আজকের শিরোনাম :

কুড়িগ্রামে বন্যায় ৩ কোটি টাকার মাছের ক্ষতি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২০, ১৯:১২

কুড়িগ্রামে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে রয়েছে। তবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মৎস ও কৃষি খাতে। জেলায় বন্যার পানিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন আটজন। নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া ৮৮ জনের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার নিচে নামলেও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। সোমবার সকালে ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে ধরলার পানি কুড়িগ্রাম ব্রিজ পয়েন্টে এখনও বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা মৎস কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, জেলায় ১৩৭ হেক্টর আয়তনের ৮৫৪টি পুকুর বন্যায় পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে ১৯০ টন মাছ ও ৩৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকার পোনা ভেসে গেছে। প্রায় ২০ লাখ টাকার পুকুর পাড়ের ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকার। বন্যার ফলে জেলার নিবন্ধিত ১৮ হাজার মৎসজীবীর হ্যাচারি উৎপাদন ও বিপণন হুমকির মুখে পড়েছে।

তিনি আরও জানান, জেলার ২২২টি বিলের মধ্যে ২০টি বিলে মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুল আলম জানান, চলতি বন্যায় ৪৩টি স্কুল পানিবন্দী হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ১০টি স্কুল।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। আরও একটি ভাঙনের মুখে রয়েছে। এছাড়া ১৫২টি বিদ্যালয়ের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ভাঙনে বিলীন হওয়া স্কুলগুলোর মধ্যে দুটি উলিপুর ও দুটি রৌমারী উপজেলার।

স্কুল চারটি হলো চর বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়াডারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বলদমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ফলুয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর উলিপুরের সুখেরবাতির চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের মুখে রয়েছে।

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, বন্যার ফলে আটজন মারা গেছেন। এছাড়া পানিবাহীত রোগ দেখা দেয়ায় ৮৮ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।

জেলার ১৯টি পয়েন্টে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, উলিপুর-চিলমারী ও রৌমারী-রাজিবপুরে দুটি স্থায়ী তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ করোনার কারণে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। এখনও ঠিকাদারদের ৭০ কোটি টাকার বিল বাকি রয়েছে। এছাড়া চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নে ভাঙন ঠেকাতে চার হাজার বস্তা জিও ব্যাগ পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সাহেবের আলগা ও কর্তিমারীতে ভাঙন ঠেকাতে মেরামতকরণ কাজ শিগগিরই শুরু হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান প্রধান জানান, আমন ধানের বীজতলার ক্ষতি পুষিয়ে আনতে কৃষক পর্যায়ে কমিউনিটি বীজতলা স্থাপন করা হবে। বীজতলা তৈরিতে কৃষকের মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে ১৯৩৫ টাকা করে খুব শিগগিরই প্রদান করা হবে।

কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘কুড়িগ্রামের মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আলাদা দৃষ্টি রয়েছে। জেলার ৩১৫ কিলোমিটার নদীর তীর স্থায়ীভাবে রক্ষার জন্য কাজ করা হচ্ছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা পেলে সরকার সহায়তার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেবে।’

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ