আজকের শিরোনাম :

বেড়ায় সংস্কারের অভাবে ব্যস্ত সড়কটি এখন পরিত্যক্ত

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:২৪

বেড়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বরশিলা গ্রামসহ উপজেলার দশটি গ্রাম সঙ্গে উপজেলা সদর যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটি এখন পরিত্যক্ত, সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যাতায়াত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে উপজেলার দশটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।

পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা-নলভাঙ্গা-খাকছাড়া গ্রাম দিয়ে সড়ক নির্মাণের পর যোগাযোগ সুবিধায় উপকৃত হয়েছিল উপজেলার অন্তত ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। সড়কটি নির্মাণ হওয়ায় উপজেলার সদর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন গ্রামগুলোর মধ্যে গড়ে উঠেছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা। যাত্রী ও পণ্য নিয়ে সড়কে চলতে থাকে অসংখ্য ছোট-বড় যানবাহন। 

মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে সড়কটি ভেঙে চুরে এতটাই বেহাল দশা হয়ে পড়েছে যে ঐ রাস্তা দিয়ে শুধু পায়ে হেঁটে চলা ছাড়া যানবাহন নিয়ে চলাচলের কোন অবস্থা নেই। সড়কটি এখন পুরোপুরি পরিত্যাক্ত। বেড়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বড়শিলা মহল্লা পর্যন্ত সদর থেকে ৩ কিলোমিটার রাস্তা চলাচলে একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।                                                                                                                                              

বেড়া, চাকলা, নলভাঙা, বড়শিলা, খাকছাড়া, দমদমা, পাঁচুরিয়া, তাঁরাপুরসহ দশটি গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে ওঠে এই সড়কটির মাধ্যমে। সড়কটি এখন পরিত্যক্ত হওয়ায় যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) বেড়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। নয় বছর আগে সড়কটি নির্মাণ করতে খরচ হয় ১ কোটি  ২০ লক্ষ টাকা। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ সড়কটি সরু ও নিচু করে নির্মাণ করা হয়েছিল, যে কারণেই বর্ষা এলে সড়কটির অনেক জায়গা পানিতে তলিয়ে যায় এবং ভেঙ্গে যায়। ক্রমাগত সড়কটি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় পাকা সড়কটি তার আধুনিকতা হারিয়ে খাল খন্দে ভরা একটি পায়ে চলা রাস্তায় রুপ নিয়েছে। বর্ষা ও বৃষ্টিতে সড়কের কয়েকটি স্থান বিলীন হয়ে গেছে। এসব স্থানে কোন যানবাহনের পক্ষে যাতায়াত করা সম্ভব না। এরপরও হঠাৎ কোনো যানবাহন এই সড়কে ঢুকে পড়লে প্রচন্ড দুভোগ সহ্য করতে হয়। এলাকাবাসীর জানায়, রাস্তা নির্মাণের পর থেকে কর্তৃপক্ষ সড়কটির কোন প্রকার সংস্কার কাজ করেনি।

মাঝে মধ্যে সহজ পথ ভেবে অনেক সিএনজি চালক এ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে গাড়ী নষ্ট হয়ে বিপদে পড়েছে। 

আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একটি সিএনজি রাস্তার ভেঙ্গে যাওয়া অংশে এসে সিএনজিটি তিনজন মিলে ঠেলে তুলছে। 

সড়কের ব্যাপারে জানতে চাইলে চালক সবুজ রানা বলেন, আমি জানতাম এ রাস্তা দিয়ে যাওয়া একটু কষ্ট হবে কিন্তু বেড়া হাসপাতাল থেকে একটা রোগী আনার জন্য সময় বাঁচাতে এই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু যেতে পারছি না কিছু দূর গিয়ে ফিরে আসতেই জীবন শেষ। এ রাস্তা দিয়ে এসে চরম বিপদে পরে গেছি। 

১০ ফিট সড়কের এখন কোথাও কোথাও দুই থেকে চার ফিট সড়ক টিকে আছে, আবার সড়কের দুইপাশে কাশবনে ঢেকে গেছে। অবশিষ্ট রাস্তা দিয়ে একজন মানুষ পায়ে হেটে কোনোমতে চলাচল করতে পারে।।

খাকছাড়া গ্রামের বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানিক হোসেন বলেন, সড়কটি চালু হওয়ার পর আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বেড়ে গিয়েছিল। সড়কটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ায় যানবাহন তো দূরের কথা শিক্ষার্থীদের পায়ে হেঁটে আসারও উপায় নেই ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে।

স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর এর বেড়া উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কদ্দুস বলেন, সড়কটির মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই রাস্তা পুনঃনির্মাণ প্রক্রিয়া আরাম্ভ করা হবে। 

রাস্তাটি পুনরায় সংস্কার করার আগে রাস্তাটি টেকসই করার লক্ষ্যে বর্ষায় যাতে রাস্তা ডুবে না যায় তার জন্য রাস্তা উচু এবং চওড়া করার দাবি জানায় এলাকাবাসী।
এবিএন/নির্মল সরকার/গালিব/জসিম 
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ