আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদী ভাঙ্গনে স্কুলসহ বসতবাড়ী বিলীন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০১৯, ১৪:১৫ | আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০১৯, ১৪:১৭
ফরিদপুরের মধুমতির ভাঙ্গনে আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাঁচুরিয়া, গোপালপুর ও টগরবন্দ ইউনিয়নের তিনটি স্কুল, একটি মাদ্রাসা, মসজিদ, ঈদগাহ, কবরস্থান, পাকা সড়ক, বসতবাড়ীসহ নদীর গর্ভে চলে গেছে একটি গুচ্ছ গ্রাম। গত ১৫ দিনে এই এলাকার ৩ শতাধিক পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মধুমতির ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক স্থাপনা।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনাম হাসান শিপন জানান তার ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে দুই কিলোমিটার জুড়ে নদীর এই ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
তিনি জানান শিখাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাল, দারুল সালাম দাখিল মাদ্রাসা, একটি মসজিদ, ও বড় গোরস্তান (কবরস্থান) নদীর গর্ভে চলে গেছে। এ ছাড়াও এই ইউনিয়নের একটি গুচ্ছ গ্রাম ও আশ্রয়ন প্রকল্পের ৬৫টি বাড়ী নদীতে চলে গেছে। আংশিক ভাঙ্গনের স্বীকার হয়েছে শিকারপুর সড়ক ও চরডাঙ্গা-চরআজমপুর সদড়টি।
এ দিকে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১১৮টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ওই চেয়ারম্যান।
উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হাসান জানান মধুমতি নদী বাজড়া গ্রামে বেশি পরিমাণ ভাঙছে। তিনি বলেন বাজড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ নদীর গর্ভে চলে গেছে। এ এলাকার অর্ধশত বসতবাড়ী অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন ভাঙ্গনে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া ও শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ করার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমার সরদার জানান দক্ষিণ পাঁচুড়িয়া পুরো গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে, পশ্চিম চর-নারানদিয়া গ্রামের প্রাইমারী সরকারি স্কুল ভবন থেকে মাত্র ২০ হাত দূরে অবস্থান করছে নদী যে কোন সময় ভেঙে যাবে বিদ্যালয়টি, উত্তর চর-নারানদিয়া গ্রামের কয়েকশ বাড়ীঘর, ফসলি জমি, বাঁশতলা বাজার থেকে বোয়ালমারী উপজেলার যাতায়াতের পাকা সড়কের তিন কিলোমিটার নদীগর্ভে চলে গেছে। দক্ষিণ চর-নারানদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পশ্চিম চর-নারানদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাব খাতুন জানান আমার বিদ্যালটি চরম ঝুঁকিতে রয়েছে, নদী থেকে ২০ হাত দূরে স্কুলের ভবন, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ঠিক মতো স্কুলে পাঠাচ্ছে না । এ দিকে ভাঙন কবলিত এলাকার একাধিক মানুষ অভিযোগ করে বলেন পাউবোর নিযুক্ত ঠিকাদার কোম্পানি নিলয় ট্রেডাস ঠিক-ঠাক বালুর বস্তা ফেলছে না, মাঝে মাঝে কাজ করে আবার থেমে যায়। ঠিকাদারা সঠিক কাজ করলে হয়তো কিছু সম্পদ রক্ষা করা যেতো। আলফাডাঙ্গা উপজেলার সহকারি কমিশনার ভূমি আসাদুজ্জামান ভাঙন কবলিত মানুষের পাশে দাড়ানো কথা জানিয়ে বলেন “প্রাথমিকভাবে ভাঙ্গনরোধে পাউবোর মাধ্যমে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে এরই মধ্যে ২২৬টি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের মাঝে সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে, আরো সহায়তা দেওয়ার তালিকা তৈরী করা হচ্ছে।” ভাঙ্গনকবলিত বিশ গ্রামে মানুষের অসয়াত্ত্বের কথা উল্লেখ করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহিদ হাসান বলেন “দ্বিতীয় দফায় মধুমতির পানি বৃদ্ধির ফলে এ উপজেলা তিনটি ইউনিয়নে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তিনি বলেন ভাঙ্গনকবলিত মানুষগুলো অসহায়ের মতো বসতবাড়ী সরিয়ে নিচ্ছে। তিনি এই ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষে দৃষ্টি কামনা করেন।” এই উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের বাঁশতলা সড়কের অধিকাংশ এবং টগরবন্দ এলাকার দুইটি পাকা সড়কের অংশিক নদীর গর্ভে চলে গেছে। ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমাদ বলেন নদীতে প্রচুর স্রোত, এর মধ্যে জরুরী কাজ করা কঠিন। স্রোত না কমলে কাজ করা যাবে না। তিনি বলেন মধুমতির ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী বাধ করতে ব্যয় হবে প্রায় তিনশ কোটি টাকা। কিন্তু প্রয়োজন মতো অর্থ বরাদ্দ আমরা পাচ্ছি না। এটাই সমস্যা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান “জেলার পদ্মা, মধুমতি ও আড়িয়াল খা ভাঙ্গন শুরু হয়েছে, এই ভাঙ্গনরোধে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু হয়েছে, তবে আগামী শুকনো মৌসুমে স্থায়ীভাবে যাতে কাজ করা যায় সে বিষয়ে চেষ্টা চলছে।” এবিএন/কে এম রুবেল/গালিব/জসিম
পশ্চিম চর-নারানদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাব খাতুন জানান আমার বিদ্যালটি চরম ঝুঁকিতে রয়েছে, নদী থেকে ২০ হাত দূরে স্কুলের ভবন, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ঠিক মতো স্কুলে পাঠাচ্ছে না । এ দিকে ভাঙন কবলিত এলাকার একাধিক মানুষ অভিযোগ করে বলেন পাউবোর নিযুক্ত ঠিকাদার কোম্পানি নিলয় ট্রেডাস ঠিক-ঠাক বালুর বস্তা ফেলছে না, মাঝে মাঝে কাজ করে আবার থেমে যায়। ঠিকাদারা সঠিক কাজ করলে হয়তো কিছু সম্পদ রক্ষা করা যেতো। আলফাডাঙ্গা উপজেলার সহকারি কমিশনার ভূমি আসাদুজ্জামান ভাঙন কবলিত মানুষের পাশে দাড়ানো কথা জানিয়ে বলেন “প্রাথমিকভাবে ভাঙ্গনরোধে পাউবোর মাধ্যমে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে এরই মধ্যে ২২৬টি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের মাঝে সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে, আরো সহায়তা দেওয়ার তালিকা তৈরী করা হচ্ছে।” ভাঙ্গনকবলিত বিশ গ্রামে মানুষের অসয়াত্ত্বের কথা উল্লেখ করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহিদ হাসান বলেন “দ্বিতীয় দফায় মধুমতির পানি বৃদ্ধির ফলে এ উপজেলা তিনটি ইউনিয়নে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তিনি বলেন ভাঙ্গনকবলিত মানুষগুলো অসহায়ের মতো বসতবাড়ী সরিয়ে নিচ্ছে। তিনি এই ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষে দৃষ্টি কামনা করেন।” এই উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের বাঁশতলা সড়কের অধিকাংশ এবং টগরবন্দ এলাকার দুইটি পাকা সড়কের অংশিক নদীর গর্ভে চলে গেছে। ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমাদ বলেন নদীতে প্রচুর স্রোত, এর মধ্যে জরুরী কাজ করা কঠিন। স্রোত না কমলে কাজ করা যাবে না। তিনি বলেন মধুমতির ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী বাধ করতে ব্যয় হবে প্রায় তিনশ কোটি টাকা। কিন্তু প্রয়োজন মতো অর্থ বরাদ্দ আমরা পাচ্ছি না। এটাই সমস্যা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান “জেলার পদ্মা, মধুমতি ও আড়িয়াল খা ভাঙ্গন শুরু হয়েছে, এই ভাঙ্গনরোধে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু হয়েছে, তবে আগামী শুকনো মৌসুমে স্থায়ীভাবে যাতে কাজ করা যায় সে বিষয়ে চেষ্টা চলছে।” এবিএন/কে এম রুবেল/গালিব/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ