শিবগঞ্জে অবৈধ বালু উত্তোলনে জমি ও বসতবাড়ি বিলিনের অাশঙ্কা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০১৮, ১৭:৩৩
শিবগঞ্জ (বগুড়া), ২৪ জুলাই, এবিনিউজ : বগুড়ার শিবগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ৫০ বিঘা আবাদী জমি একটি প্রতিষ্ঠিত নার্সারী ও ঘরবাড়ি বালু গর্বে বিলিন হওয়ার পথে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছে এবং রবিবার বালু পয়েন্টে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার শিবগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব জাহাঙ্গীরাবাদ গ্রামে একই এলাকার খাজা মিয়া ও তার ভাই হাসান উদ্দিন দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে।দীর্ঘ দিন যাবৎ এই বালু উত্তোলনের ফলে আশে পাশের বিঘার পর বিঘা আবাদী জমি, নার্সারী এবং ঘরবাড়ি বালু গর্ভে বিলিন হয়েছে। মাত্র কয়েক কাঠা জমির মধ্যে প্রথমে বালু উত্তোলন শুরু করে বর্তমানে তা বিশাল এরিয়া নিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে। এলাকাবাসী বলেন বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়না বরং তাদের দ্বারা নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়।
এ দিকে এই বালু উত্তোলনের ফলে চার পাশের জমি গুলো বালুর মধ্যে বিলিন হওয়ায় জমির মালিকগণ বাধ্য হয়ে বালু উত্তোলনকারীদের কাছে কমমূল্যে জমি বিক্রি করতে হয়। এ কারনে কয়েক কাঠা জমি থেকে আজ কয়েক একর জমি হয়েছে। বর্তমানে আরও ৫০ বিঘা আবাদী জমি, একটি প্রতিষ্ঠিত নার্সারী এবং একটি পাড়ার ঘরবাড়ি বালু গর্ভে বিলিন হওয়ার পথে। ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশের আবাদী জমি যমুনার ভাঙ্গনের মত ভেঙ্গে বালু গর্ভে বিলিন হচ্ছে। নার্সারীর অনেক জমিও বালু পয়েন্টে বিলিন হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, ২০১০ সালে সাথী নার্সারীর ১০/১২ লক্ষ টাকার চারা গাছ নষ্ট হওয়ায় সেই সময় নার্সারীর মালিক মাহফুজার রহমান বাদী হয়ে আদালতে মামলা করে। সেই সময় আদালত বালু বন্ধের আদেশ প্রদান করলেও তা এখন পর্যন্ত উত্তেলান অব্যহত আছে। গত রবিবার বালু পয়েন্টে ৫ গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। গ্রাম বাসীর পক্ষে দেলবর হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার হয়নি। কোন কোন সময় সাময়িক ভাবে বন্ধ করলেও পরে তা আবার পুরদমে বালু উত্তোলন শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে এই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে তাদের আবাদী জমিগুলো রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানান। এসময় পানাতে পাড়া,লয়া পাড়া,চাউলা পাড়া,নাটমরিচাই সহ আশে পাশের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে মাহবুর, হোসেন, রুস্তম, এনামুল, রেজ্জাকুল, রেজাউল, ছানোয়ার, শাখাওয়াত জানান, এই বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে। কাজীতলা গ্রামের শুটকু বলেন আমার ১ বিঘা জমিই সম্বল আজ সেই জমিটুকু শেষ হতে চলছে। নয়াপাড়া গ্রামের মোফাজ্জল, আবুল কাশেম বলেন- আমাদের বাড়ীর কিনারায় ভাঙ্গন চলে এসেছে অল্প কিছু দিনের মধ্যে ঘরবাড়ী বালুগর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। তখন আমাদের পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে ।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মাশুকাতে রাব্বী জানান অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে খুব শীঘ্রই অভিযান শুরু করা হবে।
এবিএন/খালিদ হাসান/জসিম/রাজ্জাক
এই বিভাগের আরো সংবাদ