চিতলমারীতে ‘গ্রীণ লাইন’ জাতের শসার চাষ করে দিশেহারা কৃষক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০১৮, ১৪:২৪

বাগেরহাট, ১০ জুলাই, এবিনিউজ : বাজারের একটি বীজের দোকান থেকে গ্রীণ লাইন জাতের শসার বীজ কিনেছিল কৃৃষক বুদ্ধ বসু (৪০)। দেড় একর চিংড়ি ঘেরের পাড়ে প্রায় হাজার ঝাড় শসার চারা লাগিয়েছিল সে। গাছগুলো এখন ঘুরির মাথা ছুঁইছুঁই। কিন্তু ফলের কোন দেখা নেই। মহা দুশ্চিন্তায় বুদ্ধ।

কারণ চাষের পিছনে এ পর্যন্ত তার ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ঠিকমত ফলন হলে এতদিনে ঘরে উঠতো ২-৩ লাখ টাকা। তাই দেনার দায়ে বুদ্ধ এখন দিশেহারা।

বুদ্ধ বসু জানান, গত বছর গ্রীণ লাইন জাতের শসার বীজ চাষ করে এ অঞ্চলের সবজি চাষিরা ব্যাপক লাভবান হয়েছিল। সেই আশায় এ বছরও মৌসুমের শুরুতে তারা বড় পরিসরে চাষ করেন গ্রীণ লাইন জাতের শসার। আর যারা এ বছর গ্রীণ লাইন জাতের শসার বীজ চাষ করেছেন তারাই চোখে-মুখে সরষের ফুল দেখছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের ধোলইতলা, দড়িউমাজুড়ি, চরবানিয়ারী ইউনিয়নের দূর্গাপুর, ব্রক্ষ্মগাতি, খড়মখালী. খলিশাখালী ও গরীবপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা গেছে, প্রতি ক্ষেতেই শসার গাছ ভাল হয়েছে। কিন্তু গাছ ঘুরির শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেলেও শসার কোন খোঁজ নেই। আর এ মুহুর্তে ঘুরি বাড়ানও চাষিদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই কাঙ্খিত ফলন না পেয়ে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।

খড়মখালী গ্রামের সবজি চাষি রুহিদাস মন্ডল, সনজিৎ মন্ডল, গনপতি মন্ডল, অমৃত মন্ডল, মনমথ মন্ডল, পরিতোষ মন্ডল, অনিতোষ মন্ডল, রঞ্জন মন্ডল, অনাদি মন্ডল, শ্রীপতি মল্ডল, প্রকাশ মজুমদার, মিল্টন সিংহ, লিটন সিংহ, রনজিত মন্ডল, সাদ্দাম মন্ডল, সুশিল মন্ডল, সুশান্ত মন্ডল, শম্ভু মন্ডল, ক্ষিতিষ বাড়ৈ, নীতিষ বাড়ৈ, মন্ত বাড়ৈ, মোহন বাড়ৈ, জ্যোতিষ বাড়ৈ, বাবু বালা, সমীর মন্ডল ও দেবাষিশ মন্ডলসহ শতাধিক চাষি অভিযোগের সুরে জানান, বাজারের বিভিন্ন বীজের দোকান থেকে তারা ইউনাইডেট সীডের বাজারজাতকারী গ্রীণ লাইন জাতের শসার বীজ কিনে চাষ করেছেন। কিন্ত গাছ ভাল হলেও তারা ফলন পাচ্ছেন না। সেই সাথে বীজ কোম্পানীরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কেউ তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন না। তাই তারা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।

উপজেলা সদর বাজারের কয়েকজন বীজ বিক্রেতা স্থানীয় সাংবাদিকদের নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, গ্রীণ লাইন জাতের শসার বীজ একটির প্রভাবশালী কোম্পানীর বীজ। ওদের কথা লিখে কিছুই হবে না।

তবে একই বাজারের কয়েকজন বীজ বিক্রেতা জানিয়েছেন ভিন্ন কথা, তাদের ভাষায় ফকিরহাটের একটি গ্র“প বাজারে নকল বীজ বিক্রি করে গেছে। যে সকল চাষি কম টাকায় ওই বীজ কিনেছেন তারাই ধরা খেয়েছেন।

তবে চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার মুঠোফোনে জানান, এ ধরণের কোনো খবর তার কাছে নেই। আগামীদিন (বুধবার) থেকে মাঠে কৃষি অফিসের অফিসার পাঠানো হবে।

তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে আগে থেকেই চাষিদের সতর্ক করা হয়েছিল। তাদের বীজের প্যাকেট ও দোকানের ক্যাশমেমো সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছিল।

এবিএন/এস এস সাগর/জসিম/এমসি

এই বিভাগের আরো সংবাদ