আজকের শিরোনাম :

চাল, ডাল, তেল ছাড়া অধিকাংশ পণ্যের দামই কম

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২০, ১৪:০৭

প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের এই সংকটকালীন মুহূর্তে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দামই বেশি। তবে বাজারে চাল, ডাল, তেল ছাড়া অধিকাংশ পণ্যের দামই কমেছে।

দেশব্যাপী সব ধরনের অফিস-আদালত, কলকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যানবাহনসহ সবকিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চাকরি বাবদে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যারা জড়িত ছিল তারা পড়েছেন বিপাকে। তাদের ইনকামের রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এখন টাকা না থাকায় কিভাবে এত দাম দিয়ে পণ্য কিনবে সেটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর যারা ত্রানের সহায়তা পাচ্ছে তা দিয়ে কত সময় চলছে সেটা বিবেচনার বিষয়।

গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে চালের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা। ডালের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। সয়াবিন তেলের দাম বেশি। পাশাপাশি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চিনিও। তবে কিছুটা কম শাকসবজি, ডিম, মাছের দাম। তবে বাজারে গরুর মাংসের দাম বেশি।

বাজারে মিনিকেট, নাজিরশাইল ও সমমানের সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া মাঝারি মানের পাইজাম, লতা বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫৪ টাকা কেজি। আর মোটা বিআর-২৮, স্বর্ণা, চায়না ইরিসহ অন্যান্য চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৮ টাকা কেজি দরে। তবে চালের দাম ধাপে ধাপে বেড়ে এ পর্যায়ে এসেছে।

গত নভেম্বর মাসেও বাজারে সরু মিনিকেট চালের দাম ছিল ৪৪-৪৫ টাকা কেজি। নভেম্বরের শেষের দিকে তা বেড়ে ৫০ টাকার আশপাশে পৌঁছায়। এরপর আরেক দফা বেড়ে ৫৩-৫৪ টাকা হয়। বাকিটা বাড়ে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে বাড়তি কেনাকাটার কারণে।

বাজারে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া মোটা মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। একমাস আগে যেখানে এই মসুরের ডালের দাম ছিল ৬০ টাকা। আর ৭০ টাকায় বিক্রি হওয়া মাঝারি দানার মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে এখন ১০০ টাকায়। আর যেটাকে বলা হয় দেশী মসুরের ডাল সেটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। যা গত দুই সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকায়।

খোলা সয়াবিন তেল এখন প্রতি লিটারে তিন থেকে চার টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ৯৭ টাকায়। জানুয়ারিতে যা ৮৫ টাকার মধ্যে ছিল। এদিকে ১ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। যা এর আগে ১০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। এদিকে বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। প্রতি কেজি সাদা আলু ২০ টাকা, এক সপ্তাহ আগেও ছিল ২৫-৩০ টাকা। ৬০ টাকার করলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। বেগুন ও শিম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা। গড়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা সবজির দাম কমছে।

এছাড়া বাজারে প্রতি কেজি মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, শসা ও খিরা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ধুনদল, ঝিঙা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার পিচ ১৫ থেকে ২০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, ঢেঁড়শ, কচুরলতি ৪০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ২০-৩০ টাকা। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। তবে বাড়তি শুধু লেবুর দাম। প্রতি হালি মান ভেধে লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

এদিকে বাজারে আগুন লাগা পেঁয়াজের দাম কমে এসেছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। আদা এবং রসুনের দাম কম রয়েছে। দেশি রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আর আমদানি করা চায়না রসুন বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। আদা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়।

কারওয়ানবাজারের সবজি বিক্রেতা মোঃ সিরাজ বলেন, গত চার-পাঁচ দিন ধরে ক্রেতা নেই। অল্প করে সবজি আনি তাও সব বিক্রি হয় না। পাইকারি বাজারে সবজির অভাব নেই। দামও কম। কিন্তু এনে কি করবো। মানুষ নাই কিনবো কে? এনে নষ্ট করে লাভ নাই।

এদিকে কম দামে সবজি কিনে ক্রেতারা খুশি। বাজারে সবজি কিনতে আসা বেসরকারি প্রাতষ্ঠানের চাকুরিজীবি মাসুম হাসান, নামের এক ক্রেতা জানান, তিনদিন বাজার করিনি। আজকে বের হয়ছি তাই সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছি। গত সপ্তাহের চেয়ে সব সবজির দামই কম মনে হচ্ছে।

এদিকে, গরুর মাংসের ছড়া দাম হলেও বাড়েনি অন্যান্য মাংসের। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। প্রতি কেজি বয়লার ১০ টাকা কমে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা, লেয়ার ২০০ টাকা থেকে ২১০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ