দাউদকান্দিতে ২ বছরেও শেষ হয়নি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২০, ১৩:১৭
ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে দুই বছরেও শেষ হয়নি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মাওরাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ।
আধা কিলোমিটার দূরে জনৈক ব্যক্তির বসতবাড়িতে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) দাউদকান্দি উপজেলার মোহাম্দপুর ইউনিয়নের মাওরাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে।
দাউদকান্দির ‘মেসার্স ফারুক এন্টারপ্রাইজ’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৬৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ কাজ পায়। এক বছরের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল।
এরই মধ্যে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পায়ে হেটে ভাড়া করা বসতবাড়িতে স্থাপিত অস্থায়ী ভবনে গিয়ে লেখাপড়া করছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল ভূইয়া বলেন, আমরা ২ বছর ধরে ভাড়া করা বসতবাড়িতে পাঠদান করাচ্ছি। ভাড়া করা বাড়িটিতে প্রয়োজনীয় কক্ষ ও আসবাবপত্র না থাকার কারণে দুইটি শ্রেণির পাঠদান একটি কক্ষে করতে হচ্ছে। এতে দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে।
দুই বছর আগে দু’শর উপরে শিক্ষার্থী থাকলেও এখন রয়েছে মাত্র ১৩০ জন শিক্ষার্থী।
এলাবাসীর মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর(অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শন করে কাজের মান নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
বিদ্যালয়টি সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দুই বছরে ভবনের গ্রেডবিম পর্যন্ত কাজ করেছে ঠিকাদার। কলাম/পিলার(আংশিক) করা হলেও তা নি¤œমানের হওয়ায় হাতে ঢলা দিলে খসে পড়ছে বলে এলাকাবাসী জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী বলেন, পিলারগুলো ঢালাই করার সময় আস্তর বালুর পরিবর্তে বিট বালু দিয়ে ঢালাই করায় এখন ঢলা দিলে খসে পড়ছে।
এ বিষয়ে জানতে মেসার্স ফারুক এন্টারপ্রাইজ এর মালিক ঠিকাদার ফারুখ হোসেনকে তার ০১৬৭৩৩১৫০০৩ ফোন করলে তিনি বলেন রাস্তার সমস্যার কারনে মালামাল নিতে না পারায় কাজ বন্ধ ছিল, এখন রাস্তা দিয়ে মালামাল নেওয়া যায় কয়েকদিন ধরে কাজ শুরু করেছি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) আব্দুল কাদের বলেন, আমি আসার আগেই কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে চলতি বিলও নিয়েছে ঠিকাদার। বার বার তাগিদ দেয়ার পরও ঠিকাদার কাজ করছে না। আর পিলার গুলো টেস্ট করে তারপর কাজ করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী আহসান বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এতো দিনেও বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিকে অনেকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারপরেও ঠিকাদার কাজটি সম্পূর্ণ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম খান বলেন, ঠিকাদার কাজটি কখন শুরু করেছে তা ইঞ্জিনিয়ার সেকশন জানেননা এমনটি জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার।
ঠিকাদার এবং ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বয়হীনতার কারণে দীর্ঘদিন কাজটি সম্পন্ন না হওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এজন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারকে জনসম্মুখে তিরস্কার করেন বলেন জানান তিনি। আর নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে হেমারিং টেস্ট করার মাধ্যমে পরবর্তী কাজ দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এবিএন/কবির হোসেন/গালিব/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ