আজকের শিরোনাম :

শ্রমিকদের বেতন-ভাতা : ৫০০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২০, ২২:৩৬

রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে ৫০০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে। এ তহবিল থেকে কেবল সচল রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা ঋণ পাবেন। এজন্য তাদের এককালীন গুনতে হবে দুই শতাংশ সুদ বা সার্ভিস চার্জ। ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ এই ঋণের টাকা পরিশোধে সময় পাবে ২ বছর। এর মানে ২ বছরে এককালীন সুদ আরোপের ফলে প্রকৃতপক্ষে মালিকদের ১ শতাংশ সুদ গুনতে হবে। অর্থাৎ ২ শতাংশ সুদে ৫০০০ কোটি টাকার ওপর ২ বছরে ২০০ কোটি টাকা সুদ হয়। কিন্তু সেটা ওয়ান টাইম আরোপ করায় তা ১০০ কোটিতে নেমে আসবে।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে। 

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল গঠনের ঘোষণা দেন। 

সার্কুলারে বলা হয়, রপ্তানি বাণিজ্যের উপর নভেল করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় লক্ষ্যে সচল রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদানের উদ্দেশ্যে অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দ হতে আর্থিক প্রণোদনা তহবিল গঠন করা হয়েছে। এ তহবিল হতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিনা সুদে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের চাহিদা মোতাবেক ঋণ হিসাবে অর্থ প্রদান করবে। কেবলমাত্র শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য যোগ্য ঋণ গ্রহীতাকে প্রদানযোগ্য ঋণের জন্য ব্যাংকগুলো আলোচ্য তহবিল হতে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগ কর্তৃক আর্থিক প্রণোদনা তহবিল পরিচালিত হবে। তহবিল হতে তফসিলি ব্যাংকের ঋণ গ্রহণ এবং তার বিপরীতে পরিশোধ কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় বা প্রিন্সিপল অফিস কর্তৃক সম্পাদিত হতে হবে।

এতে বলা হয়, সকল রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান এই তহবিলের আওতায় ঋণ সুবিধা প্রাপ্য হবে। যেসকল শিল্পপ্রতিষ্ঠান মোট উৎপাদনের ৮০ শতাংশ রপ্তানি করে তারা রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং যে সকল প্রতিষ্ঠানে তাদের শ্রমিক-কর্মচারীদের কে বিগত ২০১৯ হতে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পরিশোধ করেছে তারা সচল শিল্পপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হবে। রপ্তানিমুখী শিল্প হওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিত্বকারী বাণিজ্য সংগঠন যেমন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের প্রত্যয়ন পত্র দারা সমর্থিত হতে হবে।

এ তহবিল হতে কেবলমাত্র শ্রমিক-কর্মচারীদের তিন মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ঋণ সুবিধা প্রদান করা হবে। বেতন ভাতা বাবদ মাসিক চাহিদা নির্ধারণের ক্ষেত্রে তফসিলি ব্যাংক যোগ্য ঋণগ্রহীতা শিল্প প্রতিষ্ঠানের ডিসেম্বর ২০১৯ হতে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসের সেলারি শিট পরীক্ষা করবে এবং সংশ্লিষ্ট মাসের আবেদনপত্রের পরিমাণ বর্ণিত তিন মাসের গড় বেতনের অধিক হবে না।

গ্রাহকরা অনুকূলে সৃষ্ট ঋণ দ্বারা ব্যাংকগুলো সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-কর্মচারীর ব্যাংক হিসেবে সরাসরি অর্থ প্রদান করবে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক শ্রমিক-কর্মচারীর জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যাংকগুলো বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণপূর্বক পরীক্ষা করবে। কোনো প্রকার নগদ লেনদেন করা যাবে না এবং শ্রমিক কর্মচারী ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব ব্যতীত অন্য কোনোভাবে লেনদেন করা হবে না। যাদের ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব নেই তাদের হিসেব খোলা আবেদনকারীর শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিশ্চিত করতে হবে। 

তফসিলি ব্যাংক এর অনুকূলে ছাড়কূত ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক কোনো প্রকার সুদ আরোপ করা যাবে না। তবে আলোচ্য ঋণ প্রদানকালে ব্যাংকগুলো তাদের প্রশাসনিক ব্যয় নির্বাহের জন্য এককালীন ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জ আরোপ করতে পারবে। এ সার্ভিস চার্জ ও সরকার কর্তৃক আরোপিত কোনো চার্জ ব্যতীত অন্য কোন চার্জ আরোপ করা যাবে না।

ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ আর্থিক প্রণোদনা তহবিল হতে প্রদত্ত ঋণের সময়কাল হবে দুই বছর। পিরিয়ড অতিবাহিত হওয়ার পর সমান ১৮টি মাসিক কিস্তিতে ঋণের অর্থ তফসিলী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় বা প্রিন্সিপাল অফিসের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে পরিশোধ করতে হবে।

ঋণ গ্রহীতা শিল্প প্রতিষ্ঠান সর্বশেষ ঋণ কিস্তি নেওয়ার পর অর্থাৎ ২০২০ সালের জুন মাসের বেতন-ভাতার বিপরীতে গৃহীত ঋণের পর ৬ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮ টি সমান কিস্তিতে ব্যাংককে সার্ভিস চার্জসহ সব টাকা পরিশোধ করতে হবে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ