আজকের শিরোনাম :

বেড়ায় ধুমধামে চলছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৫৭

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গাপূজা। দেশের হিন্দু ধর্মালম্বী জনগোষ্ঠি দেবী দুর্গাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। 

সারা দেশের ন্যায় পাবনার বেড়া উপজেলার হিন্দু ধর্মালম্বীরাও নিজেদের প্রস্তুত করছে তাদের আরাধ্য দেবী, মা দুর্গাকে তাদের অন্তরের ভালোবাসার  শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের জন্য।

উপজেলা সদর ছাড়াও গ্রাম গঞ্জে ইতি মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে, প্রতিমা ও পূজা মন্ডপ তৈরীর কাজ। স্থায়ী পূজামন্ডপগুলোতে মেরামতসহ রঙের কাজ চলছে। প্রায় সব মন্দিরে প্রতিমা তৈরীর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কোথাও কোথাও প্রতিমায় একাধিকবার মাটির প্রলেপ দেয়া হয়েছে। মৃৎশিল্পীদের এখন আর দম ফেলার সময় নেই। 

বেড়া উপজেলার ত্রিমোহনী গ্রামের মৃৎশিল্পী শশাঙ্ক পাল, মালধা পাড়া গ্রামের ষষ্ঠি পাল, চরপাড়া মহল্লার বিনয় পাল, পেচাকোলা গ্রামের প্রাণ গোপাল পালসহ আরও কয়েক জন প্রতিমা তৈরীতে বিশেষ পারর্দশী মৃৎশিল্পীর সাথে প্রতিমা তৈরী নিয়ে কথা হয়। 

মৃৎশিল্পী শশাঙ্ক পাল জানায় মূর্তি তৈরীতে ব্যবহৃত সরঞ্জাধির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় মূর্তি তৈরীতে এখন অনেক খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। সে প্রকার ভেদে মূর্তি প্রতি ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা মজুরী নিয়ে থাকে। 

মৃৎ শিল্পী ষষ্ঠি পাল জানায় প্রতিমার পোশাক পরিচ্ছদ যেমন জ¦র্জেটের শাড়ী, হরেক রকমের পুতি, চুমকি ও জরি কাজের লেস, ডাইমন্ড পুতি, গোল্ড চুমকি, সিটি গোল্ডের গহনা এ ধরনের সাজসজ্জা কিনে আনতে ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা টাকা লেগে যায় যা আগে মাটি আর রং দিয়ে তৈরী হতো। 

প্রতিমা শিল্পী বিনয় পাল বলেন প্রতিমার চালি তৈরীতে এখন কর্ক শিট ব্যবহার করে আধুনিকতার বহি:প্রকাশ ঘটছে। কর্ক শিট দিয়ে প্রতিমার চালি তৈরী করতে অনেক বেশি খরচ হচ্ছে।    

শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবে মূর্তি তৈরীতে যেমন প্রতিযোগিতা হয় তেমনি গেট ও প্যান্ডেলের সাজ ও আলোক সজ্জা দুর্গাৎসবকে আরও প্রানবন্ত করে তোলে।  প্যান্ডেল ও গেটের অবকাঠামো তৈরীতে ব্যসÍ সময় পার করছে ডেকরেটর ব্যবসায়ীরা।  পূজা প্যান্ডেল তৈরীর কাজে শ্রমিকরা  সারা দিন কাজ করে যাচ্ছে, বিশ্রাম নেওয়ার কোন সময় নেই। 

ডেকরেটর ব্যাবসায়ী মো. উজ্জল হোসেন বলে এবার আমি বেড়া, সাঁথিয়া, শাহজাদপুর এই ৩ উপজেলায় অনেকগুলো পূজার গেট-প্যান্ডেলের কাজ করছি। গেট-প্যান্ডেলের ধরন অনুযায়ী ২৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে থাকি।  

বেড়া পৌর সভার অর্থায়নে বেড়া বাজার পৌর কালী মন্দিরে দুর্গাপূজার জোর প্র¯তুতি চলছে। মন্দিরকে আর্কষণীয় করে তুলতে পৌর কতৃপক্ষের প্রতিনিধি সার্বক্ষণিক তদারকি করে যাচ্ছে। অঘোষিত সৌর্ন্দয প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে বেড়ার পূজা মন্ডপগুলো। 

উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্র ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বেড়া উপজেলা শাখার সভাপতি ভৃগু রাম হালদার জানান বেড়া উপজেলায় এবার মোট ৫৪টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান বেড়াতে পূর্বেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি বল্লেই চলে। সর্বোপরি প্রশাসন সবসময় সজাগ আছে এবং থাকবে বলেই আমাদের কোন আশঙ্কা বা আতঙ্কের কারন নেই। 

পূজোর সময় আইনশৃঙ্খলার অবস্থা সমন্ধে জানতে চাইলে বেড়া মডেল থানার ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিদ মাহমুদ খান বলেন প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শারদীয় দুর্গাপূজা হিন্দু সম্প্রদায় যেন নির্বিগ্ন ও আনন্দ মুখর পরিবেশে পালন করতে পারে তার জন্য আমরা সর্বাক্ত ব্যাবস্থা গ্রহন করবো। 

প্রত্যেকটি মন্দিরে আনসার বাহিনীর সদস্যসহ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ২৪ ঘন্টা সজাগ ও সর্তক পাহারায় থাকবে ভ্রামমাণ পুলিশ টিমের সর্তক দৃষ্টি এড়িয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর সুযোগ বা নাশকতার কোন আশঙ্খা নেই। বেড়া পৌর এলাকার বাইরের বিশেষ করে গ্রামের পূজো মন্ডপগুলোতে বিশেষ নজরদারি থাকবে। 

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর অমাবস্যার অন্ধকারকে বিদীর্ন করে সূর্যের রক্তিম আভায় ধরণী আলোকিত হওয়ার (ভোর রাত) মুহুর্তে পবিত্র শ্রী শ্রী চন্ডী পাঠের মধ্যদিয়ে আলোয় আলোয় পৃথিবীর অন্ধকারকে দূর করে দিতে দুর্গতি নাশিনী দেবী র্দূগার আহবান করবে মত্যাবাসি। 

৩ অক্টোবর দেবী দুর্গার বোধনএর মধ্য দিয়ে শুরু হবে ৬ দিনব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শ্রীশ্রী শারদীয় দুর্গাপূজা।

এবিএন/নির্মল সরকার/গালিব/জসিম 
 
 
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ