আজকের শিরোনাম :

মজুত বাড়াতে আমদানি করা হচ্ছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২১, ১৯:০৯

দেশের খাদ্য মজুত বাড়াতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্যাকেজ-১৪ এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভারত থেকে এসব চাল আমদানি করা হবে। প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৪০৭.৭৯ মার্কিন ডলার হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রায় মোট ১৭২ কোটি ৯০ লাখ ২৯ হাজার ৬০০ টাকা ব্যয় হবে।

খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ৪ মে’র দৈনিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২ লাখ ৯১ হাজার মেট্রিক টন চাল ও ২ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন গম মজুত আছে। সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ নিরাপত্তা মজুত সুসংহত করার স্বার্থে ভারত থেকে চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ধান ও চাল সংগ্রহের অভ্যন্তরীণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা মজুত সুসংহত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি ও জিটুজি পদ্ধতিতে চাল আমদানি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৩ লাখ মেট্রি টন চাল আমদানির কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে ১০ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে এবং গত ৪ মে পর্যন্ত ৩ লাখ ৮৩ হাজার মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে পৌঁছেছে। এরই ধারাবহিকতায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৮৩ এর উপবিধি (১) এর দফা (ক) মোতাবেক খাদ্য অধিদপ্তর গত ১৯ এপ্রিল ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে। নয়টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র কিনলেও শেষ পর্যন্ত তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয়। তিনটি প্রতিষ্ঠানের দরপত্রই রেসপন্সিভ হয়।

সূত্র জানায়, এসব দরপত্রের মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের মেসার্স পিকে অ‌্যাগ্রি লিংক প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৪০৭.৭৯ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে গণ্য হয়। অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভারতের মুম্বাইভিত্তিক মেসার্স ইটিসি অ্যাগ্রো প্রসেসিং প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৪০৯.৬৫ ডলার উল্লেখ করে দ্বিতীয় এবং মেসার্স এভিআই ইন্টারন্যাশনাল প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৪৩৬.১ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে তৃতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা হয়।

দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ও সিডিউলে ক্রয়যোগ্য চালের গুণগত মান সম্পর্কে বিনির্দেশ—ময়েশ্চার ১৩.৫ শতাংশ, ভাঙা দানা ৫ শতাংশ, ফরেন ম্যাটার ৩ শতাংশ, রেডিও অ্যাক্টিভিটি ৫০ বিকিউ। বিদেশ থেকে সরকারিভাবে খাদ্যশস্য আমদানির ক্ষেত্রে পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে আসার পর পণ্য খালাসের আগেই দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, খাদ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে পর্যায়ক্রমে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত নমুনা প্রথমে খাদ্য অধিদপ্তরের চট্রগ্রাম ও খুলনাস্থ পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয় এবং পরে সংগৃহীত নমুনা কম্পোজিট করে এক প্যাকেট পরীক্ষার জন্য খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। খাদ্য অধিদপ্তরের পরীক্ষাগারে তা পরীক্ষা করে গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়। দরপত্রে এসব বিনির্দেশের কোনো প্যারামিটারের সঙ্গে পণ্যের প্রাপ্ত গুণগত মান নিম্নমানের হলে দরপত্রে উল্লেখ করা সব চাল প্রত্যাখান করার বিধান রয়েছে।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী তিনটি প্রতিষ্ঠানকে গ্রহণযোগ্য দরদাতা ঘোষণা করে। দাখিল করা দরপত্রগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স পিকে অ‌্যাগ্রি লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের উদ্ধৃত দর প্রতি মেট্রিক টন ৪০৭.৭৯ মার্কিন ডলার, যা ভারতের পশ্চিম উপকূল, পূর্ব উপকূল, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের চালের প্রাক্কলিত দরের চেয়ে যথাক্রমে ১১.৬৫, ৭.১৬, ৯৮.০৩ ও ১৫৯.০১ মার্কিন ডলার কম হওয়ায় তা গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করা হয়।

সূত্র জানায়, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করে তা অনুমোদনের জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ে ক্রয় প্রস্তাব পাঠায়। প্রস্তাব অনুসারে মেসার্স পিকে অ‌্যাগ্রি লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ  থেকে প্রতি মেট্রিক টন ৪০৭.৭৯ মার্কিন ডলার (প্রতি কেজি ৩৪.৫৯ টাকা) দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ