আজকের শিরোনাম :

দুর্গাপুরে নির্ধারিত সময়ে কাজ না করায় যাত্রীদের ভোগান্তী চরমে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:০৩

জেলার দুর্গাপুরে নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে দুর্গাপুর-কলমাকান্দা সড়কটির। প্রায় ২৪ কিলোমিটার এই সড়কের পুরোটা জুড়েই তৈরি হয়েছে ছোট বড় অসংখ্যা খানাখন্দের ফলে প্রতিদিন ঘটছে র্দূঘটনা। স্থানীয়রা বলছেন চলতি বছরের মে মাসেই সড়কটির কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রভাবশালী হওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরেই কাজ বন্ধ করে রেখেছে তারা। ফলে প্রতিনিয়তই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ রোগী সহ দুই উপজেলা হাজারো মানুষের।

এ নিয়ে আজ শুক্রবার দুর্গাপুর-কলমাকান্দা সড়কে সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, দুই উপজেলায় প্রায় ছয় লাখ মানুষের বসবাস। প্রতিদিন উপজেলা দুইটির লক্ষাধিক মানুষ, যানবাহন থেকে শুরু করে রোগীবাহী গাড়ী সহ সকল কিছুই যাতায়াত করছে এই সড়ক দিয়ে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে সড়কটিতে যাত্রী চাপ বাড়ায় দিন দিন খারাপ হতে থাকে সকড়টি।

সমস্যা সমাধানে বর্তমান সরকার এলজিইডির অওতায় দুর্গাপুর-কলমাকান্দা পর্যন্ত প্রায় ২৪ কিলোমিটার এই সড়কটি নতুন করে সংস্কারের জন্য তিন প্যাকেজে গত বছরের ৫ ই আগস্ট সাড়ে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সংস্কার কাজ শুরু করে। যা চলতি বছরের ৬ই মে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত পাচঁ মাস পার হলেও এখনো সড়কের বেশির অংশে কোনো কাজই করেনি ওই প্রতিষ্ঠান। যে সব স্থানে কাজ করেছে ঐ অংশে শুধু ইট দিয়ে কার্পেটিং করায় সামান্য বৃষ্টির পানি জমে তৈরি হচ্ছে ছোট বড় অসংখ্যা খানাখন্দে।

দুর্গাপুর পৌর শহরের প্রেসক্লাব মোড়, দেশায়ালীপাড়া, এমকেসিএম মোড়, বুরুঙ্গা, চন্ডিগড় ইউনিয়নের মাকরাইল, চন্ডিগড় বাজার, একতা বাজার, সাতাশি, মধুয়াকোণা সহ বিভিন্ন স্থানে যানবাহন তো দূরের কথা মানুষ হেটেই চলাচলেরও কোন সুযোগ নাই। সড়কের বড় বড় খান্নাখন্দে প্রতিদিনই মাল ও যাত্রীবাহী যানবাহন আটকে পড়লে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে যান চলাচল। অনেক সময় বড় কোন যান বাহন বিকল হয়ে গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা একই স্থানে অবস্থান করতে দেখা যায় সকল যান বাহনের।

ফলে এই সড়ক দিয়ে যাতাযাতকারী যাত্রী, রোগীবাহী এম্বুলেন্স, শিক্ষার্থীসহ সকলেই জিম্মি হয়ে পড়ে রাস্তার কাছে। বিগত ঈদ ও পূজায় শহর থেকে দুর্গাপুর বেড়াতে আসা যাত্রীগন পড়েছেন নানা রকম বিড়ম্বনায়। সড়কের বেহাল দশা ও বড় বড় খান্নাখন্দ মানুষের যাতায়াতে নেমে আসে সীমাহীন ভোগান্তি। মাত্র ২৪ কি.মি. এই সড়ক পাড়ি দিতে ঘন্টার পর ঘন্টা পেড়িয়ে গেলেও নির্দিষ্ট গন্তব্যের দেখা পাচ্ছেনা অনেকেই। ফলে এক দিকে যেমন সড়কগুলোতে বাড়ছে যাত্রীর চাপ, অপরদিকে বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তিও।

সাতাশি গ্রামের বাসিন্দা জলিল মিয়া জানায়, আগে এ সড়ক দিয়ে যেমনই চলাচল করা যাইতো, কিন্তু এখন সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে আমাদের চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। একবছর আগে কাজ শুরু করছিলো, কবে যে শেষ হয় জানিনা। বর্তমানে ৮/৯ দিন ধরে কাজ কেনো বন্ধ রাখছে জানি না। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন মানুষও দেখা যায় না এলাকায়। আমরা এই সড়কটির জন্য খুবই কষ্টে আছি।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কর্মকতা আব্দুল আলিম লিটন জানান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ধীরগতির কারণে এখনো সড়ক সংস্কার কাজ শেষ হয়নি। আমরা তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছি যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে দুর্গাপুর-কলমাকান্দা দুই উপজেলা মানুষ সড়কটির জন্য কষ্ট করে আসছেন। সংস্কার কাজ অনেক আগেই শেষ হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে এখনো কাজ হয়নি। এ নিয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। মানুষ যেনো এ সড়ক দিয়ে নির্বিঘেœ চলাচল করতে পাড়ে, এর জন্য আমার ব্যক্তিগত অর্থে বালি ও পাথর দিয়ে ইতোমধ্যে সড়কটির আংশিক সংস্কার কাজ করিয়েছি। আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে এ কাজ শেষ হবে।

এ নিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডলি কনস্ট্রাকশন লিঃ এর সাথে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে, সাংবাদিক জেনে কোন কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি ।


এবিএন/তোবারক হোসেন খোকন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ