আজকের শিরোনাম :

১১ মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ১১.৯২ শতাংশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০১৯, ১০:৪৮

চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) রফতানি আয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ। এ সময়ে রফতানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ৭৭৫ কোটি মার্কিন ডলার যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে একক মাস হিসেবে সর্বশেষ মে মাসে রফতানি আয় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন হাজার ৫৪০ কোটি ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে তিন হাজার ৭৭৫ কোটি ডলার। আর গত অর্থবছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ৩ হাজার ৩৭২ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। 
অন্যদিকে মে মাসে ৩৫৯ কোটি ১০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় হয়েছে ৩৮১ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। সুতরাং লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় গত মাসে রফতানি আয় ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি হয়েছে। গত অর্থবছরের মে মাসে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩৩২ কোটি ২৪ লাখ ডলার।

প্রধান রফতানি পণ্য পোশাক খাতের আয় ধারাবাহিকভাবে ভাল হওয়ায় রফতানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ-জার্মান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিজিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার ওমর সাদাত বলেন, বাংলাদেশের রফতানি খাত মূলত পোশাকনির্ভর। রফতানিতে পোশাক খাতের অবদান দিন দিন বাড়ছে। এর পাশাপাশি ব্যবসায় পরিবেশ বিশেষ করে গ্যাস-বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আগের তুলনায় ভালো হওয়ায় রফতানি আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।

তিনি রফতানি আয় সম্প্রসারণে প্রচলিত বাজার ছাড়াও নতুন বাজার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো এবং পণ্য বহুমূখীকরণ বিশেষ করে বেশি মূল্য সংযোজন হয় এমন পণ্য রফতানির প্রতি মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সহসভাপতি ড. আব্দুল হান্নান বলেন, ব্যবসায় অনুকূল পরিবেশ আগের তুলনায় ভাল হওয়ায় পোশাক খাত দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে অবকঠামো খাতে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন করা গেলে রফতানি আয় আরও বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য রফতানি বাড়াতে বৈচিত্র্যপূর্ণ শিল্প পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়তা ও প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করেন।

ইপিবির হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৈরি পোশাকের রফতানি আয় ও প্রবৃদ্ধি উভয়ই লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে। দুই হাজার ৯৬৭ কোটি ১৫ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় দাঁড়িযেছে ৩ হাজার ১৭৩ কোটি ২৮ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। গতবছরের একই সময়ে এই খাতে রফতানি ছিল ২ হাজার ৮১২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার।

জুলাই-মে সময়ে নিট পণ্যের (সোয়েটার, টি-শার্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৪৬৫ কোটি ৯২ লাখ ডলার।এর বিপরীতে আয় হয়েছে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ২৪ লাখ ডলার। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি ছিল এক হাজার ৩৯৪ কোটি ডলার।

আলোচ্য সময়ে ওভেন পণ্যের (শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। ১ হাজার ৫০১ কোটি ২৩ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ওভেন পণ্য রফতানি হয়েছে ১ হাজার ৬০৫ কোটি ১৪ লাখ ডলারের। গত বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১ক হাজার ৪১৮ কোটি ৮৫ লাখ ডলার।

জুলাই-মে এই ১১ মাসে অন্যান্য বড় রফতানি পণ্যের মধ্যে প্লাস্টিক পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে। এ খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ২৭ লাখ ডলার,যার প্রবৃদ্ধি ২৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। 

আসবাবপত্র ও সিরামিক পণ্যের রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে উল্লেখ করার মতো। এ সময়ে ৬ কোটি ৯৯ লাখ ডলারের আসবাবপত্র রফতানি হয়েছে। এর প্রবৃদ্ধি ২০ দশমিক ১৮ শতাংশ। সিরামিক পণ্য রফতানি হয়েছে ৬ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের, যার প্রবৃদ্ধি ৬৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। তবে চামড়া ও চামড়জাত এবং পাট ও পাট পণ্যের রফতানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে।

গত বছরের প্রথম ১১ মাসে চামড়া ও চামড়জাত পণ্যের রফতানি ছিল ৯৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার, এবারের একই সময়ে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। আলোচ্য সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয়েছে ৭৭ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৯৬ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। 
এ ছাড়া কৃষিজাত পণ্য, মাছ, প্রকৌশল যন্ত্রপাতি, টেরিটাওয়েল, হস্তশিল্প পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে।
খবর বাসস

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ