আজকের শিরোনাম :

ধর্মপাশায় শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে চলছে বোরো রোপণ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:১৭

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে জমিতে বোরো চারা রোপণের কাজ শুরু করেছেন চাষিরা। কৃষি অফিস আশা করছে- এবারে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবারে মোট ৩১ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো রোপণের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেয়া হয়েছে। এজন্য ১৭১৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা প্রস্তুত রয়েছে।

যার মধ্যে হেক্টর উচ্চ ফলনশীল(উফশী) জাতের ১৬৫০এবং ৬৫হেক্টর হাইব্রিড জাতের বোরো বীজতলা রয়েছে। যা' দিয়ে ৩৫,০০০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ সম্ভব বলে কৃষি অফিস জানিয়েছে। সাধারণত বছরের প্রথম জানুয়ারী থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত চাষিরা হাইব্রিড ও উফশী জাতের বোরো চারা রোপণ করে থাকেন। সে অনুযায়ী এরই মধ্যে বোরো চারা রোপণের কাজও শুরু করেছেন চাষিরা। যদিও এলাকায় বিরাজ করছে কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশা।

চাষিরা শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে বোরো চারা রোপণে মনোনিবেশ করেছেন। কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য মতে ১৮জানুয়ারী পর্যন্ত উপজেলার ১০ইউনিয়নে ১৮,৪২৫হেক্টর জমিতে বোরো চারা রোপণ করা হয়েছে। চাষিরা জানিয়েছেন, এবারে তারা হাইব্রিড জাতের ধান ছাড়াও উফশী জাতের ব্রিধান-২৮, ব্রিধান-২৯, ব্রিধান-৫০, বিআর-১৫, বিআর-১৬, মিনিকেট ধান চাষের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

এছাড়া সুগন্ধি ব্রিধান-৩৪ যা স্থানীয়ভাবে জিরা শাইল নামে পরিচিত সেই ধান চাষেও চাষিরা এবার উৎসাহ দেখাচ্ছেন। অবশ্য এই ধান চাষিরা আমন মৌসুমে চাষ করে থাকলেও বোরো মওসুমেও এই ধান চাষে চাষিরা সাফল্য পেয়েছেন। একারণে অনেক চাষিই বোরো মৌসুমে জিরা শাইল ধান চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন বলে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে। চাষিরা আরো জানান, আগে ভাগেই জমিতে চারা রোপণ করতে না পারলে অনেক সময়ই শ্রমিক সঙ্কটে পড়তে হয়। তাই শীত ও কুয়াশার প্রবল বাধা থাকা সত্তেও জমিতে বোরো চারা রোপণ করতে হচ্ছে।

উপজেলার ধর্মপাশা সদর ইউনিয়নের নোয়াবন্ধ গ্রামের কৃষক লাইছ মিয়া (৪৫), নুরুমিয়া (৫৫), আতকাপাড়া গ্রামের রেজাউল করিম (৫০) জানান, গত দুই-তিন সপ্তাহ আগে হাওড় থেকে আমন ধান কেটে গোলায় তুলেছি। গোলায় তোলার পর পর বোরো চাষাবাদ করার লক্ষে জমি উপযোগী করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছি। গত মৌসুমে ইরি  উঁচুজমিতে বাম্পার ফলন হওয়ায় আমরা এই মৌসুমেও ব্যাপকভাবে বোরো চাষাবাদের প্রস্ততি নিয়ে এগুচ্ছি। এই মৌসুমে সেচের মাধ্যমে আমাদের চাষাবাদ করতে হবে। বাড়ছে শ্রমিকদের কদর। সেই জন্য জমি উপযোগী করে তুলতে চড়া মূল্যে শ্রমিক রেখেছি। আশারাখি গত মৌসুমের মতো এই মৌসুমেও আশানুরূপ ফলন পাব।

উপজেলা কৃষি অফিসার নাজমুল ইসলাম বলেন, চাষিরা আগের চেয়ে এখন অনেক সচেতন। এবারে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বোরো বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি। বীজতলা থেকে যে পরিমাণ চারা উৎপাদিত হয়েছে তাতে নির্দ্বিধায় বলা যায় এবারে বোরো চাষের লত্মগ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। চাষিরা আগে ভাগেই বোরো চারা রোপণের কাজ শুরু করেছেন।

ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান জানান, বোরো চাষাবাদে লক্ষমাত্রা অর্জনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্বক সহযোগিতা দেওয়া হবে। কৃষকদের প্রণোদনা হিসেবে বিভিন্ন কৃষি উপকরণ ও উন্নত জাতের বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষকরাও উৎসাহ নিয়ে গত মৌসুমের মতো বাম্পার ফলনে অবদান রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
 

এবিএন/ইমাম হোসেন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ