আজকের শিরোনাম :

অটোমোবাইল শিল্পখাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের আহ্বান শিল্পমন্ত্রী’র

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২১, ১৫:৩৮

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে অটোমোবাইল শিল্পখাতের যন্ত্রাংশ উৎপাদনে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী শিল্প-কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি।

তিনি বলেন, দেশকে উন্নয়নের সর্বোচ্চ বা বৃহত্তর পর্যায়ে পৌছাতে আমাদের সরকার শিল্পায়ন ও শিল্পের বিকাশের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশে শিল্পানের জন্য আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শিল্প বিনিয়োগের সুবিধার্থে সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করছি। দেশে উৎপাদিত পণ্যের উৎপাদন এবং রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের সরকার শিল্পনীতি সহায়তাসহ সকল প্রকার সহযোগিতা করে আসছে। গবেষণা ও উদ্ভাবন অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি অন্যান্য মিত্র/সহায়তা শিল্পগুলোকে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। অটোমোবাইল খাতের সার্বিক উন্নয়নে শিল্প ও শিক্ষাখাতের সমন্বয় খুবই জরুরী বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘অটোমোবাইল শিল্পের উন্নয়ন: বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ (Automobile Industry Development: Present Situation and Future Prospects) শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আজ এসব কথা বলেন। ডিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট রেজওয়ান রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইফাদ গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নওকি (Mr. ITO Naoki), উক্ত ওয়েবিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে অন্যদের মধ্যে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক ইউনিটের প্রধান জন ডি. ডানহাম (Mr. John D. Dunham), প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুজ্জামান, উত্তরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমান, বারভিদা’র (BARVIDA) প্রেসিডেন্ট আব্দুল হক, সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ ও জাইকা প্রতিনিধি হায়াকাহ ইউকো (Hayakawa Yuho) বক্তব্য রাখেন। ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএস, এফসিএ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন সহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ ওয়েবিনারে যোগদান করেন।

 

শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা মহামামির ধাক্কা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে লাগলেও গত বছরে জিডিপি ৫.২৪ শতাংশ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এখন করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ চলছে, দেশে লকডাউনের মধ্যেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ ব্যবস্থায় শিল্প কলকারখানা চালু রাখা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যেমাত্রায় পৌঁছানো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে সর্বাক্ষণিক শিল্প কারখানার চালু রাখার কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ার সাথে সাথে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিও পেয়েছে। ক্রমবর্ধমান আয় জনগণের নিরাপদ যানবাহন হিসেবে ব্যক্তিগত যানবাহনের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি আধুনিক সুবিধা সম্বলিত যানবাহন ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। মানুষের এখন ব্যক্তিগত গাড়ি ক্রয় করার সামর্থও বেড়েছে। অটোমোবাইল নির্মাতারা স্থানীয় উৎপাদনের জন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অগ্রাহও বেড়েছে। এসব কিছু বিবেচনায় রেখে আমরা খুব তাড়াতাড়িই অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা চূড়ান্ত করবো।

 

সম্মানিত অতিথি’র বক্তব্যে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নওকি বলেন, অনেক দেশের শিল্পায়নে অটোমোবাইল খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, বিশেষ করে জাপানে এখাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে অটোমোবাইল শিল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে এবং বাংলাদেশের সেই উদাহরণ অনুসরণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অটোমোবইল খাতের বিকাশকে ত্বরান্তিত করতে হালকা প্রকৌশল শিল্পকে এগিয়ে আসতে হবে।

 

ওয়েবিনারের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালায় অভাব, সহায়ক শুল্ক কাঠামো না থাকা, স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত কাঁচামালের যোগান না থাকা, দক্ষ মানবসম্পদ ও বেকওয়ার্ড লিংকেজ খাতের অনুপস্থিতির কারণে আমাদের অটোমোবাইল শিল্পে কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। এখাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় ১০ বছর মেয়াদী ‘বাংলাদেশ অটোমোবাইল সেক্টর রোডম্যাপ ২০২১-২২’ এবং ‘অটোমোবাইল-ম্যানুফেকচারিং ডেভেলপমেন্ট পলিসি’-এর খসড়া প্রস্তুত করেছে, যা দ্রুততম সময়ের মধ্যে চূড়ান্তকরণ করা একান্ত অপরিহার্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।
 

এবিএন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ