সোনাগাজীতে দুই ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৩৪

সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখার দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রৌশন আরা বেগম নামের নারী গ্রাহক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন। 

এ বিষয়ে ওই নারী বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুদক চেয়ারম্যান, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা বরুণ কুমার ও মণিরুল ইসলামের সোনলী ব্যাংক সোনাগাজী শাখায় কর্মরত আছেন।

তবে অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে সমকালকে জানায়, কথিত ঘটনার তিনমাস পর মানসিকভাবে অসুস্থ ওই নারী গ্রাহক অসৎ উদ্দেশ্যে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে হয়রানির চেষ্টা করছেন। করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রৌশন আরা বেগম বাংলাদেশ সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখার একজন নিয়মিত গ্রাহক। তিনি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসর গ্রহণ করেন। তার  মাসিক পেনশন, চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা বাবদ উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর ৫৮ হাজার ৮৩৬ টাকার অ্যাডভাইসে গ্রহণ করেন। একই অ্যাডভাইসে আরো দুজন নারী নমিতা রানী রায় ও লক্ষ্মীরানী বসাকেরসহ তিনজনের মোট ১ লাখ ৮০ হাজার ৯২৪ টাকার হিসেব ছিল। ওই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে যাবতীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখার ক্যাশ অফিসার বরুণ কুমারের নিকট কাগজপত্র জমা দেন। তিনি তাকে জানান টাকা দিতে দেরি হবে। আপনারা অপেক্ষা করতে হবে। এর মধ্যে ওই নারী হঠাৎ শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে বরুন কুমারকে তার সোনালী ব্যাংক হিসাব নাম্বার- ৪০১৭১০০১৪১০৭৫ এ জমা দেয়ার জন্য বলে একটি সাদা কাগজে তার হিসাব নাম্বারটি লেখে দিয়ে ব্যাংক ত্যাগ করে বাসায় চলে যান। পরবর্তীতে তিনি আর খোঁজ নেননি। 

গত ২২ জানুয়ারি তিনি ব্যাংকে গিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গেলে জানতে পারেন তার উল্লেখিত সোনালী ব্যাংকের একাউন্টে ৫৮ হাজার ৮৩৬ টাকা জমা হয়নি। তাৎক্ষণিক তিনি বিষয়টি সোনাগাজী শাখার ব্যবস্থাপক ফরহাদ উদ্দিনকে অবহিত করেন। 

পরবর্তীতে তার ছেলে শাহ আজিজুর রহমানকে নিয়ে সর্বশেষ ৩ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকে গেলে তিনি (ব্যবস্থাপক) বিষয়টি সমাধান করতে পারবেননা বলে জানিয়ে দেন। ওই নারী দাবি করেন, ব্যাংকের ক্যাশ শাখার অফিসার বরুণ কুমার ও মনিরুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজসে তার ৫৮ হাজার ৮৩৬ টাকা উত্তোলন ও আত্মসাত করেছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে বরুন কুমার ও মনিরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, পেনশন বই প্রদর্শন করা ছাড়া টাকা উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। পেনশন বই মহিলাটির কাছেই ছিলো। মহিলাটি পেনশন বই দেখিয়ে টাকা নগদ উত্তোলন করে চলে যায়। ঘটনার তিন মাস পর মহিলাটি হঠাৎ এসে বলে তার টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। তার অভিযোগ সত্য হলে ঘটনার পর পরই তিনি ব্যাংকে এসে বিষয়টি অবহিত করতেন।

তারা প্রশ্ন রেখে আরো বলেন, তার টাকা আমরা কেন তার হিসাব নাম্বারে জমা করার দায়িত্ব নিবো।। হয়রানি করার জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত কাল্পনিক অভিযোগ করছেন মহিলাটি।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ফরহাদ উদ্দিন সমকালকে বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। নারী গ্রাহক আমাকে বিষয়টি অবহিত করার পর আমি ওই দুই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করেছি। তারা বলেছেন তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য না। তাছাড়া মহিলাটির কথায় অনেক গরমিল রয়েছে।

এবিএন/আবুল হোসেন/গালিব/জসিম


 

এই বিভাগের আরো সংবাদ