আজকের শিরোনাম :

এক দশকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহ‌ক ১০ কোটি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২১, ১১:১৮

তাৎক্ষণিকভাবে শহর কিংবা গ্রামে টাকা পাঠানোর সুবিধার কারণে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং এখন সহজ ও জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। গত ১০ বছরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা ১০ কোটির মাইলফলক অতিক্রম করেছে। আর গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে এক হাজার ৮৪৬ কোটি টাকার বে‌শি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বল‌ছে, বর্তমানে মোট ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছে। ২০২১ সালের জানুয়া‌রি মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ১০ কোটি পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার ছাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে পুরো মাসে লেনদেন হয়েছে ৫৭ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। দৈনিক গড় লেনদেন এক হাজার ৮৪৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার সর্বশেষ হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তবে এ প্রতিবেদনে ডাক বিভাগের মোবাইলে আর্থিক সেবা ‘নগদ’ এর তথ্য নেই। জানা গে‌ছে, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন ক‌রে‌নি এমন হিসাবকে নিষ্ক্রিয় গণ্য করে থা‌কে এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

তথ্য বলছে, আলোচিত সময়ে এমএফএস সেবার লেনদেন ও গ্রাহক সংখ্যার স‌ঙ্গে সেবায় সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যাও বে‌ড়ে‌ছে। জানুয়া‌রি মাস‌ শেষে এমএফএস সক্রিয় গ্রাহক এক মাসের ব্যবধানে দশমিক তিন শতাংশ বে‌ড়ে তিন কোটি ২৪ লাখ ১৩ হাজারে দাঁড়িয়েছে। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা এক দশ‌মিক চার শতাংশ ক‌মে ১০ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৭ জনে এসেছে।

এসব বিষয়ে এমএফএস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম জানান, ‘করোনার কারণে মানুষ এখন ঘরে বসে ডিজিটাল লেনদেনে বেশি নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এছাড়া সরকার এখন সামাজিক সুরক্ষার আওতায় বিভিন্ন আর্থিক সহায়তা হিসেবে মোবাইল দিচ্ছে। পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতাও মোবাইলে দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতির গতি ফিরেছে। সব মিলিয়ে মোবাইল ফাইন্যান্সের লেনদেন বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘১০ কোটি গ্রাহ‌কের ম‌ধ্যে বর্তমানে সারা দেশে পাঁচ কোটি ১০ লাখের বেশি বিকাশ গ্রাহক রয়েছে। ২৬টি ব্যাংকসহ ভিসা ও মাস্টার কার্ড থেকে অনায়াসে নিজের এবং প্রিয়জনের বিকাশে অর্থ লেন‌দেন কর‌তে পারছেন গ্রাহক। বিকাশ থেকে এখন বি‌ভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে। এছাড়া যখন তখন মোবাইল রিচার্জ, সব ধরনের টিকিট কেনা, বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স গ্রহণ করাসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা পাচ্ছেন গ্রাহক।’

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ব্যাংক থেকে মোবাইলে ও মোবাইল থেকে ব্যাংকেও লেনদেন করারও সুবিধা পাচ্ছেন গ্রাহক।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়া‌রি মাসে এমএফএসে রেমিট্যান্স সংগ্রহ ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় রেমিট্যান্স এসেছে ১৮৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ১৭ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে দুই হাজার ১৯০ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৮০৩ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ হ‌য়ে‌ছে এক হাজার ৯২৪ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক সংখ্যা এক কোটির মাইলফলক অতিক্রম করে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ