিকে ফোনে হকার্স ও গাউছিয়া মার্কেটের একাধিক দোকানের মালিক শহীদুল ইসলাম জানান, প্রথম দিকে মার্কেটের পাইকারি অংশ খোলার একটি সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ঈদ পর্যন্ত মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঈদের পরও খুব তাড়াতাড়ি দোকানপাট খোলার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।

আসন্ন ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুরে শাহ আলী, মুক্তিযোদ্ধা, মোহাম্মাদিয়াসহ বিভিন্ন শপিং মল ঈদের আগে না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিরপুর ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম।  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফোরামের সদস্যসচিব আতিকুর রহমান।

মিরপুর-১০ নম্বর সেকশনের শাহ আলী মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘প্রথমে আমরা খোলার পক্ষে ছিলাম। পরে বিবেচনা করে দেখি, একটি জামাকাপড়ে অনেক মানুষের হাত পড়বে। এতে করোনা বিস্তার আরে বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া বেশির ভাগ দোকানের কর্মচারীরা ঢাকার বাইরে অবস্থান করছে। সে কারণে আমরা দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঈদের আগে কোনো শপিং মল খোলা হচ্ছে না।’

তবে মিরপুর-১০ নম্বরসহ আশপাশের সড়কগুলোতে দেখা গেছে, ফুটপাতে জামাকাপড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের দোকান নিয়ে বসেছেন হকাররা।

চট্টগ্রাম নগরীতে ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে বড় বড় মার্কেটগুলোর ঝাপ ক্রেতাদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে না। নগরীর বড় মার্কেটগুলোর এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। গতকাল দুপুরে মহানগর পুলিশ কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। গত শুক্রবারই শীর্ষস্থানীয় মার্কেটগুলোর মালিক সমিতি সভা করে তাদের মার্কেট না খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল। এরই মধ্যে নতুনভাবে রিয়াজউদ্দিন বাজার, নিউ মার্কেট, তামাকুমণ্ডি লেন, জহুর মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

গত ০৪ মে সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয়, সারাদেশের দোকান-পাট, শপিংমলগুলো আগামী ১০ মে থেকে প্রতিদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এর আগে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা ছিল। পরের নির্দেশনায় এক ঘণ্টা কমানো হয়।

সেক্ষেত্রে প্রতিটি শপিংমলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত সতর্কতা প্রয়োগ করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকান-পাট খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।

বড় শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আগত যানবাহন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ