নানা অজুহাতে অস্থির ভোজ্যতেলের বাজার

ব্যবসায়ীরা বিগত বছরের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে প্রথম দফা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়। এরপর তারা শীতের অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়িয়েছে আরেক দফা।

দেড় মাসে পণ্যটির দাম পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, পাম অয়েলের দাম প্রতি লিটারে ৩০ টাকা ও সয়াবিন তেল বোতলপ্রতি (৫ লিটার) ৩৫ টাকা বেড়েছে।

সরকারের সুপরিকল্পনার অভাব ও বাজার তদারকিতে দুর্বলতার কারণে পণ্যের দাম ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন ভোক্তারা।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) কয়েকজন মুদি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিসেম্বরের শুরুর দিকে প্রতিলিটার খোলা পাম অয়েলের দাম ছিল ৬০ টাকা যা ১৩ ডিসেম্বর বেড়ে ৬৫ টাকা হয়। এরপর ২০ ডিসেম্বর আরও ৫ টাকা বাড়ে এবং সর্বশেষ ২৭ ডিসেম্বর প্রতিলিটারে ৪ টাকা বেড়ে ৭৪ টাকা হয়। বর্তমানে এটি প্রতিলিটার ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ এই দেড় মাসে লিটারে ৩০ টাকা করে দাম বেড়েছে।

এছাড়া বোতলজাত সয়াবিন তেলেরও দাম বেড়েছে। ডিসেম্বরের শুরুতে ৫ লিটার ওজনের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৪৩০ টাকায় বিক্রি হতো। ১৩ ডিসেম্বর ১৫ টাকা বাড়ে এবং সর্বশেষ ২৭ ডিসেম্বর আরও ১০ টাকা বেড়ে ৪৫৫ টাকা দাম হয়। তবে বর্তমানে বাজারে ৫ লিটার ওজনের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৪৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ এ দেড় মাসে ৫ লিটার ওজনের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দামও ৩৫ টাকা বেড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জানায়, খোলা পাম অয়েলের দাম গত ১ মাসে ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। আর প্রতিলিটার খোলা সয়াবিনের দাম ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা বলেন, ভোজ্যতেলের দাম একবার বেড়েছে আমদানি খরচ বৃদ্ধির কারণে। আর একবার বেড়েছে শীতের কারণে। কারণ শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাম অয়েল জমাট বেঁধে যাওয়ায় সয়াবিন তেলের ওপর চাপ বেড়ে গেছে। এর ফলে দাম বেড়েছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে।

এ দিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরই রোজা শুরুর ৩ থেকে ৪ মাস আগে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা ট্যারিফ কমিশনে দাম বাড়ানোর একটি প্রস্তাব দেন। কিন্তু তারা সরকারের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই দাম বাড়িয়ে দেন ভোজ্যতেলের। এবারও ঠিক তা হয়েছে। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এভাবে দাম বাড়ানোর ঘটনায় ব্যবসায়ীদের অনৈতিক বলছে।  

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি