আজকের শিরোনাম :

বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য আরও বাড়াতে চায় কানাডা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৪৪

কানাডা বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য আরও বাড়াতে চায়। বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোই প্রেফনটেইন রবিবার বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠককালে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোয় বিনিয়োগ ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, এ প্রেক্ষিতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং নিয়মিত আলোচনার ওপরও গুরুত্ব দিচ্ছে কানাডা ।

রাজধানীর মতিঝিলস্থ এফবিসিসিআই কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মোঃ শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) এবং সিনিয়র সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বেঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠককালে এফবিসিসিআই সভাপতি কানাডায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্তপ্রবেশাধিকারের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করে হাইকমিশনারের মাধ্যমে কানাডিয়ান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

বাংলাদেশের দ্রুত অগ্রসরমান অর্থনৈতিক কার্যক্রমে দেশের বেসরকারি খাতের জোরালো ভূমিকার তুলে ধরে শফিউল ইসলাম বলেন, দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ আরও আকর্ষণীয় করতে এফবিসিসিআই সরকারের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের দেয়া আকর্ষণীয় বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করে এদেশের সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্প, ওষুধ শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি এবং পর্যটন খাতে বিনিয়োগের জন্য তিনি কানাডার ব্যবসায়িদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এ প্রসঙ্গে তিনি বর্তমান সরকারের দেয়া ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ সুবিধা নেয়ার জন্যও কানাডার ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান।

এ সময় কানাডার হাইকমিশনার বলেন যে, তারা একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য এখনো সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সম্ভাবনাময় অনেক খাতেই তার দেশের ব্যবসায়িদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এ লক্ষ্যে কানাডীয় ব্যবসায়িরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে আগের চেয়ে আরও বেশি সংখ্যায় বাংলাদেশে আসছেন বলে হাইকমিশনার জানান। তিনি কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সকে আরও গতিশীল কার্যক্রম হাতে নেয়ার জন্যও অনুরোধ জানান।

এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম সম্প্রতি এফবিসিসিআইয়ে স্থাপিত ‘এফবিসিসিআই বেসরকারি ইনস্টিটিউট’কে প্রযুক্তিগত ও কারিক্যুলাম সহায়তা প্রদানের জন্য কানাডা প্রতিনিধি দলকে আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান চাকুরির বাজারের কথা বিবেচনায় রেখে এফবিসিসিআই ইনস্টিটিউট থেকে প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

শেখ ফাহিম বাংলাদেশ ও কানাডার সম্ভাবনাময় খাতগুলো নিয়ে কাজ করার জন্য দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরির প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিভিন্ন অর্জন এবং বৈচিত্রপূর্ণ রপ্তানি পণ্যভান্ডার সম্পর্কে বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণে কানাডার ব্যবসায়িদের অনুরোধ জানান।

সভায় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে কানাডার ভিসা কনস্যুলার অফিসটি ঢাকায় আবার ফিরিয়ে আনারও অনুরোধ জানানো হয়।

কানাডা হাইকমিশনের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর ও উর্ধ্বতন ট্রেড কমিশনার মিস করিন পেট্রিসর এবং হাই কমিশনের ট্রেড কমিশনার মো. কামাল উদ্দিনও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হোসাইন জামিল এবং সচিব আফসারুল আরিফিন আলোচনায় অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১১১৮ দশমিক ৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য কানাডায় রপ্তানি করে। একই সময়ে কানাডা থেকে বাংলাদেশ ৪৯৮ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।

কানাডায় বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যগুলো হচ্ছে ওভেন গার্মেন্টস, নীটওয়্যার, হোম টেক্সটাইল এবং ফুটওয়্যার। আর কানাডা থেকে মুলত ভেজিটেবল পণ্য, মেশিনারি এবং মেকানিক্যাল যন্ত্রপাতি এবং বস্ত্র ও বস্ত্রসামগ্রী আমদানি করা হয়।
খবর বাসস

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ