আজকের শিরোনাম :

পঞ্চগড় দেবীগঞ্জে প্রতিবন্ধীর টাকা আদায়ের ইউপি সদস্য বিরুদ্ধে অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:২৮ | আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:৩৪

পঞ্চগড় জেলাধীন দেবীগঞ্জ উপজেলার ৪নং পামুলী ইউপি’র সংরক্ষিত ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য মোছা: রাশেদা বেগমের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীর প্রাপ্ত টাকা কেড়ে নেয়া এবং কার্ড বাবদ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। 

গত ( ১৯ আগস্ট) বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক সুপারিশকৃত দু’টি লিখিত অভিযোগ করেন ওই ইউনিয়নের কাঠালতলী হাসানপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম, পিতা- শওকত ইসলাম ও ইদ্রীস আলী, পিতা-মৃত ইব্রাহীম।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, মহিলা সদস্য রাশেদা বেগম কার্ড হওয়ার পূর্বে অভিযোগকারীদ্বয়ের কাছ থেকে ৩০০০২= ৬০০০/- (ছয় হাজার) টাকা এবং ১ম বারের মত ব্যাংক থেকে উত্তোলিত ৯০০০২= ১৮০০০/-(আঠারো হাজার)টাকাসহ মূল প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড বইটি প্রতিবন্ধীর হাত থেকে জোর পূর্বক কেড়ে নেয়। অত:পর ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে টাকা পাওয়ার জন্য একাউন্ড করবেন মর্মে মূল প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড বইটির প্রয়োজন রাশেদার কাছে চাইতে গেলে আবারও উৎকোচ ৫০০/-(পাঁচশত)টাকার বায়না ধরেন। অন্যথায় মূল প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের বইটি দিবেনা প্রতিবন্ধীদের বলেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রাশেদা বেগমকে মুঠোফনে ফোন দিলে রাগানিত কন্ঠে জানান, আপনি কে? কেন আমাকে ফোন দিয়েছেন? জবাব দেয়ার পর তিনি বলেন, তার উপর যে অভিযোগটি করা হয়েছে, তা মিথ্যা। মিথ্যা অভিযোগ কেন আপনার উপর করা হইল জানতে চাইলে ফোনে কথা না বলে ফোনের লাইন কেটে দেয়। 

অপরদিকে অভিযোগকারীদ্বয়ের মধ্যে সাইফুল ইসলাম জানান, তাদের দু’জনেরই কাছ থেকে প্রায় ৩/৪ মাস আগে কার্ড করে দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেন এবং ডেবীডুবা এলাকায় লক্ষিরহাট কৃষি ব্যাংক থেকে উত্তোলিত টাকা হাতে পেতে না পেতেই ডায়নীর ন্যায় সন্ত্রাসী কায়দায় জোর পূর্বক সমুদ্বয় টাকাসহ ভাতার বইটি হাত থেকে কেড়ে নেয়। তিনি আরও জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২আগস্ট উপজেলা কর্মকর্তার কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে ডাকা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার সমস্ত কথা শ্রবণ করে রাশেদাকে ১ঘন্টার মধ্যে টাকা ফেরৎ দিতে বলা হয়।

অত:পর ইউএনও’র কার্যালয় থেকে বের হয়েই রাশেদা অভিযোগকারী ব্যক্তিদ্বয়কে টাকা ফেরৎ তো দুরের কথা হুমকি-ধামকি দিয়ে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিতু আক্তারের কার্যালয়ে নিয়ে গেলে রিতু আক্তার অভিযোগটি অসত্য বলে ধিক্কার করেন। 

পক্ষান্তরে রিতু আক্তার, অভিযুক্ত রাশেদা, হরিদাস চন্দ্র বর্মন, মমিরুল ইসলাম মন্টু, রশিদুল ইসলাম, তাজুল এবং মনির হোসেন তাদের প্রতিবন্ধী কার্ড বাতিল করবে বলে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান। প্রতিবন্ধীদ্বয় বিষয়টি বাড়াবাড়ি যেন না করেন, রিতু আক্তার তাদেরকে জোর করে ২০০০/- (দুই হাজার) টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় এবং কথোপকোথন ও টাকা দেয়ার বিষয়টি রিতু আক্তারের ইন্ধনে সেখানে উপস্থিত কিছু অসাধু ব্যক্তি তাদের অজান্তে ভিডিও ধারণ করেন। 

এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিতু আক্তার জানান, অভিযোগটি ভুলে করে দেয়া হয়েছে। অভিযোগকারীদ্বয় তাদের অভিযোগ দুটি তুলে নিয়েছে। অত:পর তার ভিডিও ধারণ রয়েছে জানান তিনি।  

অন্যদিকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: ফজলে হায়দার প্রধান জানান, তিনি টাকা লেনদেনের বিষয়ে অবগত নয়। তিনি বলেন, কখন কোন সদস্য কার কাছ থেকে কত টাকা নিয়ে থাকে সেটা তো আমাকে বলে না। তারা গোপনে এ কাছ গুলো করেন। তবে রাশেদা বেগমের উপর অভিযোগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন অভিযোগের বিষয়টি তাকে জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি দেখেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জন্য সুপারিশ করেন।         

উক্ত বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রত্যয় হাসান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে ২আগস্ট অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে উনার কার্যালয়ে ডাকানো হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি ইউপি মহিলা সদস্যকে ১ঘন্টার মধ্যে অভিযোগকারীর টাকা ফেরৎ দিতে বলা হয়েছে। তিনি আরও জাননা, বিষয়টির প্রশাসনিক তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এবিএন/ মুুহম্মদ তরিকুল ইসলাম/জসিম/অসীম রায়
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ