আজকের শিরোনাম :

মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে চসিককে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে : মেয়র

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৮:৪৭

মশার উপদ্রব প্রতিরোধে এডালটিসাইড ও লার্ভিসাইড ঔষুধ ক্রয়ের আর্থিক সহযোগিতা কামনা করে মন্ত্রণালয়ে পত্র দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এর মেয়র আলহাজ আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চসিক ৫ম নির্বাচিত পরিষদের ৫৫তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। চসিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে অনুষ্ঠিত এই সভায় চসিক প্যানেল মেয়র,কাউন্সিলর,সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চসিক প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেমসহ চসিক বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগন এবং নগরীর সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন চসিক সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী।

তিনি বলেন,শুস্ক মৌসুমে মশার বিস্তারের উপযুক্ত সময়। ফলে নগরীতে মশার উপদ্রব ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাসা-বাড়িতে মশার উপদ্রবে নগরবাসি অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। নগরবাসিকে মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে চসিককে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। আর্থিক অনটনের কথা বলে বসে থাকলে নগরবাসির অভিযোগ থেকে পার পাওয়ার সুযোগ নেই চসিকের।  এই প্রসঙ্গে সিটি মেয়র আরো বলেন,বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আর্থিক ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। বলতে গেলে আয়-ব্যয় প্রায়ই সমানে সমান। এই পরিস্থিতিতে মশার প্রজনন এবং উড়ন্ত মশা ধ্বংস করার জন্য ঔষুধ ও যন্ত্রপাতি ক্রয়  ব্যতিত চসিকের সামনে কোনো পথ খোলা নেই।

তাই জরুরী ভিত্তিতে এডালটিসাইড ও লার্ভিসাইডসহ যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য ২০(বিশ) কোটি টাকার আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণের জন্য চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলেন সিটি মেয়র।  মশার প্রজনন ধ্বংস করার জন্য আমাদের চলমান কাজকর্ম অব্যহত রাখতে হবে। নালা নর্দমা পরিস্কারসহ মশার প্রজনন ধ্বংসের জন্য লার্ভিসাইড এবং উড়ন্ত মশা ধ্বংসের জন্য বাসা-বাড়িতে এডালটিসাইড ঔষুধ ছিটানোতে আরো তৎপর হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন সিটি  মেয়র। মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করাকে ইবাদত মনে করে উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র,কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নির্বাচন। এই নির্বাচনে যে কেউ জয়ী হয়ে আসতে পারে,আবার অনেকেই নাও আসতে পারে। বিজয়ী হয়ে আসতে না পারলে নিভৃতে বসে থাকাটা একজন জনপ্রতিনিধির কাম্য নয় । কারো ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। জনপ্রতিনিধির কাজ মানুষের সেবাদান করা। ক্ষমতায় না থাকলেও আপদে -বিপদে মানুষকে সেবা দিয়ে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে হবে। এই সময়ই জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার মোক্ষম সময় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সিটি মেয়র বলেন, জনগণের রায়ে আমরা যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়েছি,নগরবাসির স্বার্থ রক্ষায় আমরা এখানে এসেছি। নগরবাসীর সেবা ও কাজ করতে পারাটাই আমাদের ব্রত। এই প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন আগামী ৪ঠা আগস্ট পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত ৫ম পরিষদের মেয়াদ থাকবে। এই মেয়াদকালীন সময়ের মধ্যে কাউন্সিলর ও চসিক কর্মকর্তাদের সমন্বয় সাধন পূর্বক কর্পোরেশনের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করেন মেয়র ।

তিনি বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে এই মেয়াদেই চসিকের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। যা জনসম্মুখে প্রচার ও প্রসার করতে হবে।  মেয়র চসিকের চলমান উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রেখে সুন্দর নগরী হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি  করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠিত সভায় অর্থ ও সংস্থাপন, শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্যরক্ষা, নগর অবকাঠামো নির্মাণ ও সংরক্ষণ,আইন শৃংখলা বিষয়ক,  যোগাযোগ, নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন সম্পর্কিত,বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, দারিদ্র হ্রাসকরণ ও বস্তি উন্নয়ন,পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ, পানি ও বিদ্যুৎ ষ্ট্যান্ডিং  কমিটির চেয়ারম্যানগণ স্ব স্ব কমিটির কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন এবং আলোচনান্তে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

এছাড়া সভার শুরুতে সম্প্রতি নগরীতে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে  প্রণীত কর্মপরিকল্পনার আলোকে ১০০টি সড়কে সৌন্দর্যবর্ধন,চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যাদি সংগ্রহপূর্বক কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচালিত জিআইএস ডাটাবেজকরণ, চসিক পরিচালিত হাসপাতাল,মার্কেট,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনায় অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম স্থাপন, প্রতিবন্ধিদের চলাচলের উপযোগী করে ফুটপাত এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ, চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদক,জঙ্গীবাদ,বাল্যবিবাহসহ বিবিধ বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারনার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় ও অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন,নগরীর যানজট নিরসনের জন্য অবৈধ রিক্সা ও ভ্যানগাড়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, চলমান উন্নয়ন কাজ দ্রুততার সাথে শেষ করা, কর্পোরেশনের স্থাপনা সমূহে পার্কিং স্থানে মার্কিং ও ল্যান্ড মার্কিং কাজ সম্পন্ন করা সহ বিবিধ বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
 

এবিএন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ