আজকের শিরোনাম :

কালিহাতীতে বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষা বাঁধে ভাঙন : হুমকির মুখে বাড়ি ঘর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০১৯, ২০:০০

কালিহাতীর বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব দক্ষিণ প্রান্তে রক্ষা বাঁধে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রায় ১৫০ মিটার এলাকা ইতোমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে সেতু হুমকির কবলে পড়তে পারে। এদিকে কালিহাতী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম রয়েছে ভাঙণের কবলে। নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও তীব্র স্রোতের কারনে এই ভাঙন শুরু হয়েছে। তবে ভাঙন রোধে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি সেতু কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে দেখা যায়,বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গড়িলাবাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ থেকে কাটা তারের বেড়া দিয়ে সীমানা দেওয়া হয়েছে। সেই বেড়ার ভেতরে সেতু রক্ষা বাঁধে বৃহস্পতিবার থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে। শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত সেই ভাঙণ অব্যাহত আছে। নদী গর্বে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ১৫০ মিটার এলাকা । কিন্তু শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত সেতু কর্তৃপক্ষ থেকে ভাঙণ রোধে তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ বঙ্গবন্ধু সেতুর ৬ কিলোমিটার এলাকায় নদী থেকে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও অবাধে বালু উত্তোলন করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার রাজনৈতিক দাপটে প্রশাসনকে বৃদ্ধ আগুল দেখিয়ে যমুনায় বালু উুত্তোলন করে আসছিল বলে এলাকাবাসী জানান।

এতে বঙ্গবন্ধু সেতুর কতিপয় কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে চলে বালু উত্তোলন। বালু উত্তোলনের কারনে যমুনা নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামের শতশত বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে এলাকার মানুষ জান দেবো তবু বালু দেবো এই স্লোগানে কয়েক হাজার মানুষ ১৭ আগষ্ট নদীপাড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। পরে ২১ আগষ্ট ভুক্তভোগীরা বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন।

মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয় গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মেম্বারের নেতৃত্বে নদীর দক্ষিণ পাশে কালিহাতীর সীমানায় বালু উত্তোলন করা হয়ে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও বিবিএ-এর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে সরকার দলীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লগি নেতা ও গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার নেতৃত্বে  বালু উত্তোলন করেন। তাই আমাদের এই অবস্থা।  এতে হুমকির মুখে পড়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু।’
   
এলাকাবাসী বলেন, ‘শুকনা মৌসুমে যখন নদীতে পানি কম থাকে, তখন যদি বিবিএ কাজ করতো তাহলে এই ভাঙন হতো না। শতশত মানুষ বাড়ি ঘর হারিয়ে নিঃস্ব হতো না। এর জন্য ওরাই দায়ি।’  

এবিষয়ে গোহালিয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার বলেন নদী থেকে এক বছর যাবত বালু উত্তোলন করা হয় না। আলীপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বালু উত্তোলনে প্রতিবারে টাকা নিয়ে সহতায় করায় বালু ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলন করা করতো ও বিবিএ যথাযথ পদক্ষেপ নিলে এই ভাঙন রোধ করা সম্ভব হতো।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ইতিমধ্যেই বাঁধের ১০০মিটার এলাকা ধ্বসে গেছে। এতে ৪২ মিটার গভীরতার সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন এই ভাঙণ এলাকা বিবিএর সীমানার মধ্যে। কিন্তু মূল গাইডে ভাঙণ হয়নি।

এবিষয়ে কালিহাতীর ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান বলেন বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে বিবিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করেছে।
 

এবিএন/তারেক আহমেদ/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ