আজকের শিরোনাম :

বগুড়ার শেরপুরে বিনামূল্যে বই পড়তে গড়ে উঠেছে ‘পলান বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০১৯, ১৫:৩৮

বই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠদান, আর এই প্রজন্মকে বই পড়তে উৎসাহি করতে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ১০নং শাহবন্দেগী ইউনিয়নে ৫নং ওয়ার্ড শেরুয়া বটতলা নওদাপাড়ায় গড়ে উঠেছে “পলান বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র” নামে একটি বেসরকারী লাইব্রেরী। জনসাধারণের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠার প্রয়াসে এই কার্যক্রম শুরু হয়। লাইব্রেরীতে বিভিন্ন ধরণের বই, সাময়িকী, পত্র-পত্রিকার সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। এছাড়া জাগতিক নানা বিষয়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরির বইসহ প্রতিবেদন, কারেন্ট এ্যাফেয়ার্স ও সাময়িকী সংগ্রহে রয়েছে। এক্ষেত্রে ফি প্রদান ছাড়াই লাইব্রেরীতে সুবিধা পেয়ে থাকেন সাধারণ নাগরিক।

খোজ নিয়ে জানা যায়, শেরপুর উপজেলায় ফ্রি সার্ভিস পাবলিক লাইব্রেরী এটি। ২৫ মার্চ ২০১৯  সালে ১০ জন যুবক নতুন প্রজন্মকে বই পড়তে উৎসাহি করতে এই লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠিত করেন। লাইব্রেরীটি নিয়মিত খোলা থাকে। এখানে সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত ১ম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র/ছাত্রীদের বিনামূল্যে প্রাইভেট পাড়ানো হয়। সামান্য কিছু বই নিয়ে চালু হওয়া লাইব্রেরীতে রয়েছে পাঠদানের বই ও দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ষান্মাসিক ও বাৎসরিক পত্রিকা, গল্পের বই, উপন্যাস ও ম্যাগাজিন।

মাত্র কয়েক মাসে তারা  প্রায় ৩শ ৫০জন পাঠকের মাঝে সেবা প্রদান করেছে। কিন্তু অল্প বই থাকায় পাঠকের চাহিদা মত সেবা দিতে পারছে না তারা। সুযোগ-সুবিধা সম্পূর্ণ নিরিবিলি ও কোলাহলমুক্ত পরিবেশে বসে বই পড়ার জন্য টেবিল ও চেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে। আলো ও বাতাসের জন্য রয়েছে লাইট ও ফ্যানের ব্যবস্থা।

উলে¬খ্য জায়গা না থাকায় এখানে মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদাভাবে বসে বই পড়ার ব্যবস্থা নেই। যেকোন মানুষ প্রয়োজনে বই বাসায় নিয়ে পড়তে পারেন। পাঠক বাসায় বই নিয়ে ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ফেরত না দিলে লাইব্রেরী থেকে পাঠকের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবার বই সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু বই সংকট হওয়ায় পাঠকের চাহিদামত বই বিতরণ করা যাচ্ছে না বলে উদ্যোগকারীরা জানান।

আবু আসাদ, হানিফ, রাজু, রাসেল আরো জানান, আমরা নিজ উদ্যোগে এটা করেছি, ওয়ার্ড মেম্বার সাইদার যথেষ্ট সহযোগিতায় করেছে। মাত্র কয়েক মাসে পাঠকের যে সাড়া পেয়েছি যদি সরকারি কোন অনুদান পাই তাহলে “পলান বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র”টি পাঠকের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে। তাই সরকারের নিকট আবেদন করছি আমাদের যেন সকল প্রকার সহযোগগিতা করেন।

এ ব্যাপারে ১০নং শাহবন্দেগী ইউনিয়নে ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার সাইদার রহমান সাবিক বলেন, প্রথম থেকেই আমি সহযোগিতা করছি। এখানে পর্যায়ক্রমে পত্রিকা ও সাময়িকী জাতীয় গণ গ্রন্থাগারে বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ষান্মাসিক ও বাৎসরিক পত্রিকা ও সাময়িকী পাওয়া যাবে। এছাড়াও চাকুরীর খবর ও কারেন্ট এ্যাফেয়ার্সও পাওয়া যাবে ।

ভবিষ্যতে এখানে পাঠকের প্রয়োজন ও চাহিদার দিক বিবেচনা করে পুরনো পত্রিকাও সংগ্রহে করার চেষ্ট চলছে। শিশু-কিশোর শিশু কিশোরদের জ্ঞানের বিকাশ ও বিনোদনের বিষয়টিকে আলাদাভাবে এখানে মূল্যায়ন করা হবে। যার ফলশ্রুতিতে লাইব্রেরীর এক অংশে আলাদাভাবে শিশু কিশোর গ্রন্থাগার গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে শিশুতোষ সকল প্রকার বই, ম্যাগাজিন ও পত্রিকা পাওয়া যায়। আমি আশা করছি সরকার ও স্থানীয় প্রতিনিধিরা সহযোগিতা করলে আবারো বই পড়ার নেশায় ঝুকবে যুবকসহ সকল প্রকার মানুষেরা।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ এমন মহৎ কাজকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। আমি আগে থেকে জানলে আরো ভালভাবে গ্রন্থাগারের কাজ করে দেওয়া যেত।  উপজেলা প্রশাসন থেকে “পলান বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের” প্রসার ঘটানোর জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।


এবিএন/শহিদুল ইসলাম শাওন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ