আজকের শিরোনাম :

এসিল্যান্ড প্রত্যাহার, চাকরি পাচ্ছেন সেই মুক্তিযোদ্ধার ছেলে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০১৯, ১৫:০৪

দিনাজপুরের মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের সম্মানহানি ও তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় দিনাজপুর সদর উপজেলার এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার-ভূমি) মো. আরিফুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ (প্রত্যাহার) করা হয়েছে। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার এস এম তরিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে জানা গেছে, এসিল্যান্ডের কাছে অপমানিত হয়ে রাগে-দু:খে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন হওয়া দিনাজপুরের সেই মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইলের হোসেনের ছেলের চাকরি হচ্ছে।

আজ সোমবার সকালে মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের কবর জিয়ারত করে তার ছেলেকে চাকরি দেয়ার ঘোষণা দেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। এ সময় মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নূর ইসলামকে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম হাসপাতালে চাকরি দেয়ার কথা জানান তিনি। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার এসএম তরিকুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি জিপ গাড়ি উপহার দিয়েছেন দিনাজপুর এম আবদুর রহিম হাসপাতালে। কয়েক দিনের মধ্যেই গাড়িটি হাসপাতালে আসবে। সে গাড়িটিই চালাবেন নূর ইসলাম।

দিনাজপুর সদর উপজেলার যোগীবাড়ি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন ছেলেকে অপমান করে চাকরি কেড়ে নেয়ায় ক্ষোভে-দুঃখে মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করার কথা বলে যান। তার অসিয়ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই তাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। মুক্তিযোদ্ধার ছেলে অসম্মান করা অ্যাসিল্যান্ডের বিচারের দাবি ওঠে। এমতাবস্থায় আজ সকালে তাকে প্রত্যাহার করা হলো।

এর আগে রবিবার (২৭ অক্টোবর) মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মানের ঘটনার প্রতিবাদে দিনাজপুর সদর এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) আরিফুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত করার ঘোষণা ও দিনাজপুরের ডিসিকে ওএসটি করার দাবি জানিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আকবর আলী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের ওপর অন্যায় অত্যাচার করা হয়েছে। তাকে দিয়ে সুইপারের মতো কাজ করানো হয়েছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা কেন নিতে চাননি? কারণ, জেলা প্রশাসক তার সঙ্গে দেখা করেননি। এটি চাট্টিখানি কথা নয়। মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, ইসমাইল হোসেন মনে আঘাত পেয়েছেন এবং পরে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। আমরা এর ন্যায্যবিচার দাবি করছি এবং ডিসি ও এসিল্যান্ডকে পদচ্যুত করার দাবি রাখছি।’

উল্লেখ্য, ছেলেকে চাকরিচ্যুত করার ক্ষোভে দাফনের সময় রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চাননি অভিমানী মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন। মৃত্যুর দুই দিন আগে নিজের ক্ষোভ-দুঃখের কথাগুলো লিখে রেখে যান স্বজনদের কাছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ১১টায় মারা গেলে পরদিন বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ইসমাইল হোসেনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করা হয়। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা শেষ বিদায় নেন প্রশাসনের স্যালুট ও বিউগলের করুণ সুর ছাড়াই। এ ঘটনায় বিভাগীয় কমিশনার গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার (২৬ অক্টোবর) মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে এসে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে সরকার সচেতন। তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নূর ইসলাম।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ