আজকের শিরোনাম :

ভাসমান নায়কদের ছবি হয়েছে প্রথম

১৭০ দেশের মধ্যে বিশ্বসেরা চট্টগ্রামের ফটো সাংবাদিক সৌরভ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০১৮, ১৭:৩৬

চট্টগ্রাম, ২১ জুন, এবিনিউজ : মীর হোসেন, চট্টগ্রাম শহরে একটি ভ্যানে চা বিক্রি করে সংসার চালান।  যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে ঘর ভাড়া নেওয়া সম্ভব নয়।  আবার ভ্যানটি চুরি হয়ে গেলে পথে বসতে হবে তাঁকে।  তাই চা বিক্রির ভ্যানই তাঁর বাড়িঘর।  ভ্যানে শুয়েই রাত কাটে তাঁর। শুধু তিনি নন আরও অনেক ভাসমান মানুষের রাত কাটে সড়ক বিভাজক কিংবা গোলচত্বরে।

ভাসমান মানুষের রাত যাপনের চিত্র দিয়েই ১৭০টি দেশের আলোকচিত্রিদের মধ্যে সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের তথা চট্টগ্রামেরই ফটো সাংবাদিক সৌরভ দাশ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘লেনস কালচার স্ট্রিট ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড ২০১৮’ এর সিরিজ ছবি ক্যাটাগরিতে তাঁর ছবি হয়েছে প্রথম।  গত মঙ্গলবার লেনস কালচার তাদের ওয়েবসাইটে এ ফলাফল প্রকাশ করেছে। বিশ্বের আলোকচিত্রি জগতে এই পুরস্কার বেশ সমাদৃত।

সৌরভ দাশ দৈনিক প্রথম আলোর চট্টগ্রাম ব্যুরোতে নিজস্ব আলোকচিত্রি হিসেবে কর্মরত আছেন। চট্টগ্রামসহ দেশের সড়ক মহাসড়কের গোলচত্বরে ভাসমান মানুষের রাতযাপনের শৈল্পিক ছবি তুলে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘লেনস কালচার স্ট্রিট ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড ২০১৮’ এর বিজয়ী নির্বাচিত হওয়ায় সৌরভ দাশ পাচ্ছেন নগদ ৫ হাজার ডলার এবং সনদপত্র। পুরস্কারজয়ী ও নির্বাচিত ৩৯টি ছবি নিয়ে আগামী ২ থেকে ৭ জুলাই ফান্সের আরলেস শহরে অনুষ্ঠিত হবে প্রদর্শনী।

লেনসকালচার এর ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে লেনস কালচার স্ট্রিট আলোকচিত্রিতে পুরস্কার দিয়ে আসছে। এবার প্রতিযোগিতায় ছবি জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গত ১ মে। বিশ্বের ১৭০টি দেশের আলোকচিত্রিরা প্রতিযোগিতায় ছবি জমা দেন। সিরিজ ও একক ছবি-মূলত এ দুই ক্যাটাগরিতেই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জুরি বোর্ড আরও বেশ কিছু ছবিকে নির্বাচিত করেছে। এর মধ্যে পুরস্কার জয়ী ও নির্বাচিত ৩৯টি ছবি নিয়েই অনুষ্ঠিত হবে প্রদর্শনীটি।

সৌরভ দাশ বলেন, বেশ কয়েক মাস ধরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন সড়কে আমি ক্যামেরা নিয়ে দাঁড়িয়েছে। গভীর রাতে সন্তর্পনে তুলেছি ভাসমান নায়কদের ছবি। স্লো শাটার ব্যবহার করায় তাঁদের গল্পগুলো নতুন চেহারা পেয়েছে। শুয়ে থাকা মানুষগুলোকে ঘিরে বয়ে গেছে গতির রেখা। কখনো তা তৈরি করেছে ছোটোবড় বৃত্ত, কখনো ঝরণা ধরার মতো তাঁদের ছুঁয়ে চলে গেছে।

তিনি এ কাজ করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে দৈনিক ডেইলি সানের চট্টগ্রাম ব্যুরোর আলোকচিত্রি রবিন চৌধুরীর কাছে কৃতজ্ঞ । সৌরভ দাশ বলেন, গভীর রাতে এ কাজ করার সময় আমার পাশে ছায়ার মত ছিলেন রবিন চৌধুরী। ও পাশে না থাকলে কাজটা এত সহজ হতো না।

২০০১ সাল থেকেই ছবির জগতের বাসিন্দা সৌরভ দাশ। ছবি তোলা তাঁর নেশা ও পেশা। একজন পুরদস্তুর আলোকচিত্রি সাংবাদিক হলেও সৌরভ দাশের বিশেষ আগ্রহ ডকুমেন্টারি ছবি তৈরিতে। ভালো ছবির জন্য ইতিমধ্যেই বেশ পরিচিত নাম সৌরভ দাশ।

এর আগেও বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার আছে তার অর্জনের ঝুড়িতে। তবে এখানেই থামতে চান না তিনি। আগের চাইতে আরও ভালো ছবি তুলব’এই চিন্তায় যিনি প্রতি সকালেই ঘর থেকে বের হন, তিনি অল্পতে সন্তুষ্ট হবেনই বা কেনো?

 

এবিএন/রাজীব সেন প্রিন্স/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ