ডোমারে আগুনে ১৮ বসতঘর পুড়ে ছাই
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৫৫
নীলফামারী জেলার ডোমারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই ১৮টি পরিবারের মাথা গোজার ঠাই নেই। জীবনের সব উপার্জন হারিয়ে এখন তারা দিশেহারা। সরকারিভাবে এক বান্ডিল টিন ও ২০ কেজি চাল করে দেওয়া হলেও তা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।
ডোমার উপজেলার হরিনচড়া ইউনিয়নের পশ্চিম হরিনচড়া চাকধাপাড়া গ্রামে গতকাল রবিবার ভোর রাতে জিতেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়ীর চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে মুহুর্তে চারিদিকে ছড়িয়ে পরে। আগুনে ১৮টি পরিবারের ৫৬টি ঘড় মুহুর্তের মধ্যেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
অগ্নিকান্ডে ১৮টি পরিবারের আসবাবপত্র, নগদ টাকা, ধান, চাল, সাইকেল, পশুপাখিসহ প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন। অগ্নিকান্ডে একটি গরু ও ৬টি ছাগল অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়।
স্থানীয় সুজন রায় জানান গতকাল রবিবার ভোররাতে তাদের রান্না ঘড়ের চুলা থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়ে তা মুহুর্তে চারিদিকে ছড়িয়ে পরে। এ সময় আশেপাশের জিতেন্দ্রনাথ রায়, জগদিশ চন্দ্র, লক্ষী কান্ত, বিশ্বনাথ, সত্যেন, জয়দেব, গলিবর্মন, হরিকিশোর, ডালিম, লোকনাথ, সুশীল, সুজন, সুমন, বিমোল, অধির, সুমিত্রা, নির্মল ও রিনার বাড়ীতে আগুন লেগে সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ১৮টি পরিবারের কেউ কোন কিছু বাচাঁতে পারেনি।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুল ইসলাম জানান অগ্নিকান্ডে ১৮টি পরিবারের সব পুড়ে গেছে। বর্তমানে ঐ এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে। ভোররাতে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ডোমার ও নীলফামারী ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট তিনঘন্টা কাজ করার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সঠিক সময়ে ফায়ার সার্ভিস না এলে পুরো গ্রাম আগুনে পুড়ে যেত বলেও তিনি জানিয়েছেন।
সরজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন বাড়ীর সামনে বসে আহাজারি করছে। আগুন তাদের কষ্টের উপার্জিত সবকিছু শেষ করে দিয়েছে বলে তারা জানান। তিলোশ্বরী রানী আগুনে পুরে যাওয়া তার চারটি ঘড়ের দিকে অপলক তাকিয়ে ধেকে জানান আগুন দেখে তিনি আৎকে উঠেন। সেকেন্ডেই তার সবকিছু পুড়ে যায়।
এ সময় ঘড়ে থাকা একলক্ষ টাকা বের করে আনার চেষ্টা করলেও আগুনের তাপে ঘড়ে ঢুকা সম্ভব হয়নি। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন এখন তার পরিবারকে ভিক্ষা করে খেতে হবে। সকালেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. উম্মে ফাতিমা, ডি,আর, ও এমএ হায়াত । ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে এক বান্ডিল ঢেউটিন ও ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দের কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. উম্মে ফাতিমা। তবে ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন তাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা এখন কোনভাবেই পুরন সম্ভব হবেনা। টিন পেলেও ঘড় করার টাকা নেই। সবতো আগুন খেয়ে ফেলেছে। গতকাল রবিবার রাতেই আবার বৃষ্টি হয়েছে এই বৃস্টির মধ্যেই তারা পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে রয়েছেন।
আজ সোমবার সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় বৃষ্টির মধ্যেই তারা আগুনে পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।
এবিএন/মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন/গালিব/জসিম
এবিএন/মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন/গালিব/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ