আজকের শিরোনাম :

পানিতে ভাসছে চিলমারী : ত্রাণের জন্য হাহাকার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০১৯, ১৮:০৭

বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও পানিতে ভাসছে গোটা চিলমারী। গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে পানি ২৮ সেঃমিঃহ্রাস পেয়ে বর্তমানে বিপদ সীমার ৬৩সেঃমি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত উপজেলার ৬ ইউনিয়নে প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানি বন্দি রয়েছে।সরকারিভাবে ত্রাণ অপ্রতুল হওয়ায় সবার ভাগ্যে এখনও ত্রাণ জোটেনি। ফলে বন্যা দুর্গত মানুষরা এখন চরম সংকটে রয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে ত্রাণের(শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি) জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার ৩০ হাজার ৯৩৯ পরিবারের প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলা শহরের হাসপাতালের  সামন থেকে প্রেসক্লাব চিলমারীর সামন পর্যন্ত মাত্র ২শ মিটার রাস্তা ব্যাতিত গোটা উপজেলা পানির নিচে। এই ২শ মিটার জায়গা দখল করে নিয়েছে পাশ্ববর্তী মানুষের গরু-ছাগল ও গুটি কয়েক কাচাঁমালের(সবজি) দোকান। বাড়ীতে পানি ওঠায় বানভাসী মানুষরা পরিবার পরিজন ও গরু,ছাগল নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

 মানুষের মল-মুত্র ত্যাগে মারাত্মক অসুবিধা দেখা দিয়েছে।সরেজমিনে উপজেলার রমনা ইউনিয়নের খরখরিয়া ভরটÍ পাড়া এলাকায় নৌকায় বসে রান্না করছেন মৎস জীবি সুনিল চন্দ্রের স্ত্রী যাত্রী বালা। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন,৮দিন হইলো নদীত বাড়ী ভাঙ্গি গেইছে,নিরুপায় হয়া ব্যাটা, ব্যাটার বউ আর ছোট দুকনা ছাওয়া নিয়ে নাওতে থাকি নাওতে খাই। মেম্বর চেয়ারম্যান হামার খোজ না নেয়। একই এলাকার পাউবো বাধে আশ্রয় নেয়া লাল চরন(৭৬), পূর্নিমা(৮০) ও সুরবালা(৭০)সহ অনেকে জানান, গত ৮দিন ধরে পাউবো বাধে আশ্রয় নিয়ে থাকলেও তারা সরকারী কোন ত্রাণ পাননি। একই কথা জানান,সাত ঘরি পাড়া এলাকায় পাউবো বাধে আশ্রয় নেয়া নছমান বেওয়া ও রফিয়াল হক।

রাণীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু জানান,তার ইউনিয়নে পানি বন্দি রয়েছে ৭ হাজার পরিবার অথচ তিনি ত্রাণ পেয়েছেন দুই দফায় মাত্র ১৮.৮মেঃটন চাল।যা ১হাজার ৮৮০ টি পরিবারের মাঝে বিতরণ করেছেন। তিনি আরও জানান,বন্যার্তদের জন্য যা ত্রাণ পেয়েছি তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগন্ন। থানাহাট,চিলমারী,রমনা,নয়ারহাট ও অষ্টমীরচর ইউপি চেয়ারম্যানগনও একই কথা জানান।

গোটা উপজেলায় ৩১ হাজার পরিবার পানি বন্দি থাকলেও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তথ্যমতে সরকারী ভাবে এখন পর্যন্ত ১১০ মেঃটন চাল মোট ১১ হাজার পরিবারের মাঝে ১০কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। সে মোতাবেক এখন পর্যন্ত ২০হাজার পরিবারের ভাগ্যে এখনও ত্রাণ জোটেনি।ফলে বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণের (বিশেষ করে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি) জন্য হাহাকারের সৃষ্টি হয়েছে। দূর্গতদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল হলেও শুধুমাত্র সরকারীভাবে বিতরণ করা হয়েছে। অপরদিকে সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করছে এমন এনজিও’র সংখ্যা কম নয়। অথচ বানভাসী মানুষের জন্য সামান্য কাজে আসছে কোন এনজিও। এখন পর্যন্ত কোন এনজিওকে দূর্গতদের পাশ্বে দাড়াতে দেখা যায়নি।
 

এবিএন/গোলাম মাহবুব/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ