আজকের শিরোনাম :

মিয়ানমারে নাগরিকত্বহীন নারী-শিশুসহ ৩০ রোহিঙ্গার কারাদণ্ড

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ১২:২৯

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র ছাড়া আটক হওয়া ৩০ রোহিঙ্গাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির সামরিক আদালত। কর্তৃপক্ষের দাবি, দণ্ডিত এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে নারী এবং ছয় বছর বয়সী এক শিশুও রয়েছেন।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) আইয়ারওয়াদি অঞ্চলের নাগাপুদাউ টাউনশিপ আদালত দেশটির ১৯৪৯ সালের বাসিন্দা রেজিস্ট্রেশন আইনের অধীনে এই দণ্ড প্রদান করেছেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাখাইনের বিভিন্ন এলাকায় অভিযানের মাধ্যমে এসব রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রোহিঙ্গারা রাখাইনে বসবাস করলেও মিয়ানমার তাদের নিজ দেশের নাগরিক বলে স্বীকার করে না। উগ্র বৌদ্ধবাদকে ব্যবহার করে স্থানীয় সেনাবাহিনী ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে স্থাপন করেছে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক অবিশ্বাসের চিহ্ন; এতে ছড়িয়েছে বিদ্বেষ।

১৯৮২ সালে প্রণীত নাগরিকত্ব আইনের অধীনে রোহিঙ্গাদের মূলত পরিচয়হীনতার কাল শুরু হয়। এতে মিয়ানমারে বসবাসকারীদের ‘নাগরিক সহযোগী এবং প্রাকৃতিকায়িত’ পর্যায়ে ভাগ করা হয়। এমনকি দেশটির সেনা সমর্থিত সরকার তাদের প্রাচীন নৃগোষ্ঠী হিসেবেও স্বীকৃতি দেয়নি।

১৮২৩ সালের পর আগতদের সহযোগী আর ১৯৮২ সালে নতুনভাবে দরখাস্তকারীদের প্রাকৃতিকায়িত বলে আখ্যা দেওয়া হয়। সেই আইনের ৪ নম্বর প্রভিশনে শর্ত দেওয়া হয়, যেকোনো জাতিগোষ্ঠী রাষ্ট্রের নাগরিক কি না, তা কোনো আইন কিংবা আদালত নয়; বরং নির্ধারণ করবে সরকারের নীতি-নির্ধারণী সংস্থা ‘কাউন্সিল অব স্টেট’। যেখানে রোহিঙ্গাদের একটি ভাসমান জনগোষ্ঠী হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়।

মিয়ানমার পুলিশের দাবি, গত ২৬ সেপ্টেম্বর পাথেইন-নাগা ইয়োক কাউন সড়কে অভিযান চালিয়ে একটি মিতসুবিসি পাজেরো গাড়ি থেকে এই ৩০ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। যাদের কাছে মিয়ানমারের নাগরিকত্বের কোনো প্রমাণ ছিল না। পুলিশ গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করলে চালক দ্রুত পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে তাদের আদালতে হাজির করা হলে গত শুক্রবার নাগাপুদাউ টাউনশিপ আদালত ১৫ নারী ও ছয় পুরুষ রোহিঙ্গাকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরে এদের সবাইকে পাথেইন কারাগারে পাঠানো হয়। তাছাড়া ১৮ বছরের কম বয়সী তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়েকে নাগহাট আও ইয়োথ ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানোর নির্দেশ দেন সেনা সমর্থিত আদালতটির এই বিচারক।

আরও পড়ুন :- কারফিউয়ের পরও বিক্ষোভে উত্তাল ইরাক, নিহত বেড়ে ৬০

বিতর্কিত রাখাইন প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত উপকূলীয় শহর নাগা ইয়োক কাউন। সেখানকার বাসিন্দাদের মতে, সঙ্ঘবদ্ধ একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে বহু রোহিঙ্গা নৌকা ও সড়কপথ ব্যবহার করে শহরটিতে প্রবেশ করছে। ৩০ রোহিঙ্গাকে আটক করতে দেখা স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সম্ভবত এসব রোহিঙ্গারা রাখাইন ছাড়তে নৌকায় করে এসেছিল। এখানে তাদের নিতে একটি মিনিবাস অপেক্ষা করছিল।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ