সোনাগাজীর স্কুল ছাত্রী শোভা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন!
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০১৮, ১৬:৩৫
সোনাগাজী (ফেনী), ০৫ আগস্ট, এবিনিউজ : সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউপির স্বল্প মান্দারি গ্রামের দরিদ্র স্কুল ছাত্রী আছমা আক্তার শোভা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের দাবী করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে পাশ্ববর্তী বগাদানা ইউপির জাহাঙ্গির আলমের ছেলে খুরশিদ আলম সোহেল ফেনীর আদালতে ফৌজধারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি প্রদান করে।
সোহেল পেশায় নির্মান শ্রমিক। এলাকায় তার বিরুদ্ধে স্কুল ছাত্রীদের উক্ত্যক্ত করা সহ মাদক সেবনের অভিযোগ রয়েছে। অকালে অন্ধ হয়ে যাওয়া মোহাম্মদ দুলালের মেয়ে শোভা স্থানীয় মঙ্গলকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর অধ্যয়নরত এবং হাস মুরগি গরু পালন করে দরিদ্র পরিবারটির উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন।
গত ২৪ জুন রাতে স্বজনেরা বাড়ীর পাশে পুকুর থেকে শোভার অর্ধ উলঙ্গ মৃত দেহ উদ্ধার।সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ থাকার কথা জানিয়ে তার স্বজনেরা শোভাকে ধর্ষনের পর হত্যার অভিযোগ আনে।
২৬ জুন তার মা বিবি কুলসুম বাদী হয়ে কারো নাম না উল্লেখ করে মডেল থানায় মামলা দায়ের করে।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক ইয়াসিন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোন তথ্য উদঘাটন করতে পারেনি।
একপর্যায়ে তার বিরুদ্ধে অদক্ষতা ও মামলাটি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠলে তাকে সরিয়ে দিয়ে অন্যত্র বদলি করে উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন কে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় পরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেন। হত্যা মামলাটি দায়েরের পর বিশেষ গুরত্ব দিয়ে তদারকির ব্যাবস্থা করেন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গির আলম সরকার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানিয়েছে,নিহত স্কুল ছাত্র শোভার ব্যবহ্নত মোবাইল ফোনের কললিষ্ট পাওয়ার পর অভিযুক্ত সোহেল কে শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতারের পর আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়।আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
পরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেন জানিয়েছে, রিমান্ডে প্রমানাধি হাজির করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর সোহেল ০২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্ধি প্রদান করে।
জবানবন্ধিতে সে জানায়, ঘটনার ৬ মাস পূর্বে শোভাদের বাড়ীর পাশে নতুন ভবনের নির্মান শ্রমিকের কাজ করার সময় তার সাথে পরিচয় হয়।একপর্যায়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।শোভার সাথে মোবাইলে তার কথা হতো এবং মাঝে মাঝে তার বাড়ীর পাশে ঝোপ ঝাড়ে তারা একান্তে সাক্ষত করতেন।বিষয়টি এলাকার কয়েকজন যুবক দেখে ফেল্লে তাকে কয়েক বার মারধর করে।
শোভাকে প্রতিবাদ করার জন্য বল্লে সে রাজী না হলে তার প্রতি ক্ষোভ জম্মে।ঘটনার বিকালে শোভার সাথে তার দু:সম্পর্কের দাদা লাতু মিয়ার মোবাইলে যোগাযোগ করে রাতে দেখা করার অনুরোধ জানালে সে রাজী হয়। রাতে শোভাদের বাড়ীর পাশে কাশেমের পুকুর পাড়ে তাদের সাক্ষাত হয়। কথা বলার একপর্যায়ে সোহেল ধর্ষনের উদ্দেশ্যে শোভার সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করে। শোভা বাধা দিলে তাকে গলায় ওড়ানা পেছিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ পুকুর পাড়ে রেখে পালিয়ে যায়।
শোভার শরীরে অসংখ্য নোখের আছড়, মুখে কামড় ও স্পর্শকাতর অঙ্গে আঘাতের চিহ্ন থাকায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হয়েছে তাকে ধর্ষনের পর হত্যা করা হয়েছে।তবে পরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেনের দাবী ধর্ষনের চেষ্টা করা হয়েছে,ধর্ষিত হয়নি।
এদিকে হত্যাকান্ডের ৪০ দিন পার হলেও ময়না তদন্তদের প্রতিবেদন প্রকাশিত না হওয়ার কারনে হত্যার পূর্বে তাকে ধর্ষন করা হয়েছে কিনা জানা যায়নি।
এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/রাজ্জাক
এই বিভাগের আরো সংবাদ