আজকের শিরোনাম :

চিতলমারীতে সবজীর বাম্পার ফলন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০১৮, ১৪:০৯

বাগেরহাট, ১৭ জুলাই, এবিনিউজ : বাগেরহাটের সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্র চিতলমারীতে এবার বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। বহুকষ্টে উৎপাদিত ফসলের হঠাৎ দরপতনে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। বর্তমানে এখানে দূর-দূরান্ত থেকে কোন পণ্যবাহী ট্রাক চালক বা মালিক আসতে চায় না।

ফলে বাইরের বড়বড় পাইকারী সবজি ব্যবসায়ীরা বাজারে না থাকায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তবে চাষিদের দাবি এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মধ্যস্বত্বভোগীরা ফায়দা লুটছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৮৫২ একর জমিতে করল্লা, ১ হাজার ৪৯৪ একর জমিতে শসা, ঢেঁড়স ৭৪ একরে, চালকুমড়া ৮৬ একরে, মিষ্টি কুমড়া ৮৬ একরে, বেগুন ৮৬ একরে, বরবটি ১৭৩ একরে, চিচিংগা ১২৩ একরে এবং ৬২ একর জমিতে পুঁই শাকসহ মোট ৩ হাজার ২১১ একর জমিতে এবছর সবজি চাষ হয়েছে। আর এ উপজেলায় ১৫ হাজার সবজি চাষি রয়েছে। তবে বেসরকারি পরিসংখ্যানে এর পরিমাণ আরও অনেক বেশি।

উপজেলার, সুরশাইল, কুরমনি, পাটরপাড়া, খাশেরহাট, দড়িউমাজুড়ি, বাখেরগঞ্জ, খড়মখালী, শৈলদাহ, কালিগঞ্জ, হিজলা, নালুয়া, বড়বাড়িয়া ও ডুমুরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মৎস চাষের সাথে ঘেরের চারপাশের বেড়ীতে (পাড়ে) চাষিরা সবজির চাষ করেছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় শসা, করলা, বরবটি, চালকুমড়া, লাউ এবং ঝিঙাসহ বিভিন্ন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে।

কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় চাষিরা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। কারণ ব্যাংক ঋণ ও এনজিওসহ সুদখোর মহাজনদের চাপে অনেকেরই এখন ‘ত্রাহি মধুসুদন’ অবস্থা বলে স্থানীয় এক সাংবাদিক জানিয়েছেন। এতকিছুর মধ্যেও আড়ৎদারদের সিন্ডিকেট ও ইজারাদারদের অধীক মাত্রায় খাজনা আদায়ের অভিযোগও তুলেছেন সবজি চাষিরা।

চিতলমারীর বিভিন্ন গালা (আড়ৎ) ঘুরে জানা গেছে, এখানে প্রতি মণ করল্লা ৬৫০-৭৫০ টাকা, শসা ৩২০-৪৫০ টাকা, বরবটি ৪০০ টাকা, পুঁই শাক ৪০০ টাকা, বেগুন ৯০০ টাকা, কুশি ৬০০ টাকা এবং ঝিঙ্গা ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা আগের তুলনায় অনেক কম দাম। তাই হঠাৎ বাজার দর পড়ে যাওয়াতে কৃষরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এ ব্যাপারে সবজি চাষি অনুপ বিশ্বাস বলেন, আমাদের এলাকার সবজির দেশের বিভিন্ন বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে বাইরের এলাকা থেকে পাইকাররা আসছে না। তাই বাজার দর একেবারে কমে গেছে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে চাষিরা জানান, এবার ফসলের বাম্পার ফলন হলেও হঠাৎ আড়ৎদারদের দৌরাত্বে তার ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা আরও জানান, বাইরের ক্রেতা না এলে ভালো দাম পাওয়া যাবে না।

এ ব্যাপারে পাইকারী সবজি ক্রেতা মন্টু মহাজন জানান, বর্তমানে এখানে দূর-দূরান্ত থেকে কোন পণ্যবাহী ট্রাক চালক বা মালিক আসতে চায় না। তাই এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

তবে চিতলমারী উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার জানান, এবার এ উপজেলায় সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে যথেষ্ট মনিটরিং চলছে। ফসলের ফলন বাড়ানোর জন্য কৃষকদের বিষ মুক্ত চাষে উদ্ভূদ্ধ করা হচ্ছে। বাজারজাতকরণের ব্যাপারটি তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

এবিএন/এস এস সাগর/জসিম/এমসি

এই বিভাগের আরো সংবাদ