আজকের শিরোনাম :

তাহিরপুর মেঘালয় সীমান্তের বালু-পাথর নিলামের সিদ্ধান্ত স্থগিত

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২০, ১৪:৪২ | আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২০, ১৪:৪৭

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানারেখায় প্রকৃতি প্রদত্ত পাথর অপরিকল্পিতভাবে নিলামের উদ্যোগ স্থগিত করে দিয়েছে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সীমান্তবাসীসহ পরিবেশবিদগণ। স্থানীয় একটি দুর্নীতিবাজ পাথর খেকো সিন্ডিকেট প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অপরিকল্পিত নিলামের মাধ্যমে চিরস্থায়ী ইজারার ব্যবস্থা করে প্রকৃতি ধ্বংস করতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ আছে।

আন্তদেশীয় ভূমির পাথর নিলামে দিলে সীমান্তে বসবাসকারী আদিবাসী, বাঙালিসহ অসহায় মানুষজন বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাছাড়া সীমান্তে পাহাড় ধসেরও আশঙ্কা ছিল বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা। আন্তদেশীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ভূমি নিলাম দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যবহার করার আইনগত বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। সীমান্তে বসবাসকারীরা জানিয়েছেন, সূদূর অতীত থেকেই ভারত থেকে বর্ষা মওসুমে এসব নালা দিয়ে বালু ও পাথর ভেসে আসছে। এতে কিছু মানুষের ঘরবাড়ি ও জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বদলে যাচ্ছে প্রকৃতি। অন্যদিকে সীমান্তে বসবাসকারী অসহায় মানুষজন ঢলে আসা বালু-পাথর নেট দিয়ে সংগ্রহ করে সেগুলো বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা এ কারণে খুশিও। তবে তাদেরকে বাধ্য করে অল্পদামে এগুলো কিনে নেয় স্থানীয় বালু-পাথর খেকো একটি সিন্ডিকেট। জানা গেছে, গত ৮ জুন খনিজ স¤পদ উন্নয়ন ব্যুরো সুনামগঞ্জ, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন বালু-পাথর মহাল ইজারা, খাশ কালেকশন প্রদান বন্ধসহ পাথর কোয়ারিতে সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ আন্তর্জাতিক সীমানারেখার বালু-পাথরকে স্তুপিকৃত পাথর দেখিয়ে সেগুলো উন্মুক্ত নিলামদানের অনুমতির জন্য ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পত্রপ্রেরণ করেন। 

এই পত্রের আলোকে জেলা প্রশাসক অনুমতি না দিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের পরামর্শে খনিজ স¤পদ উন্নয়ন ব্যুরোকে যাছাইপূর্বব ব্যবস্থা নেওয়ার পত্র দেন। গত ২২ জুলাই চিঠি দেওয়ার একদিনের মধ্যেই খনিজস¤পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক উন্মুক্ত নিলামে এগুলো বিক্রির জন্য তাদের দুইজন প্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে চিঠি দেন। অভিযোগ রয়েছে, এই কাজগুলো দ্রুততার সঙ্গে করিয়ে নেয় বালু ও পাথর খেকো সিন্ডিকেট। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন, উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় নিলাম স্থগিত করা হয়েছে। আমি যা করেছি ঠিক করেছি। আমি ইউএনও। কোনটা সঠিক, কোনটা বেঠিক আমি বুঝি। 

আপনার যা ইচ্ছে লিখেন। বলেই তিনি উত্তেজিত হয়ে ফোন কেটে দেন। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের নিলামের প্রস্তাবটি আমি বিভাগীয় কমিশনারকে অবগত করে খনিজ স¤পদ উন্নয়ন ব্যুরোতে পাঠিয়ে দেই। খনিজ স¤পদ ব্যুরো বালু-পাথর উন্মুক্ত নিলামের দ্রুত অনুমোদন দিয়ে নিলামের জন্য তাদের দুইজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করে। তবে আজ কি হয়েছে আমার জানা নেই। তিনি বলেন, জায়গাটা ঝূকিপূর্ণ। পাহাড় ধসও হতে পারে, অনেকে বাস্তুচ্যুতও হতে পারে বলে আমাকে জানিয়েছেন অনেকে।সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ডিও লেটার প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি বালু-পাথর অপসারণের জন্য বলেছি। এগুলো নিলাম বা বিক্রির কথা বলিনি। প্রশাসন বা খনিজ স¤পদ ব্যুরো কেন এমন বিতর্কিত নিলামের উদ্যোগ নিলো সেটা তারাই জানে

 

এবিএন/ অরুন চক্রবর্তী/অসীম রায়/জসিম     


 

এই বিভাগের আরো সংবাদ