আজকের শিরোনাম :

এশিয়ায় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশে : এডিবি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২০, ১৩:৪২ | আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২০, ১৪:৪৯

সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা।  একটি দিন পার হচ্ছে তো হাজারো দুঃসংবাদ নিয়ে অপেক্ষা করছে নতুন দিন। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা, সেইসঙ্গে বাড়ছে মৃত্যু। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা। কমছে প্রবাসী আয়, বাতিল হচ্ছে পোশাক কারখানার রফতানি আদেশ।

তবে এর মধ্যেই জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সুখবর দিল এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটির মতে, এ বছর এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হবে বাংলাদেশে।

তবে চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। সংস্থাটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, প্রবৃদ্ধি কমে গেলেও এটিই হবে এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।

আজ শুক্রবার (৩ এপ্রিল) প্রকাশিত এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০২০ এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এডিবি বলছে, করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ কারণে প্রবৃদ্ধি কমবে। এমনকী এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধিও কমে যাবে।

সরকার চলতি অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল। গত অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। তবে এডিবি বলছে, আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি আবার ৮ শতাংশ হবে।

২০২০ সালে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নিয়ন্ত্রিত গ্রাহক এবং বিনিয়োগের আস্থা, রফতানি ও আমদানি এবং আর্থিক সংস্থান পুনরুদ্ধার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক সম্প্রসারণ নীতি এবং অনুকূল আবহাওয়ার কয়েকটি অনুমানের ওপরে ভর করেই ৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে।

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো পারফরম্যান্স অব্যাহত রেখেছে। তবে কোভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে নিম্নমুখী ঝুঁকি রয়েছে। এডিবির প্রাথমিক অনুমানে ইঙ্গিত দেয়, এ মহামারির প্রভাবে বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় শূন্য দশমিক দুই  থেকে শূন্য দশমিক চার শতাংশ কমতে পারে। বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে এ প্রভাব আরও নেতিবাচক হতে পারে। কোভিড-১৯ এর প্রভাব মোকাবিলা করতে এডিবি বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

মহামারি মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করে প্রকাশ বলেন, ‘২০২০ অর্থবছরের প্রথম আট মাসের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ চাহিদার সঙ্গে শক্তিশালী পারফরম্যান্স দেখিয়েছিল। এ সময় শ্রমিকদের রেমিট্যান্স উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে। সরকারি উন্নয়ন ব্যয় বাড়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তরল প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল এবং নির্মাণ সামগ্রীর উচ্চ আমদানি; অনুকূল বিদ্যুৎ উত্পাদন, এবং রফতানি বাড়াতে সরকারের নীতি সহায়ক। তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে রফতানি চাহিদায় বিঘ্ন ও রেমিট্যান্স কমার ফলে এসব বাধাগ্রস্ত হতে পারে।’

২০২১ অর্থবছরে ব্যক্তিগত বিনিয়োগ ব্যবসায় নিয়ন্ত্রক পরিবেশের উন্নতি এবং ব্যাংকগুলোতে এক অঙ্কের সুদ হার প্রয়োগের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী দৃষ্টিভঙ্গিতে পুনরুত্থিত হবে। বড় প্রকল্পগুলোতে সরকারি বিনিয়োগ দেশীয় চাহিদা বাড়াতে সহায়তা করে। প্রত্যাশিত সরকারি নীতি সহায়তায় বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির উন্নতি শিল্প কার্যক্রমকে প্রসারিত করতে সহায়তা করবে।

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অভ্যন্তরীণ প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে খাবারসহ অন্য পণ্যের দাম বাড়বে। মাঝারি বাণিজ্য ঘাটতি এবং স্বাস্থ্যকর রেমিটেন্সের কারণে চলতি অ্যাকাউন্টের ঘাটতি কমবে।

রাজস্ব আদায়ে স্বল্পতা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশে জিডিপি অনুপাতের কম রাজস্ব আদায় উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে এবং দারিদ্র্য কমানোর ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অবকাঠামো, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়নে সরকারি ব্যয়কে সহায়তার জন্য করের পরিমাণ বাড়ানো এবং সংস্থানগুলোকে আরও কার্যকর করতে হবে। ব্যাপকভাবে কর সংস্কারের মাধ্যমে রাজস্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো দরকার।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীন ২ দশমিক ৩ শতাংশ, ভারতে ৪ শতাংশ, ভিয়েতনামে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ