৩৩ লাখ টাকার প্রতারণার রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ২
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০১৯, ০০:২৫
পাবনায় চাঞ্চল্যকর সোয়া ৩৩ লাখ টাকার প্রতারণার রহস্য উদঘাটনসহ প্রতারক চক্রের দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পাবনা পিবিআই।
এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নাটোর জেলার লালপুর থানার পুরাতন ঈশ্বরদী (রিফুজীপাড়া এয়ারপোর্ট মোড়) এলাকার বাবলু রহমানের ছেলে মো. ইমন হোসেন (২৩) ও একই থানার সাদীপুর এলাকার মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে মনজুর রহমান (৩৬)।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাবনার পিবিআই কর্তৃপক্ষ। এর আগে বুধবার (২১ আগস্ট) রাতে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের ওই দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ঈশ্বরদীর ব্যবসায়ী মাহবুব হকের মোবাইল ব্যাংকিং ‘শিওর ক্যাশ’-এর এবং তার রুপালী ব্যাংক লিমিটেড, ঈশ্বরদী শাখার সিসি একাউন্টের দেখাশোনা করতেন। এদের মধ্যে মনজুর রহমান ছিলেন ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজার আর ইমন হোসেন ছিলেন এসআর। এই সুযোগে তারা দুইজন মিলে প্রায় ৩৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ প্রতারণার ঘটনায় ভুক্তভোগী ঈশ্বরদীর মাহবুব হক ঈশ্বরদী থানায় মামলা করলে প্রথমে অভিযোগটি ঈশ্বরদী পুলিশ তদন্ত করে। কিন্তু এতে চক্রের কারও কোনো সন্ধান না মিললে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে মামলার তদন্তভার পাবনার পিবিআইয়ের উপর অর্পণ করা হয়।
পিবিআই সূত্র জানায়, পাবনা পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম মামলাটি তদন্তের নির্দেশনা পেয়ে এসআই সবুজ আলীর উপর তদন্তভার অর্পণ করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সবুজ আলী কিছুদিনের মধ্যেই তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটন করে এ প্রতারণার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদেরকে সনাক্ত করেন।
পরে প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মূল আসামিকে গ্রেফতারের জন্য একটি চৌকস টিম গঠন করা হয় এবং মামলার মূল আসামিকে গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরই অংশ হিসেবে গত ২১ আগস্ট ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
প্রতারণার ঘটনার বিবরণে পাবনার পিবিআই প্রধান তরিকুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুবজ আলী জানান, আসামি মনজুর রহমান মামলার বাদীর সিসি একাউন্ট থেকে বিভিন্ন সময় টাকা উঠিয়ে ধারের টাকা হিসেবে চলতি জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রতি মাসে দুই থেকে তিনবার বিভিন্ন অংকের টাকা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঈশ্বরদীর হীরক ও বদরুলকে প্রদান করতেন। এভাবে মনজুর নিজে ও তার নির্দেশে আসামি ইমন হোসেন হীরককে প্রায় ২০ লাখ টাকা প্রদান করে। এছাড়া মনজুর নিজে বদরুলকে প্রায় ৮ লাখ টাকা প্রদান করেন।
তদন্তেকালে আরও জানা যায়, হীরক ও বদরুল তার বন্ধু মনজুররের নিকট বিভিন্ন অংকের টাকা গ্রহণ করে প্রতি মাসেই তা পরিশোধ করতেন। এ টাকা হতে কিছু টাকা মনজুর মামলার বাদী ব্যবসায়ী মাহবুব হকের সিসি একাউন্টে জমা দেন। কিন্তু আসামি মনজুর তার বন্ধু হীরক ও বদরুলের কাছ থেকে প্রায় ১৮ লাখ টাকা গ্রহণ করলেও বাদীর সিসি একাউন্টে তা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন।
পিবিআই জানায়, দুই প্রতারক দীর্ঘ পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যবসায়ী মাহবুব হকের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাকে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত করেন। তারা তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ব্যবসায়ী মাহবুব হকের মোট ৩৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন।
উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত আসামিরা ঘটনার পর থেকেই কৌশল অবলম্বন করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পলাতক ছিলেন। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং আদালতে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি
এই বিভাগের আরো সংবাদ