আজকের শিরোনাম :

বগুড়ায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৫৬

বগুড়ার গাবতলী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান সরকার বালিয়াদিঘী ইউনিয়নে ভাতা প্রদানের লক্ষে সম্পন্ন একতরফা-ক্ষমতা বহিভূত-বেআইনীভাবে ভূয়া ও অকার্যকর তালিকা তৈরী করায় ওই তালিকা বাতিল চেয়ে জেলা বগুড়ার ১ম যুগ্ম জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেন বালিয়াদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন ভাতা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান। 

মামলা সূত্র জানায় বালিয়াদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান অত্যন্ত নিষ্টা-অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা এবং সততা সহিত সরকার প্রদত্ত সকল ভাতা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। কিন্তু ২০১৮-১৯ অর্থবছরের গত ২৭ জানুয়ারি বালিয়াদিঘী ইউপিতে (৮২টি বয়স্ক ভাতা, ৩০ বিধবা ও ২৭ অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা) মোট ১শ ৩৯টি ভাতা প্রদানে জন্য তালিকা চেয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা একটি পত্র প্রদান করেন। 

এ বরাদ্দ পত্র মতে বালিয়াদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান পরিপত্রের ১৬ (২) ধারা বিধান মতে সকল ভাতা কমিটি গঠন করে প্রতিটি গ্রামে-৯টি ওয়ার্র্ডে ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মিটিং এর মাধ্যমে রেজুলেশন করে ১শ ৩৯টি ভাতা তালিকা তৈরী করে গত ১৩ মে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের জমা দেন। উক্ত ভাতা তালিকা উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সুপারভাইজার আমিনুল ইসলাম গ্রহণ করেন। 

এরপর ওই তালিকাকে কোনরুপ গুরুত্ব না দিয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান তিনি তাঁর ব্যক্তিগত লোকদিয়ে সর্ম্পন্ন অন্যায়, অবৈধ, এখতিয়ারবিহীন, একতরফা ও ক্ষমতা বহিভূতভাবে কোন জরিপ না করে বা কাহারো কোন মতামত না নিয়ে এমনকি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বয়স্ককে গুরুত্ব না দিয়ে বয়স্ক ভাতা, বিধবা না হওয়া সত্ত্বেও বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী না হলেও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানের জন্য ভাতা তালিকা তৈরী (প্রস্তুত) করেন। 

এ ছাড়াও ওই কর্মকর্তা মাত্র কয়েকটি গ্রামকে প্রাধান্য দিয়ে ১৩৯টি ভাতা তালিকা তৈরী করেন। ৩নং ওয়ার্ড থেকে ৪৬ জনকে ভাতা তালিকায় রাখা হয়। কিন্তু ২নং ওয়ার্ডে ২ হাজার লোক বসবাস করলেও কেউ এই ভাতা তালিকায় নাম লেখাতে পারেনি। ফলে ইউনিয়নের হত-দারিদ্র ও ভাতা বঞ্চিত মানুষগুলো হতভম্ভ ও হতবাক হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদ সভা ও মিছিল করে আসছে। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ইউনিয়নের ভাতা কমিটির সভাপতি হওয়ায় ওই ইউনিয়নের ভাতা প্রদানের তালিকা করার ক্ষমতা বা এখতিয়ার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাই মর্মে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। 

এরপর সাধারন মানুষের ন্যায্যদাবি প্রেক্ষিতে বালিয়াদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বিবাদী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মোকদ্দমা নং ২০৪/১৯। বাদী প্রার্থনা মতে মোকদ্দমা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিবাদী বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আদেশ চাইলে বিজ্ঞ আদালত ১০ দিনের মধ্যে বিবাদীকে জবাব দাখিলের জন্য কারন দর্শানো নোটিশ প্রদান করে আদেশ দেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জানান গাবতলী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান সরকার সম্পন্ন অবৈধভাবে ও অর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি ও ক্ষমতা অপব্যবহার করে ভাতা তালিকা তৈরী করেছেন। এতে করে ইউনিয়নের অসহায় ও হতদারিদ্র-ভাতা পাওয়া মত যোগ্যসম্পন্ন দুঃস্থ মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। তিনি এই অবৈধভাবে তৈরী করা ভাতা তালিকা বাতিলের দাবি জানান।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান সরকার জানান ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট থেকে ভাতা তালিকা বিষয়ে কোন সুপারিশ না গ্রহণ করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে হয়রানী করার জন্য আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা করাটা যুক্তিসংগত হয়নি। 

তিনি আরো জানান ভাতা তালিকা ওয়ার্ড ভিক্তিক হয় না বরং ইউনিয়ন ভিক্তিক হয়ে থাকে। 

এবিএন/আল আমিন মন্ডল/গালিব/জসিম


 

এই বিভাগের আরো সংবাদ