আজকের শিরোনাম :

আত্রাই-রানীনগর উপজেলার সেতু বন্ধন বাঁশের সাঁকো

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ১১:২৬

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ঘোষগ্রাম এবং আত্রাই উপজেলার ক্ষিদ্র কালিকাপুর নামকস্থানে নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর ওপর দিয়ে চলাচলের জন্য ঘাট ইজারাদারের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করায় রাণীনগর ও আত্রাই দুটি উপজেলার দুটি ইউনিয়নের বসবাসরত মানুষের মাঝে যোগ হয়েছে এই বাঁশের সাঁকোর নিবিড় বন্ধন। 

যোগাযোগ ব্যবস্থার এই আধুনিকতার যুগে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হলেও নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর ওপর দিয়ে পারাপারের জন্য রাণীনগর উপজেলার ঘোষগ্রাম ও আত্রাই উপজেলার ক্ষিদ্র কালিকাপুর নামকস্থানে নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বর্ষা মৌসুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পারাপার  হতে হয় আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই চলাচলের জন্য ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। 

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার সদর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে সীমান্ত ঘেঁষে ও আত্রাই উপজেলার সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার পশ্চিম দিয়ে বুক চিড়ে বয়ে গেছে নওগাঁর ছোট যমুনা নদী। বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে বছরের বেশি সময় ধরে বন্যার পানি চারিদিকে ঘিরে থৈই থৈই করে। তখন পারিবারিক প্রয়োজনে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ভাড়ায় ইঞ্জিনচালিত নৌকায়। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই বিলের পানি কমতে থাকায় পানি-কাদায় একাকার হওয়ায় পায়ে হেঁটে উপজেলার আটগ্রাম, হরপুর, তারানগর, বাউল্লাপাড়া, ঝিয়াড়িগ্রাম, শলিয়া গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে জেলা ও উপজেলা সদরে যেতে হয়। নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় ঘোষগ্রাম-ক্ষিদ্র কালিকাপুর নামকস্থানে নদী পারাপারের জন্য একটি বাঁশের সাঁকোর ওপরই ভরসা করতে হয়। 

যানবাহন চলাচলের উপযোগী সরাসরি কোন পথ না থাকায় আত্রাই উপজেলার বিলবেষ্টিত কালিকাপুর ইউপির অবহেলিত জনপদের মধ্যে আটগ্রাম, হরপুর, তারানগর, বাউল্লাপাড়া, ঝিয়াড়িগ্রাম, শলিয়া বড়কালিকাপুর গ্রামসহ রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, নান্দাইবাড়ি, আতাইকুলা বেতগাড়ী গ্রামের প্রায় ৫ হাজার লোকের বসবাস হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থার তেমন উন্নয়ন না হওয়ায় অনেক জরুরী সুযোগ, সুবিধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে এই দুই উপজেলার গ্রামবাসী। ওই গ্রামগুলোতে সবচেয়ে বেশি ইরি ধান উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত। 

স্থানীয় কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষি পণ্যসামগ্রী সহজভাবে বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হয়। কিছুটা বাধ্য হয়ে ফরিয়া ও মহাজনদের কাছে চলমান বাজার মূল্যের চেয়ে কমদামে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে হয়। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি থাকলেও প্রকল্প আসে প্রকল্প যায় এই এলাকাবাসীর ভাগ্য উন্নয়নের কারো যেন মাথা ব্যাথা নাই। অথচ উক্ত স্থানে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে রাণীনগর-আত্রাই উপজেলাবাসীর প্রাণের দাবি পূরণ হবে।

আত্রাই উপজেলার ক্ষিদ্র কালিকাপুর গ্রামের আকবর আলী সরদার আব্দুর রউফ, রুহুল আমিন বিকাশ ও বেলালসহ গ্রামবাসীরা জানান এখানে ব্রিজ না থাকায় প্রায় সারা বছরই কষ্ট করে পারাপার হতে হয়। বিশেষ করে বর্ষ মৌসুমে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছেলে মেয়েদের নিয়ে আমাদের আতংকে থাকতে হয়।

আত্রাই উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হক নাদিম জানান, দুই উপজেলার পারাপারের জন্য বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে নৌকা এবং বাঁশের সাঁকোর ওপর ভরসা রাখতে হয় প্রায় ৮টি গ্রামের বসবাসরত জনসাধারণের। এখানে একটি ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলম এমপিসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কামনা করছি।

এবিএন/রুহুল আমিন/গালিব/জসিম
    

এই বিভাগের আরো সংবাদ