আজকের শিরোনাম :

ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা কেন্দ্রের দাবি

সুন্দরবনে চিকিৎসার অভাবে এক জেলের মৃত্যু

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৭

সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জেলে সাহেব আলী ফকির (৪২)। তাদের নৌকায় কোনো ওষুধপত্র ছিলোনা। গহীন বনে চিকিৎসারও কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রায় ২০ ঘন্টা পথ পাড়ি দিয়ে আসার পথেই তার মৃত্যু হয়। নিহত জেলে শরণখোলা উপজেলার বকুলতলা গ্রামের হেমায়েত ফকিরের ছেলে।

আজ রবিবার দুপুর ১২টার দিকে শরণখোলা রেঞ্জ অফিসে পৌঁছানোর পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে বনবিভাগ। লোকালয় থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দুরে দুর্গম ছাপড়াখালীর চরে পাঁচ দিন আগে মাছ ধরতে যান তারা চার জন জেলে।

নিহতের পরিবার, জেলে ও মৎস্যজীবিরা অভিযোগ করে জানান, জীবন-জীবিকার তাগিদে ঝুকি নিয়ে জেলে ও অন্যান্য পেশাজীবিরা গহীন সুন্দরবনে যায়। সেখানে গিয়ে অনেক সময় হিংশ্র জীবজন্তুর আক্রমনের শিকার হতে হয় তাদের। এ ছাড়া বিভিন্ন কারনে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু তাদের চিকিৎসার জন্য বনবিভাগের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ এই পেশাজীবিদের মাধ্যমে সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করছে। সুন্দরবনে ভ্রাম্যমান চিকিৎসা কেন্দ্র এবং রোগী বহনের দ্রুত গতিসম্পন্ন নৌযান থাকলে আজ সাহেব আলীর মরতে হতোনা।

নিহত জেলের মহাজন মৎস্য ব্যবসায়ী মো. খলিল হাওলাদার জানান, শরণখোলা স্টেশন থেকে গত ১০ সেপ্টেম্বর পাস নিয়ে তার নৌকার চার জেলে বনের ছাপড়াখালী এলাকায় মাছ ধরতে যায়। নদীতে চরপাটা জাল পাতার সময় সাহেব আলী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় সঙ্গী জেলেরা দ্রুত তাকে নৌকায় তুলে বাড়িতে আনার পথে তার মৃত্যু হয়। তিনি সুন্দববনে ভ্রাম্যমান চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন ও রোগী বহনের দ্রুত গতির নৌযান দেওয়ার দাবি জানান।

বকুলতলা ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বর দেলোয়ার হোসেন খলিল জানান, নিহত জেলের চার মেয়ে ও এক প্রতিবন্ধী ছেলে রয়েছে। অন্যের নৌকায় জেলে হিসেবে সুন্দরবনে মাছ ধরে সংসার চলতো হতদরিদ্র সাহেব আলীর। একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীর মৃত্যুতে সন্তানদের নিয়ে স্ত্রী চরম সংকটে পড়েছেন।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের সহকারী বনসংরক্ষক (এসসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, নিহত জেলের লাশ দুপুর ১২টার দিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভ্রাম্যমান চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন ও রোগী বহনের দ্রুত গতির নৌযানের বিষয়টি উর্ধ্বতন মহলে জানানো হবে।
 

এবিএন/নজরুল ইসলাম/জসিম/তোহা 

এই বিভাগের আরো সংবাদ