আজকের শিরোনাম :

আক্কেলপুরে প্রেমের টানে উধাও: পরে অপহরণ মামলা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২০, ১৮:১৫

প্রেমিক সাকিব হোসেন (২২)। সে প্রেমের সম্পর্ক করে এক নবম শ্রেণির (১৪) ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। পরে মেয়েটির মা বাদী হয়ে থানায় প্রেমিক সাকিব হোসেন ও তার বড় ভাই রাসেল হোসেন (৩০) এর নামে অপহরণ মামলা করেন। পুলিশ তাদেরকে আটকও করে। প্রেমিক সাকিব জেলে থাকলেও মেয়েটির মামা-খালুসহ ৭-৮ জন লোক মিলে মেয়েটির গলার স্বর্ণের যে চেন ছিল সেটি উদ্ধার করতে গিয়ে গভীর রাতে প্রেমিক সাকিবের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রোয়াইর পশ্চিম পাড়া গ্রামে ঘটে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মেয়েটির বাবার বাড়ি জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধারকী গ্রামে। সে ওই এলাকার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার নানির বাড়ি ছিল আক্কেলপুর উপজেলার রোয়াইর পশ্চিম পাড়া গ্রামে। মেয়েটি তার নানির বাড়িতে বেড়াতে আসা-যাওয়ার সময় একই গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে সাকিব হোসেনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টায় মেয়েটি কোচিং সেন্টারে যাওয়ার সময় সাকিব ও তার বড় ভাই রাসেলসহ ৪-৫ জন মিলে জোর করে একটি মোটরসাইকেলে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এর পর মেয়েটির মা বাদী হয়ে সাকিব ও তার বড় ভাই রাসেলসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে গত ৮ ফেব্রুয়ারি জয়পুরহাট সদর থানায় একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। ১৫ ফেব্রুয়ারি মেয়েটি ও সাকিবকে আদালতে হাজির করলে মেয়েটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিতে স্বীকার করে সে 'স্বেচ্ছায় সাকিবের সাথে পালিয়ে গিয়েছিল এবং তারা বিয়ে করেছে, মেয়েটি তার বাবা মার কাছে থাকতে চায়'। বর্তমানে মেয়েটি তার বাবা মার বাড়িতে আর সাকিব জেলহাজতে রয়েছে। আর সাকিবের বড় ভাই রাসেল জামিনে রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনার জের ধরে মেয়েটির মামা-খালুরা গত মঙ্গলবার (৩ মার্চ) রাত ১১টার দিকে মেয়েটি পালিয়ে যাওয়ার সময় স্বর্ণের চেন নিয়ে গিয়েছিল সেটির দাবি নিয়ে সাকিবের বাড়িতে প্রবেশ করে ভাঙচুর করে। পরে খবর পেয়ে ওই রাতেরই পুলিশ সাকিবের বাড়িতে যায়। এর আগে তারা সাকিবের বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

সাকিবের বড় ভাই রাসেল হোসেন বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সুবাদে তারা পালিয়ে গিয়েছিল। মেয়েটির মা আমার ও আবার ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। ওই ঘটনায় আমার ভাই এখন জেলহাজতে। মেয়েটি পালিয়ে যাওয়ার সময় কি নিয়ে গিয়েছিল সেটি আমার ভাই বলতে পারবে। কিন্তু ভাই তো এখন জেলের ভেতরে তারা কেন গভীর রাতে আমাদের বাড়ীতে এসে ভাঙচুর করবে। এ ঘটনায় আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

মেয়েটির মামা মামুন হোসেন বলেন, মেয়েটি পালিয়ে যাওয়ার সময় কাছে স্বর্ণের চেন ছিল। সেটি সাকিব আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছে। সাকিবের চাচা হাসিবুল ইসলাম আমাদের ওই রাতে সাকিবের বাড়িতে স্বর্ণের চেন নিতে যেতে বলেছিল। তারা দিতেও চেয়েছিল। কিন্তু তারা তা না দিয়ে উল্টো আমাদের ওপর হামলা করে এখন বাড়ি ভাঙচুরের নাটক সাজায়।

এ ব্যাপারে মেয়েটি বলে, আমার সাথে সাকিবের চার বছর ধরে প্রেম। আক্কেলপুরে নানির বাড়িতে আসা-যাওয়ার সময় আমাদের মাঝে সম্পর্ক তৈরি হয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় আমার কাছে এক লাখ টাকা ও গলায় একটি স্বর্ণের চেন ছিল।  

জয়পুরহাট সদর থানার এসআই সাব্বির আরাফাত বলেন, ওই ঘটনায় ভিকটিম উদ্ধার করা হয়েছে। এবং মামলার এক নম্বর আসামি সাকিবকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ বলেন, খবর পেয়ে সাকিবের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে ওই সময় কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।


এবিএন/আতিউর রাব্বী তিয়াস/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ