বেড়ায় জেলের জালে ধরা পড়লো ১০ মণ ওজনের শুশক

পাবনার বেড়ার হুড়াসাগরে জেলের জালে আটকা পড়ে ধরা পড়লো ১০ মণ ওজনের বাংলাদেশসহ বিশ্বে বিপন্ন স্বাদু পানির গাঁঙ্গেস ডলফিন বা শুশক।
  
আজ মঙ্গলবার বেড়া সিএন্ডবি মাছের পাইকারি বাজারে গোপনীয়ভাবে বিক্রি হলো মৃতপ্রায় ৪০০ কেজি বা ১০ মণ ওজনের প্রাপ্তবয়স্ক একটি শুশক। দ্রুতার সাথে বিক্রি এবং ততোধিক দ্রুতায় শুশকটি নিয়ে চলে যায় ক্রেতা। 

নাম প্রকাশ না করার প্রতিশ্রুতিতে জেলে জানান, প্রতিদিনের মত বড় মাছ ধরার জন্য বেড়ার হুড়াসাগর নদীতে রাতে ফাঁস জাল (বড় ফাঁসের কারেন্ট জাল) পেতে রাখি, ভোর রাতে জাল তুলতে গিয়ে দেখি জালে বিশাল আকৃতির একটি মাছ ধরা পড়েছে জালে মাছটি পেঁচিয়ে আছে। প্রথমদিকে বড় আকারের বাঘাইড় মাছ ধরা পড়েছে মনে করেছিলাম, কিন্তু জাল তোলার সময় দেখলাম মাছ নয় বিশাল আকৃতির একটি শুশক বা শুশু। কয়েকজন জেলের সহযোগিতায় নদীর তীরে জালসহ শুশকটি নিয়ে এসে জাল থেকে মৃতপ্রায় শুশুটি ছাড়িয়ে নিয়ে সিএন্ডবি পাইকারি মাছের বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে এসেছি এবং জনৈক ক্রেতার কাছে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেই।

জেলের কাছে শুশু বা শুশক ধরা, মারা ও বেচাকেনা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ এটা জানে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধরা এবং বেচা নিষেধ তা জানি তবে জালে আটকা পড়েছে এতে আমি কি করতে পারি, আমি তো আলাদাভাবে শুশু মারিনি। শুশু নদীতে থাকলেই বা কি আর না থাকলেই বা কি ? মানুষের তো কোন উপকারে লাগে না।

৬ হাজার টাকা দিয়ে শুশক ক্রেতা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, শুশকের মাংস সচরাচর কেউ খায় না এবং শুশক খাওয়ার জন্য কেউ কেনেনা। শুশকের তেল অনেক দামি, কবিরাজী ও নদীতে মাছ ধরার জন্য শুশক থেকে তৈরী তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। 

এটা কোথায় বিক্রি করবে জানতে চাইলে সে জানায়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় শুশক কেনার মহাজন আছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শুশক দিয়ে তেল তৈরী করে এবং বাজারে প্রতি কেজি শুশক তেল কমবেশি ১ হাজার টাকায় দরে বিক্রি হয়।

বিপন্ন এই স্তন্যপায়ী জলজ প্রাণী শুশককে বিলুপ্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে নদীতে সার্বক্ষণিক নজরদারি ও কঠিনভাবে আইনের প্রয়োগ করা প্রয়োজন।

জলজ ইকোসিস্টেম রক্ষা করতে হলে উপকারী প্রাণী শুশককে রক্ষা করতে হবে।

এবিএন/নির্মল সরকার/গালিব/জসিম