পীরগঞ্জে ওয়াশ ব্লক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৩:০৫

ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজে নি¤œ মানের ইট এবং খোয়া ব্যবহার করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। 

এ বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ করার পরও কোন কাজ না হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গেয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকতা মেহেদি হাসান বলছেন কাজ করতে গিয়ে মিস্ত্রির অদক্ষতার কারণে একটু আধটু এদিক সেদিক হতেই পারে। এতে ধরার কিছু নেই। 

পীরগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় পীরগঞ্জ উপজেলার জসাইপাড়া, নিয়ামতপুর, কিং দলপতিপুর, ঘুঘুয়া এবং দলপতিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবছর প্রায় ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি করে দ্বিতল ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে। 

ফিরোজ নামে ঠাকুরগাওয়ের এক ঠিকাদার ঐসব বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজ করছেন। এরই মধ্যে জসাইপাড়া এবং নিয়ামতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লকের দ্বিতল ছাদ নির্মাণ শেষে দেওয়াল গাথুনির কাজ চলছে। ঘুঘুয়া একং কিং দলপতিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ব্যাচ ঢালাইয়ের কাজ চলছে আর একটি বিদ্যালয়ে এখনো কাজ শুরুই করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে এরই মধ্যে যে দুটি বিদ্যালয়ে ছাদ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে তাতে নিম্ম মানের ইট ও খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। ছাদে ১০ মিলি রডের পরিবর্তে কোথাও কোথাও ৬ মিলি রড দেওয়া হয়েছে। কলামে রড বান্ডিংয়ে যে পরিমাণ রিং দেওয়ার কথা তা দেওয়া হয়নি। বালু ও খোয়া সাথে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম সিমেন্ট মেশানো হয়েছে। নিয়ামতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিচতলার পশ্চিম পার্শে¦র একটি কলাম বাকা করে উপরে উঠানো হয়েছে। জসাইপাড়ায় যে মাপের কলাম দেওয়ার কথা তার চেয়ে কম মাপের দেওয়া হয়েছে। যে মাপের সেপ্টি ট্যাংক করার কথা দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থে তা কম করা হয়েছে। ছাদ নির্মাণ শেষে এখন দেওয়াল গাথুনির কাজ চলছে। 

এতেও নিম্ম মানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু কিছু ইট এতই খারাপ যে আঙ্গুল দিয়ে ডলা দিলে ঝুরঝুর করে ইটের অংশ খসে পড়ছে। এ সব বিষয়ে বহুবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। 

নিয়ামতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফা বেগম বলেন খারাপ ইট দিয়ে কাজ করা সিমেন্ট কম দেওয়া, পিলার বাকা করে উঠানোসহ বিভিন্ন অসঙ্গতি বিষয়ে অনেকবার তিনি ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারকে বলেছেন। কাজ হয়নি। বিষয়টি তিনি তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। 

ঐ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনোজ জানান বর্তমানে যে ইট দিয়ে গাথুনি করা হচ্ছে তা অত্যন্ত খারাপ। কিছু কিছু ইট মাটির ঢিকার মত। ডলা দিলেই গুড়া হয়ে যাচ্ছে। ঠিকাদারের লোকজন কথা শুনছেন না।

এ বিষয়ে ঠিকাদার ফিরোজ আলম গত সোমবার দুপুরে মুঠোফোনে বলেন অভিযোগের পর নিয়ামতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি গিয়েছিলেন এবং দেওয়ালের কিছু খারাপ ইট নিজে তুলে দিয়েছেন এবং কিছু কেটে বের করার জন্য মিস্ত্রিকে বলেছেন। এাছাড়া আর কোন সমস্যা নেই। নিয়ম মেনেই কাজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গেয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকতা মেহেদি হাসান মুঠোফোনে বলেন ঠিকাদার ভাল কাজ করছেন। সোমবার বিকালে ঠিকাদারকে সাথে নিয়ে তিনি নিয়ামতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। তেমন কোন সমস্যা নেই। হাজার হাজার ইটের মধ্যে কিছুতো খারাপ থাকবেই। তাছাড়া মিস্ত্রির অদক্ষতার কারণে কিছু ত্রুটি হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নির্মল কুমার গোম্বামী বলেন কাজ খারাপ হচ্ছে এমন অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে।
  
এবিএন/বিষ্ণু পদ রায়/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ