আজকের শিরোনাম :

বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি

ইউপি চেয়ারম্যান ইনামুলের বিরুদ্ধে আলফাডাঙ্গা আ.লীগের বিক্ষোভ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:০৩

বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটুক্তি এবং ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করে জনরোষে পড়েছেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইনামুল হাসান। প্রতিবাদে তার বিরুদ্ধে আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের  নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে। স্থানীয় শত শত সাধারণ মানুষও এতে যোগ দেন।    

বুধবার বিকেলে আলফাডাঙ্গা বাজারে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে তারা ইনামুল হাসানের নজিরবিহীন ধৃষ্টতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান। সেই সঙ্গে তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে দ্রুত অপসারণের দাবি তোলা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে উপজেলা সদর বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে চৌরাস্তায় এসে জড়ো হয়। পরে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম আকরাম হোসেনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম সুজা, দপ্তর সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ আলী বাশার, গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান ইকু, গোপালপুর ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি হাসমত হোসেন কাজল, জেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মোনায়েম হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি তন্ময় উদ্দৌলা, জেলা কৃষক লীগের সম্পাদকম-লীর সদস্য তৌকির আহমেদ ডালিম, পৌর কৃষক লীগের সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রাজিব, গোপালপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মোল্লা প্রমুখ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম আকরাম হোসেন বলেন, ‘যে শেখ মুজিব রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হতো না, আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা অর্জন করতে পারতাম না, পাকিস্তানিদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতাম না সেই বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে চেয়ারম্যান ইনামুল হাসান কটুক্তি করেছে। ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেছে। আমরা আলফাডাঙ্গাবাসী এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

তিনি বলেন, ‘এই ধরনের ধৃষ্টতা দেখানোর দায়ে ইনামুল হাসানের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত। বঙ্গবন্ধুকে যারা অস্বীকার করে, তারা স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে। এরা স্বাধীনতার শত্রু। দেশ স্বাধীন হলেও তাদের মনে এখনো পাকিস্তান প্রীতি। এমন কাজের নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।’

গোপালপুর ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি হাসমত হোসেন কাজল বলেন, ‘ইনামুল হাসান এর আগেও বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তি করেছেন। প্রকাশ্যেই তিনি সরকারের বিষদগার করেন। ইনামুলদের গোটা পরিবার বিএনপির রাজনীতিতে বিশ্বাসী। স্বাধীনতার সময় তার বাবা গোলাম কুদ্দুসের বিতর্কিত ভূমিকা ছিলো বলেই বঙ্গবন্ধু ও আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করতে পেরেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’  
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জানুয়ারি চেয়ারম্যান ইনামুল হাসান পাড়াগ্রাম মোড়ে গেলে স্থানীয় কিছু লোক তার কাছে আসে। এ সময় তারা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারি ঘর বরাদ্দে দুর্নীতি, বয়স্ক, বিধবাভাতায় অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেখানে ন্যায় প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন, সেখানে আমরা ন্যায্য পাওনা পাচ্ছি না।

জবাবে ইনামুল হাসান বলেন, ‘তোমাদের প্রধানমন্ত্রী ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন। তখন ন্যায় কোথায় ছিল? বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কোথায় ছিল? শেখ মুজিবুর রহমান তো পাকিস্তান ভেঙেছে। দুই পাকিস্তান এক থাকলে দেশ আরো সুন্দর হইত। তারে (বঙ্গবন্ধু) নিয়ে লাফালাফির কী আছে?  পরে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে তিনি দ্রুত সেখান থেকে চলে আসেন। ওই ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয়।

পরে এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ইনামুল হাসানের বিরুদ্ধে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মানহানীর মামলা হয়েছে। আদালত আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি আসামি ইনামুল হাসানকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগেও বিভিন্ন সময় লোকজনকে হুমকি, ধমকি ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বিতর্কিত হয়েছেন ইনামুল হাসান। হুমকি-ধমকি দেওয়ার কারণে আলফাডাঙ্গা থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক সাধারণ ডায়েরিও করেছেন সংক্ষুব্ধরা। এছাড়া তার বিরুদ্ধে স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি এবং যৌতুকের টাকা না পেয়ে মারপিটের অভিযোগে মামলা হয়েছিল। পরে এনিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ করেছেন তিনি।


এবিএন/কে এম রুবেল/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ