আজকের শিরোনাম :

ঈশ্বরদীতে ছেলেধরা নিয়ে পুলিশের সচেতনতামূলক মাইকিং

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০১৯, ১৩:১২ | আপডেট : ২৪ জুলাই ২০১৯, ১৩:২৬

পদ্মা সেতুতে মাথা লাগবে এমন গুজবে দেশজুড়ে শুরু হয় ছেলেধরা গুজব। গুজবে কান দিয়ে ছেলে ধরা আতংকে ঈশ্বরদীবাসী। ছেলেধরার কোন সঠিক তথ্য বা প্রমাণ না পেলেও শোনা কথায় ঈশ্বরদীর সর্বত্রজুড়ে এই গুজব কাজ করছে। গুজবকে কেন্দ্র করে ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে অভিভাবকরা। ঈশ্বরদীর বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সরজমিনে দেখা যায় বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি কম। বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই প্রভাবটি বেশি কাজ করছে। কোন কোন বিদ্যালয়ে অভিভাবক পাঠদান চলাকালীন সময়ে অবস্থান করছে। প্রশাসন ও শিক্ষকরা গুজবে কান না দেওয়ার আহবান জানালেও মানছেন না অনেকেই। 

বিদ্যালয়ে উপস্থিত এক অভিভাবক বলেন বিভিন্ন মাধ্যমে ছেলেধরার খবর ছড়িয়ে পড়ছে তাই বিদ্যালয়ে ছেলেকে একা ছাড়ছি না। অনেকে গুজব বললেও সত্যি হবার আশংকায়, সঠিক তথ্য না জানা ও সচেতনতার অভাবে সন্তানদের বের হতে দিচ্ছেন না বলে মনে করেছেন অনেকেই। এ ছাড়া গত দুই দিনে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার ও ছেলেধরা সন্দেহে দুজনকে আটকের পর থেকে ঈশ্বরদী জুড়ে একটা আতংক বিরাজ করছে। ঈশ্বরদীতে প্রশাসন কার্যকরী ব্যবস্থা নিলে এই ভীতি দূর হবে বলে মনে করছেন বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা। 

ছেলেধরা গুজব কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে দাশুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. কামরুন্নাহার জানান ছেলেধরা গুজব তাঁর বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের মধ্যে কাজ করছে। বিদ্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার উপস্থিতি কম। অভিভাবকদের নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যালয়ে পৌছে দেওয়া ও নেওয়াসহ গুজবে কান দেওয়ার আহবান জানানোর পরও আতংক কাজ করছে। গত সোমবার ১১টি শিশুর মাথা পাওয়া গেছে এমন এক গুজবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত এক অভিভাবক সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন বলে জানান তিনি।

ঈশ্বরদী স্কুলপাড়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম জানান ছেলেধরা একটি গুজব। তবে এই গুজবের কারণে অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে  শিক্ষার্থীদের আসতে দিচ্ছে না। এসেম্বলিতে এই বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে। 

প্রধান শিক্ষক পূর্নিমা রায় বলেন ছেলেধরা গুজবে ঈশ্বরদীর এয়ারপোর্ট সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিতি ৪০ শতাংশ কম। পুলিশ প্রশাসন সচেতন করলে তা কেটে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

দাশুড়িয়া এমএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন ছেলেধরা গুজব তার বিদ্যালয়েও প্রভাব ফেলেছে। ছেলেধরা আতংকে বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে উপস্থিতি কম।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) অরবিন্দ সরকার জানান সারাদেশের ন্যায় ঈশ্বরদীতে ছেলেধরা গুজব কাজ করছে। এইটা নিঃসন্দেহে একটি গুজব। এই গুজব দূর করতে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক মাইকিং করা হবে। পর্যায়ক্রমে সচেতনতামূলক সভা করা হবে। কোন এলাকায় কোন মানুষকে সন্দেহ হলে হটলাইন ৯৯৯ এ কল করে জানানোর কথা বলেন তিনি। 

এবিএন/গোপাল অধিকারী/গালিব/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ