আজকের শিরোনাম :

পেঁয়াজের দামের ব্যাপারে আশা দিতে পারছেন না বাণিজ্যমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৫৮

বাজারে পেঁয়াজের দাম কবে কমবে, সে ব্যাপারে আশা দিতে পারলেন না বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তবে তিনি বলেছেন, আমদানি করা পেঁয়াজের বড় অংশ মিসর থেকে এলে এবং দেশীয় উৎপাদন বাজারে এলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বা শেষ নাগাদ পেঁয়াজের দাম কমতে পারে।

গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে সংসদীয় কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।

তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, মোহাম্মদ হাছান ইমাম খান, সেলিম আলতাফ জর্জ ও সুলতানা নাদিরা অংশ নেন।

এছাড়া বৈঠকে বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দিন, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান নূর-উর-রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংসদের মিডিয়া সেন্টারে ওই সংবাদ সম্মেলনে সংসদীয় কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই এখন পেঁয়াজের দাম বেশি। মিয়ানমারে কম ছিল, এখন বেড়েছে। ভারতে পেঁয়াজের দাম বাংলাদেশী টাকায় ১৪২ টাকার মতো।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারত গরু বন্ধ করে দিল। আমাদের দেশের মানুষ গরু পালতে শুরু করল। আমরা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। পেঁয়াজের দাম বাড়ল। আমরা মনে করি আমাদের দেশে সাধারণ মানুষ বাড়ির খোলা জায়গায় পেঁয়াজ চাষ করবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে ইনশাআল্লাহ পেঁয়াজ রফতানিকারী দেশে পরিণত হব। সাবেক এ বাণিজ্যমন্ত্রী এ সময় বাজারে পণ্যের দাম বাড়া নিয়ে খবর প্রকাশ না করে ‘সাহায্য’ করার আহ্বান জানান।

আগামী রোজার আগে যাতে পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না বাড়ে, সে লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন অংশীজনদের নিয়ে বৈঠক করা হবে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সবজির দাম বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, পরিবহন খরচের কারণে ঢাকার বাজারে সবজির দাম বেশি। ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে।

কবে নাগাদ পেঁয়াজের দাম কমবে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, যদি আমাদের বাইরে থেকে ইমপোর্ট করে আনতে হয়, আর যদি শুধু মিসর থেকে চালাতে পারি, তাহলে ল্যান্ডেড কস্ট পড়বে আনুমানিক ৪০-৪৫ টাকা। সেই জায়গায় যেতে আমাদের সময় লাগবে। অনেক চেষ্টা করার পর মাত্র পরশু দিন আমাদের সেই চালানটা আসছে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে যাতে বেশির ভাগ সেখান থেকে আনা যায়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য একটাই পথ। আমাদের দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো। উৎপাদন বাড়াতে হলে যেটা করতে হবে, কৃষকরা যাতে ন্যায্য দাম পায়। আগামীতে যেটা চিন্তা করছি, আমাদের উৎপাদন বাড়লে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আনা কমিয়ে দেব। আমরা কোনোভাবেই প্রেডিক্ট করতে পারব না কবে নাগাদ কমতে পারে।

টিপু মুনশি বলেন, আমাদের শিক্ষাটা হলো আমদানি করা পেঁয়াজের ৯০ ভাগ আমরা একটি দেশের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। এটা ঠিক হয়নি। ২৯ সেপ্টেম্বর তারা বন্ধ করে দিল। ২-৩ অক্টোবর আমরা দিল্লিতে ছিলাম। তারা কথা দিয়েছিল মহারাষ্ট্রের নির্বাচনের পর তারা ব্যানটা ওঠানোর ব্যাপারে চিন্তা করবে, তারা সেটা করেনি।

সেপ্টেম্বরের শেষদিকে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পর বাংলাদেশে এ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে। যে পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকায় পাওয়া যেত, তার দাম কয়েক দিনের মধ্যে ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এরপর ক্রমেই বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। এর মধ্যে নভেম্বরের প্রথমার্ধে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতের পর সরবরাহ বিঘ্নিত হয়ে পেঁয়াজের দাম ২৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ