দশমিনায় ধানের মূল্য নিম্নগতি: বোরোচাষীরা বিপাকে
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ জুন ২০১৮, ১৭:২৮
দশমিনা (পটুয়াখালী), ১২ জুন, এবিনিউজ: চলতি বাজারে বোরো ধানের মূল্য নিম্নগতি থাকায় পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার কৃষকরা বিপাকে পরেছে। আমনা ধানের বাজার মূল্য কৃষকদের অনুকুলে থাকায় বিগত বছরের চেয়ে এবার বোরো ধান চাষাবাদ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। কৃষকদের চাষকৃত বোরো ধানের ফলন ভাল হওয়ায় তাদের কাঙ্খিত মূল্যে বিক্রি করে পারিবারিক খরচের যোগানসহ বিভিন্ন দায়দেনা পরিশোধ করতে সক্ষম হত। কিন্তু চলতি মৌসুমে বাজার দর অনাঙ্খিতভাবে হ্রাস পাওয়ায় কৃষকরা চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরেছে।
একাধিক কৃষকরা জানান, বিগত বছরের চেয়ে এ বছর উপজেলায় বোরো ধান চাষ অধিকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত আমনামৌসুমে কৃষকদের চাহিদানুযায়ী আমনা ধান উৎপাদন না হওয়া এবং রবিশস্য চাষাবাদের প্রতিকুল পরিবেশ না থাকায় উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা বোরো ধান চাষাবাদের মৌসুমে চাষবাদ করছে। আমনা মৌসুমে আমনা ধান চাষাবাদে জলাবদ্ধতা, অতিবৃষ্টি ও অনাঙ্কিত বন্যাসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে একের পর এক ব্যাপক ফসলহানির ঘটনা ঘটছে। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে কৃষকরা নিঃশ্ব হয়ে পরেছে।
এর ফলে কৃষকদের দূর্ভিস্ব জীবন যাপন করছে। প্রায় প্রতি বছরই ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতা, অতি বৃষ্টি, জোয়ার ভাটার পানির অনুপ্রবেশসহ বিভিন্ন কারনে কৃষকদের ফসলী জমির ফসলহানির ঘটনা ঘটছে। ফসলহানি ঘটলেও ধানের বাজার মূল্য নিম্ন থাকায় কৃষকদের কষ্টার্জিত ফসল উৎপাদনের খরচও পাচ্ছি না। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর ধানের বাজার মূল্য বিগত দিনের চেয়ে বৃদ্ধি থাকায় কৃষকরা আমনা ধানের পর বোরো ধান আবাদ করতে আগ্রহী হয়েছে।
আগ্রহ উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে কৃষকদের প্রতি হেক্টর জমি চাষাবাদের আয় ও ব্যয়ের হিসাব হচ্ছে, প্রতি হেক্টর জমিতে ২৫কেজি ধানের বীজের মূল্য ৮৭৫টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে ২৪কেজি ইউরিয়া সারের মূল্য ৩,৮৪০টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে ১৬০ কেজি টিএসপি সারের মূল্য ৩,৫২০টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে ১২০কেজি এমওপি সারের মূল্য ১,৮০০টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে ৮ কেজি জিপ সারের মূল্য ৮০০ টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে ৮কেজি দস্তা সারের মূল্য ১,৭৬০টাকা, প্রতি হেক্টর চাষ দিয়ে জমি তৈরি করতে ৮,০০০টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে এবং প্রতি হেক্টর জমিতে বীজ ধান লাগানোর জন্য শ্রমিক মজুরী ১২,০০০টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে পানি সেচে ১২,০০০টাকা ও প্রতি হেক্টর জমিতে কীটনাশকসহ অন্যান্য খরচ বাবদ ৫,০০০টাকাসহ সর্বমোট ৫১,৩৫৫টাকা খরচ হচ্ছে।
অনাঙ্কিত কোন দূর্যোগ না হলে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৩৭.৫ মন ধান উৎপাদন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ হিসেবে প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদিত প্রতি মন ধানের বর্তমান বাজার মূল্য ১০০০টাকা হলে ১৩৭.৫মন ধানের মূল্য ১,৩৭,৫০০টাকা। কৃষকদের উৎপাদিত ৫১,৩৫৫টাকা খরচ করে ১,৩৭,৫০০টাকা বিক্রি করলে অবশিষ্ঠ ৮৬,১৪৫টাকা লাভবান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিগত বছরের উক্ত টাকা খরচ করে প্রায় ৯৬,১৪৫টাকা লোকসানে ধান বিক্রি করতে হত। অথচ উক্ত টাকা খরচ চেয়ে মাত্র ৩,৬৪৫ টাকা বেশীতে ধান বিক্রি করেন।
আরজবেগী গ্রামের মৃত: আব্দুল মজিদ মুন্সির ছেলে কৃষক মোঃ সেকান্দার মুন্সি জানান, আমি ৬৬শতাংশ জমিতে এবার বিনা -১০ জাতে উচ্চফলনশীল ধানের চাষাবাদ করে ৩৩মন ধান পেয়েছি। আমার উৎপাদিত ধান মনপ্রতি ৪০০টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে। এতে আমার উৎপাদিত খরচেরচেয়ে মনপ্রতি ১৩০টাকা লোকসান হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার বনি আমিন খাঁন জানান, উপজেলায় বিগত বছরের চেয়ে এ বছর বোরো ধান চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলায় ১৮হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে আমনা ধান চাষাবাদ করা হচ্ছে।
এর মধ্যে চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষাবাদের জন্য আমরা ৩০৮ হেক্টর জমির লক্ষমাত্রা নির্ধারন করেছিলাম। কিন্তু কৃষকরা এতই উদ্ধুত্ত হয়ে প্রায় ১,২৭০ হেক্টক জমিতে হাইব্রিড ও উফশী জাতে বিধান ২৮, বিনা- ৮, বিনা-১০, ব্রিধান- ৪৮, ব্রিধান- ৬৭, ব্রিধান- ২৯, ব্রিধান-৭৪, ব্রিধান ৬২, ব্রিধান- ৬৩ এবং হাইব্রিড জাতে হিরা ও ইস্পাহানি ধান চাষাবাদ করছে। এ বছর প্রায় ১হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। বোরো ও রবিশস্যের আবাদের পরিমান আরো বৃদ্ধি পেয়ে ১৭হাজার ৯শত হেক্টরে দাড়াঁবে।
ইতিমধ্যে আমরা মাত্র ৪৫টি প্রদর্শণী হিসেবে উন্নতজাতে ব্রিধান চাষাবাদ করেছি। এর মধ্যে ১টি প্রদর্শণীতে প্রযুক্তির ড্রামসীডের মাধ্যমে বীজধান বপন করেছি। এ ৪৫টি প্রদর্শণীর বীজ, সার, কীটনাশকসহ বিভিন্ন টেকনিক্যাল সহযোগীতা প্রদান করেছি। তবে চলতি মৌসুমে মাত্র ৬শত হেক্টর জমি অনাবাদি ছিল। আমি ও আমার সহযোগিদের নিয়ে অত্র এলাকার আবাদী জমি ত্রিফসলী জমিতে রুপান্তরিত করার প্রায়াস চালাচ্ছি। ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা যাচ্ছে।
এবিএন/সাইদুর রহমান সাইদ/জসিম/তোহা
একাধিক কৃষকরা জানান, বিগত বছরের চেয়ে এ বছর উপজেলায় বোরো ধান চাষ অধিকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত আমনামৌসুমে কৃষকদের চাহিদানুযায়ী আমনা ধান উৎপাদন না হওয়া এবং রবিশস্য চাষাবাদের প্রতিকুল পরিবেশ না থাকায় উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা বোরো ধান চাষাবাদের মৌসুমে চাষবাদ করছে। আমনা মৌসুমে আমনা ধান চাষাবাদে জলাবদ্ধতা, অতিবৃষ্টি ও অনাঙ্কিত বন্যাসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে একের পর এক ব্যাপক ফসলহানির ঘটনা ঘটছে। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে কৃষকরা নিঃশ্ব হয়ে পরেছে।
এর ফলে কৃষকদের দূর্ভিস্ব জীবন যাপন করছে। প্রায় প্রতি বছরই ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতা, অতি বৃষ্টি, জোয়ার ভাটার পানির অনুপ্রবেশসহ বিভিন্ন কারনে কৃষকদের ফসলী জমির ফসলহানির ঘটনা ঘটছে। ফসলহানি ঘটলেও ধানের বাজার মূল্য নিম্ন থাকায় কৃষকদের কষ্টার্জিত ফসল উৎপাদনের খরচও পাচ্ছি না। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর ধানের বাজার মূল্য বিগত দিনের চেয়ে বৃদ্ধি থাকায় কৃষকরা আমনা ধানের পর বোরো ধান আবাদ করতে আগ্রহী হয়েছে।
আগ্রহ উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে কৃষকদের প্রতি হেক্টর জমি চাষাবাদের আয় ও ব্যয়ের হিসাব হচ্ছে, প্রতি হেক্টর জমিতে ২৫কেজি ধানের বীজের মূল্য ৮৭৫টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে ২৪কেজি ইউরিয়া সারের মূল্য ৩,৮৪০টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে ১৬০ কেজি টিএসপি সারের মূল্য ৩,৫২০টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে ১২০কেজি এমওপি সারের মূল্য ১,৮০০টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে ৮ কেজি জিপ সারের মূল্য ৮০০ টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে ৮কেজি দস্তা সারের মূল্য ১,৭৬০টাকা, প্রতি হেক্টর চাষ দিয়ে জমি তৈরি করতে ৮,০০০টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে এবং প্রতি হেক্টর জমিতে বীজ ধান লাগানোর জন্য শ্রমিক মজুরী ১২,০০০টাকা, প্রতি হেক্টর জমিতে পানি সেচে ১২,০০০টাকা ও প্রতি হেক্টর জমিতে কীটনাশকসহ অন্যান্য খরচ বাবদ ৫,০০০টাকাসহ সর্বমোট ৫১,৩৫৫টাকা খরচ হচ্ছে।
অনাঙ্কিত কোন দূর্যোগ না হলে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৩৭.৫ মন ধান উৎপাদন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ হিসেবে প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদিত প্রতি মন ধানের বর্তমান বাজার মূল্য ১০০০টাকা হলে ১৩৭.৫মন ধানের মূল্য ১,৩৭,৫০০টাকা। কৃষকদের উৎপাদিত ৫১,৩৫৫টাকা খরচ করে ১,৩৭,৫০০টাকা বিক্রি করলে অবশিষ্ঠ ৮৬,১৪৫টাকা লাভবান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিগত বছরের উক্ত টাকা খরচ করে প্রায় ৯৬,১৪৫টাকা লোকসানে ধান বিক্রি করতে হত। অথচ উক্ত টাকা খরচ চেয়ে মাত্র ৩,৬৪৫ টাকা বেশীতে ধান বিক্রি করেন।
আরজবেগী গ্রামের মৃত: আব্দুল মজিদ মুন্সির ছেলে কৃষক মোঃ সেকান্দার মুন্সি জানান, আমি ৬৬শতাংশ জমিতে এবার বিনা -১০ জাতে উচ্চফলনশীল ধানের চাষাবাদ করে ৩৩মন ধান পেয়েছি। আমার উৎপাদিত ধান মনপ্রতি ৪০০টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে। এতে আমার উৎপাদিত খরচেরচেয়ে মনপ্রতি ১৩০টাকা লোকসান হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার বনি আমিন খাঁন জানান, উপজেলায় বিগত বছরের চেয়ে এ বছর বোরো ধান চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলায় ১৮হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে আমনা ধান চাষাবাদ করা হচ্ছে।
এর মধ্যে চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষাবাদের জন্য আমরা ৩০৮ হেক্টর জমির লক্ষমাত্রা নির্ধারন করেছিলাম। কিন্তু কৃষকরা এতই উদ্ধুত্ত হয়ে প্রায় ১,২৭০ হেক্টক জমিতে হাইব্রিড ও উফশী জাতে বিধান ২৮, বিনা- ৮, বিনা-১০, ব্রিধান- ৪৮, ব্রিধান- ৬৭, ব্রিধান- ২৯, ব্রিধান-৭৪, ব্রিধান ৬২, ব্রিধান- ৬৩ এবং হাইব্রিড জাতে হিরা ও ইস্পাহানি ধান চাষাবাদ করছে। এ বছর প্রায় ১হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। বোরো ও রবিশস্যের আবাদের পরিমান আরো বৃদ্ধি পেয়ে ১৭হাজার ৯শত হেক্টরে দাড়াঁবে।
ইতিমধ্যে আমরা মাত্র ৪৫টি প্রদর্শণী হিসেবে উন্নতজাতে ব্রিধান চাষাবাদ করেছি। এর মধ্যে ১টি প্রদর্শণীতে প্রযুক্তির ড্রামসীডের মাধ্যমে বীজধান বপন করেছি। এ ৪৫টি প্রদর্শণীর বীজ, সার, কীটনাশকসহ বিভিন্ন টেকনিক্যাল সহযোগীতা প্রদান করেছি। তবে চলতি মৌসুমে মাত্র ৬শত হেক্টর জমি অনাবাদি ছিল। আমি ও আমার সহযোগিদের নিয়ে অত্র এলাকার আবাদী জমি ত্রিফসলী জমিতে রুপান্তরিত করার প্রায়াস চালাচ্ছি। ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা যাচ্ছে।
এবিএন/সাইদুর রহমান সাইদ/জসিম/তোহা
এই বিভাগের আরো সংবাদ