আজকের শিরোনাম :

সাপের ছোবলে মৃত্যু বাড়ছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:৫৪

ঝিনাইদহ শৈলকুপা
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ঘুমন্ত এক শিশুকে ছোবল দেয় সাপ। রাতভর চলে ওঝার ঝাড়ফুঁক। সকালে মারা যায় শিশুটি। শনিবার ওই উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউপির বাগুটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ইজাহিদ ওই গ্রামের মানোয়ার হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, গত দুই মাসে শুধু ঝিনাইদহেই সাপের ছোবলে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শৈলকুপারই ৯ জন। ফলে জেলার মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

এর আগে, ২৯ আগস্ট রাতে শৈলকুপার দোহারো গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা শরিফা খাতুন, ২৩ আগস্ট রাতে রাব্বি ও তাহসিন নামে দুই শিশু, ১১ আগস্ট সন্ধ্যায় উত্তর পাইকপাড়ার আহম্মদ মণ্ডল নামে আরেক শিশু, ৬ আগস্ট জেরিন নামের আরেক শিশু, ৫ আগস্ট আসাননগর গ্রামে যুবক আব্দুর রশিদ, ১ আগস্ট রাতে কালীগঞ্জ উপজেলায় জুলিয়া খাতুন নামে আরেক শিশু সাপের ছোবলে মারা যায়।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে- সাপ ছোবল দেয়ার পর পরিবারের সদস্যরা ওঝা-কবিরাজের কাছে নিয়ে ঝাড়ফুঁক করে সময় নষ্ট করেন। এমন সময় তারা হাসপাতালে নিয়ে আসেন যখন আমাদের কিছুই করার থাকে না। এই সচেতনতার অভাবেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় সাপের ছোবলে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে ২০ ভাগ মানুষকে বিষধর সাপের ছোবলের শিকার হন। বাকি ৮০ শতাংশ মানুষ সাধারণ ছোবলের শিকার হন। অনেকে ভয়েই স্ট্রোক করে মারা যান। তবে সাপ ছোবল দেয়ার ৪-৬ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে আনলে সহজে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয়।

শৈলকুপার বাসিন্দা আব্দুর রহমান মিল্টন জানান, দুই-তিন বছর ধরে শৈলকুপায় সাপের ছোবলে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। বর্ষা এলেই সাপের উপদ্রব বেড়ে যায়। এ বছর এরইমধ্যে ৯ জন মারা গেছে।

তিনি আরো জানান, সম্প্রতি এ উপজেলায় শাখাকানন বা কালাচ নামে পরিচিত সাপের উপদ্রব বেড়েছে। এ সাপের ছোবলে মানুষের বেঁচে যাওয়ার সংখ্যা খুবই কম।

সাপের ছোবলে একের পর এক মানুষের মৃত্যু হলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে এর কোনো প্রতিষেধক ভ্যাকসিন নেই। গেল বছর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হওয়ায় শৈলকুপায় এক সেট প্রতিষেধক দেয়া হয়। কিন্তু সংরক্ষণের ব্যবস্থা এবং অভিজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তা সদর হাসপাতালে এনে রাখা হয়। হাতের কাছে চিকিৎসা না থাকায় স্থানীয়রা ওঝা-কবিরাজের শরণাপন্ন হচ্ছে। এ কারণে অধিকাংশ মানুষই মারা যায়।

সিভিল সার্জন বলেন, জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিষেধক সংরক্ষিত রয়েছে। কিন্তু বিদেশি ও দাম বেশি হওয়ায় ওষুধ ব্যবসায়ীরা এটা ফার্মেসিতে রাখে না।

 

এবিএন/ইমরান/জসিম/এসই  

এই বিভাগের আরো সংবাদ