আজকের শিরোনাম :

সোনাগাজী হাসপাতালে ফেলে যাওয়া সেই নবজাতকের কুমারী মায়ের বিয়ে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:১৮

দুই বছরের প্রেম তারপর বিয়ের আশ্বাসে শারিরীক সম্পর্কের জড়িয়ে অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়ে কুমারী মাতা বিবি হাজেরা খাতুন। সে সোনাগাজী উপজেলার চরছান্দিয়া ইউনিয়নের নয় নাম্বার ওয়ার্ডের বহদ্দার হাট এলাকার দরিদ্র কৃষক তোফাজ্জল হকের মেয়ে। খালার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার সুবাদে আমিরাবাদ ইউনিয়নের চর সাহাপুর গ্রামের নুরনবী ড্রাইভারের ছেলে শাহাদাত হোসেন বাবুর সাথে তার পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়।

বিয়ের জন্য চাপ দিলে যোগাযোগ বন্ধ করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় প্রেমিক শাহাদাত হোসেন বাবু। উপায়হীন হাজেরা প্রেমিকের প্রতারনায় দিশেহারা হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তার পরিবার বিষয়টি অবগত হয়। গর্ভের সন্তানের বয়স বাড়ার পর সামজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়ার আশংকায় হাজেরা লোকলজ্জার ভয়ে স্বেচ্ছায় ঘর বন্দি হয়ে যায়।

 গত ২৩ সেপ্টেবর হাজেরা নিজ বাড়িতে কন্যা সন্তান প্রশব করেন। দুই দিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে হাজেরা নবজাতক সন্তান কে কৌশলে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দোতালার সিড়িতে ফেলে পালিয়ে যায়।

 ওই দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সহায়’ এর মাধ্যমে চিকিৎসার জন্য ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরন করেন। শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে তাকে সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক মঞ্জিলা আক্তার মিমি ফেনীর জেডইউ মডেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন থেকে শিশুটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

কয়েক দিন চেষ্টার পর সোনাগাজীর স্থানীয় সংবাদ কর্মী সমকাল প্রতিনিধি আবুল হোসেন রিপন,আমিরাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আইয়ুব নবী ফরহাদের সহায়তায় মঞ্জিলা আক্তার মিমি নবজাতকের মায়ের সন্ধান পান। তার জবানিতে নবজাতকের বাবার পরিচয় উম্মেচিত হয়। তাদের প্রচেষ্টায় অনেক দেনদরবারের পর উভয় পরিবার কুমারি মাতার সাথে তার প্রেমিকের বিয়ে দিতে সম্মত হয়।

গতকাল বুধবার(২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সোনাগাজী পৌরসভার একটি রেস্টুরেন্টে উভয় পরিবারের সদস্য,সমাজের গন্যমান্য ব্যাক্তি,স্থানীয় সংবাদ কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সদস্যদের উপস্থিতিতে সাড়ে তিন লক্ষ টাকার দেনমোহর ধার্য করে তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি করা হয়।

এসময় ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মডেল থানা মসজিদের ঈমাম তাদের বিয়ে পড়ান। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি নতুন কনে হাজেরার সাজসজ্জা সহ আনুষাঙ্গিক ব্যয় বহন করেন । সন্তানের পিতৃত্ব পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর একদিকে হাজেরার মুখে স্মিত হাসি অপর দিকে খুশি উপস্থিত সবাই। তারপর নতুন বর কনেকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসাধীন সন্তানের দায়িত্ব তাদের কাছে তুলে দেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সমন্বয়ক মঞ্জিলা আক্তার মিমি।
 

এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ