আজকের শিরোনাম :

বগুড়ার শেরপুরে ব্যবসায়ীকে হত্যা মামলায় আটক ২

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮:৫৬

বগুড়ার শেরপুরের ভবানীপুর বাজার এলাকায় গৃহকর্তাকে হত্যা করে গরু-ছাগল ডাকাতি করার ঘটনার দীর্ঘ ৫ মাস পর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও চিরুনি অভিযান চালিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) গাজীউর রহমানের নেতৃত্বে শেরপুর থানার চৌকস পুলিশ কর্মকর্তাদের সফল অভিযানের মাধ্যমে হত্যায় জড়িত আন্ত:জেলা ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য ও হত্যা মামলার যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামী আজদার রহমান(৫২) ও রেজাউল করিম (৩৭) কে  গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।

 আজ (৩১ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার দুপুরে শেরপুর থানায় প্রেস ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) গাজিউর রহমান জানান, ধুনট উপজেলার চিকাশী ইউনিয়নের হটিয়ারপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল সামাদ প্রামানিকের ছেলে শাহজাহান আলী শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের অলির উদ্দিনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে জীবন জীবিকার তাগিদে পরিবার পরিজন নিয়ে কয়েক বছর ধরে বসবাস করে আসছিল । পরিবার পরিজনের মুখে দু-বেলা দু-মুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার  জন্য স্বামী-স্ত্রী দুজন মিলে দিনরাত হাঁড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে এঁড়ে গরু দিয়ে প্রজনন ব্যবসা করছিল। যা আয় হতো এ দিয়েই কোন রকমে চলতো শাহজাহান আলরি পরিবার। কিন্তু বিধিঁবাম,সহ্য হয়নি লুটেরা দলের সদস্যদের চোখে। নিমিষেই স্বপ্ন ভঙ্গ করে দিয়ে তছনছ করে দিয়েছে শাহজাহান আলরি পরিবারকে।

 গত ২৬ জুলাই আন্ত:জেলা ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য ও হত্যা মামলার যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামী আজদার ও রেজাউল করিম সহ প্রায় ৮/৯ জনের একদল ডাকাত হানা দেয় শাহজাহান আলীর ভাড়া বাড়িতে। একটি ট্রাক নিয়ে এসে শাজাহান আলীর বাড়িতে ওই দিন রাত ২টার দিকে ৩টি গরু ও ১টি ছাগল ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শাহজাহান আলী তাদেরকে বাধা দিলে ডাকাতদল তার দুই হাতের বাহুতে ছুরিকাঘাত করার এক পর্যায়ে গলায় গামছা পেছিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। স্বামীকে বাচাঁতে স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও গুরুতর আহত করে তিনটি এঁড়ে গরু ও একটি ছাগল(পাঠা) নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় গত ২৮ জুলাই শেরপুর থানায় মামলা দায়ের হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বিভিন্ন প্রযুক্তি ও সোর্স ব্যবহার করে ডাকাত দলের অবস্থান নিশ্চিত করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবীর, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমান গনিসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর সোমবার রাত ২ টার দিকে নাটোরের বনপাড়া থেকে কুখ্যাত ডাকাত আজদার আলী ও তেবাড়ীয়া হাট এলাকা থেকে রেজাউল করিমকে আটক করে শেরপুর থানায় নিয়ে আসে।
গ্রেফতারকৃত আজদার আলী রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বলরামপুর গ্রামের মৃত কমেজ উদ্দিনে ছেলে ও  রেজাউল করিম নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রনসিবাড়ী গ্রামের মৃত জাম্মাতের ছেলে। বর্তমানে রেজাউল নাটোরের বাগাতিপাড়ার গালিমপুর গ্রামে বসবাস করছে।

গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিকভাবে হত্যা ও ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। আজদারের বিরুদ্ধে নাটোর জেলার সিংড়া থানা ও রাজশাহীর বাঘা থানায় হত্যা সহ একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা ১৬ বছর জেল খেটে ২০১৭ সালে ছাড়া পায়। ডাকাতি মামলায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।  

এ প্রসঙ্গে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।


এবিএন/শহিদুল ইসলাম শাওন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ