আজকের শিরোনাম :

তিতাসের ৯ইউপি’র ৪টিতেই নেই স্থায়ী কোনো ভবন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:১৮

ইউনিয়ন পরিষদ তৃণমূল জনসাধারনের সবচেয়ে কাছের ও অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হলেও কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের ৪টিতেই নেই নিজস্ব কোনো ভবন। এসব পরিষদের দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে দোকান ঘরে প্রাইমারী স্কুলে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় উপজেলার ১নং সাতানী, ৫নং কলাকান্দি, ৬নং ভিটিকান্দি ও ৭ নং নারান্দিয়া ইউনিয়নসহ কোনটাতেই নেই কোন নিজস্ব ভবন। ফলে যখন যিনি চেয়ারম্যান হচ্ছেন তার সুবিধা মতো জায়গায় দোকানঘর ও স্কুলেই চলছে পরিষদের দাপ্তরিক কার্যক্রম।

এসকল ইউনিয়নের স্থানীয় জনসাধারনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, মূলত ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা আবার কোথাও ভূমির ব্যবস্থা হলেও ভূমির অবস্থান নিয়ে চেয়ারম্যান ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মতবিরোধের কারনে ঝুলে আছে ভবন নির্মাণ কার্যক্রম।

১নং সাতানী ইউপির চেয়ারম্যান মো. শামসুল হক সরকার জানান, ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা হওয়ার পর প্রায় ২০ বছর ধরে অস্থায়ী কার্যালয়ে চলছে কার্যক্রম। তবে আমার পূর্বতন চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ধন মিয়ার সময়ে কৃষ্ণপুরের একটি স্থানে ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র হয়েছিল এবং ঠিকাদার কাজ শুরু করার জন্য নির্মাণ সামগ্রীও এনেছিল কন্তিু নির্ধারিত স্থান নিয়ে সাতানী গ্রামবাসীর আপত্তির মুখে নির্মাণকাজ স্থগিত হয়। বর্তমানে উচ্চ আদলতে স্থান নির্ধারনের বিষয়টি বিচারাধীন আছে।আমি ইতি মধ্যে আমাদের এমপি মহোদয় ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে সাতানী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের বিষয়টি াবহিত করেছি,ওনারাকে আমাকে আসস্ত করেছেন খুব দ্রুত ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া করবেন।

৫নং কলাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাবিবুল্লাহ বাহার জানান, ১৯৯২ সালে উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের একাংশ নিয়ে কলাকান্দি ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এখানে কোন স্থায়ী ভবন নির্মাণ হয়নি। তবে আমি নির্বাচিত হওয়ার পর আমার নিজ গ্রাম হারাইকান্দিবাসীর আর্থিক ও সার্বিক সহযোগীতায় জনসাধানের ভোগান্তি লাঘবের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি ৫নং কলাকানিাদ ইউনিয়ন পরিষদের নামে ২৫ শতক জমি ক্রয় করেছি। আশাকরি  কোন ধরনের সমস্যা না হলে আমাদের এমপি মহোদয় ও উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রচেষ্টায়  স্থায়ী ভবন নির্মাণকাজ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

৬নং ভিটিকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লা জানান, পুরাতন ভবনটি আনুমানিক ৯০এর দশকে গোমতী নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার পর থেকেই আর কোন ভবন নির্মাণ হয়নি। বর্তমানে মানিককান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অস্থায়ীভাবে কার্যক্রম চলছে। তবে আমি ইউনিয়ন পরিষদের নামে ২৫ শতক ভুমি দিয়েছি এখন ভবন নির্মানের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। এদিকে স্থানীয়রা জানায় মূলত স্থান নির্ধারণ নিয়ে গোমতী নদীর উত্তর পাড়ের ও দক্ষিণ পাড়ের লোকজনের মতপার্থক্যের কারনেই ভবন নির্মাণ সম্ভব হচ্ছেনা।

অপরদিকে ৭নং নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইঞ্জি. সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, ওই ইউপির নিজস্ব ভবন থাকলেও ১৯৯২ সালে ইউনিয়নের একাংশ নিয়ে জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন গঠিত হওয়ার পর ভবনটি জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের আওতায় চলে যায়,যার ফলে নারান্দিয়া ইউনিয়নে কোনো স্থায়ী ভবন নির্মাণ হয়নি। আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় আসমানীয়া বাজারে ২৫শতক ভূমি ক্রয় করি এবং ভবন নির্মাণের জন্য  জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছি, বিগত দিনে আমাদের দলীয় এমপি না থাকায় ভবন নির্মাণের অগ্রগতি হয়নি।বর্তমানে আমাদে দলীয় এমপি সেলিমা আহমাদ মেরী এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া হবে বলে আমি আশাবাদী।
 
এই বিষয়ে তিতাস উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাম্মৎ রাশেদা আখতার বলেন যেসব ইউপিতে নিজস্ব ভবন নেই ওইসব ইউপিতে যেন দ্রুত স্থায়ী ভবন নির্মাণ করা যায় তার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপসহ স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে খুব সহসাই আমি কথা বলবো এবং ভবন নির্মাণে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করবো। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন সরকার বলেন সম্প্রতি এমপি মহোদয়ের সাথে এবিষয়ে আলোচনা করেছি, এমপি মহোদয় আমাকে আশস্ত করেছেন,আশা করি ইউনিয়ন পরিষদ গুলোর ভূমি জটিলতা সমাধান করে খুব দ্রুত ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া করতে পারবো ইনশাল্লাহ।


এবিএন/কবির হোসেন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ