আজকের শিরোনাম :

আলফাডাঙ্গায় এক নারীকে কুপ্রস্তাব, অতঃপর গণধোলাই

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০১৮, ১২:৫০

ফরিদপুর, ১৭ জুলাই, এবিনিউজ : এক নারীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন আলফাডাঙ্গা উপজেলার মিয়া মো. মোরাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি। সোমবার আলফাডাঙ্গা গার্লস হাইস্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মোরাদ হোসেন নিজেকে বেসরকারি একটি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সমিতির কর্মী দাবি করেন। তবে স্থানীয়রা জানান, তার কোনো পেশা নেই। তিনি বিভিন্ন সময় সমিতির কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সাত থেকে আটজন নারীর সঙ্গে মিয়া মো. মোরাদ হোসেনের কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। এক পর্যায়ে মোরাদ ওই নারীদের একজনকে মারতে তেড়ে যান। পরে অন্যরা তাকে ধরে ফেলে এবং বেধরক জুতো পেটা করে। 
কারণ জানতে চাইলে বুড়াইচ গ্রামের বাসিন্দা মোসা. মনিরা বেগম নামে এক তরুণী অভিযোগ করেন, তিনি একজন গৃহকর্মী। একই গ্রামের বাসিন্দা মিয়া মো. মোরাদ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে তাকে শারীরিক সম্পর্ক করার কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। সে তার বাড়িতে কাজের কথা বলে টাকা লোভ দেখিয়ে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছে। প্রস্তাবে রাজি না হলে তার সন্তানদের গুম করার হুমকিও দিয়েছিল মোরাদ হোসেন।  বরং সে প্রতিবাদ করলে মোরাদ তাকে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দিতো।
গত ১৪ জুলাই শনিবার রাত ৮টার দিকে মোরাদ তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেছে।
মনিরা বেগমের মা সালেহা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়েকে সে প্রায়ই খারাপ কাজের প্রস্তাব দিতো। গত ১৪ জুলাই সে আমার মেয়েকে একা পেয়ে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেছে। সেদিন আমিসহ লোকজন আসলে সে পালিয়ে গিয়েছিল। আজ তাকে পেয়ে আমি জানতে চেয়েছি কেন সে আমার মেয়েকে কুপ্রস্তাব দিয়ে হয়রানি করছে? কিন্তু মোরাদ হোসেন আমার কোনো কথা শোনেনি। উল্টো আমার ও আমার মেয়েকে মেরেছে। প্রতিবাদে স্থানীয় মহিলারা তাকে জুতো পেটা করেছে।’
বুড়াইচ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব পান্নু বলেন, মিয়া মো. মোরাদ হোসেন একজন প্রতারক। তার বিরুদ্ধে এর আগেও নারী কেলেঙ্কারি এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে। মাল্টিপারপাস সমিতির নামে মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে। গরীব অসহায় এসব মানুষের টাকা সে ফেরত দেয়নি। উল্টো তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। 
বুড়াইচ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, মোরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা হয়েছে।  তার কোনো দৃশ্যমান পেশা নেই। সে চাকরি দেওয়া, বিদেশ পাঠানোসহ নানা ধরনের প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রায়ই এসব অভিযোগকারীরা তার বাড়ি ঘেরাও করে।’ 
 এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল করিম বলেন, ‘মোরাদ হোসেনকে আলফাডাঙ্গা গার্লস স্কুলের সামনে মহিলারা পিটিয়েছে বলে শুনেছি। তবে কী কারণে মেরেছে এটা জানি না।’ 
এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হামিদুল হক বাপ্পি বলেন, ‘আমার কাছে এখানো কেউ বিষয়টি জানায়নি। আমি খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছি।’ 

এবিএন/কে. এম. রুবেল/জসিম/নির্ঝর

এই বিভাগের আরো সংবাদ