আজকের শিরোনাম :

ক্ষেতলালে বায়ার কোম্পানির ধানের বীজ কিনে কৃষকের সর্বনাশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০১৯, ১৬:৫৬

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষকরা বায়ার কোম্পানির ধানী গোল্ড বীজ কিনে কৃষকের সর্বনাশ, কৃষকরা প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভুগী কৃষকরা জানান, বায়ার কোম্পানির ধানী গোল্ড হাইব্রিড জাতের নিন্ম মানের ধান বীজ চলতি মৌসুমে বাজারে ছেড়ে একদিকে কৃষকদের সাথে প্রতারণা করেছে অন্যদিকে অধিক মুনাফা লুটিয়েছে ওই কোম্পানি।

 উপজেলার জামুহালী গ্রামের আজিজার রহমান জানান-  ২৫ কেজি ধানী গোল্ড হাইব্রিড জাতের বায়ার কোম্পানীর ধান বীজ কিনে সকল প্রক্রিয়া মেনে বীজ বোপন করেছি। তবে অর্ধেকেরও কম বীজের চারা গজিয়েছে। আমি এখন চরম বিপাকে পরেছি। উচ্চ মূল্যে বীজ কিনেছি অধিক ফলন পাবার আশায়, এখনিই যে অবস্থা না জানি ফলনে কি বিপর্যয় ঘটে। ওই পরিমান বীজ দিয়ে ১৬-১৮ বিঘা জমি রোপন করার কথা থাকলেও ৪ বিঘার বেশি জমি কোন ক্রমেই রোপন করা সম্ভব নয়। আমার এ দূর্দশার কথা ডিলারকে বলেও কোন ফল পাইনি। বায়ার কোম্পানী আমাদের মত সরল সাদা কৃষকদের ঠকিয়ে ফায়দা হাসিল করছে। বায়ার কোম্পানী সহ যে সকল প্রতারক কোম্পানী বাজারে দেখা যায়  কর্তৃপক্ষ যেন তাদের বিরুদ্ধে কঠর ব্যবস্থা নেয় এ আমার অনুরোধ। অন্যথায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হতেই থাকবে, কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হলে পরোক্ষ ভাবে  দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।  

একই ধরনের অভিযোগ করেন, উপজেলার চক নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মিঠু মিয়া, পৌর সদরের আব্দুস সবুর খাঁন, রামপুরা গ্রামের আফজাল হোসেন, কোড়লগাড়ি গ্রামের শহিদুল ইসলামসহ শতাধিক কৃষক।

বায়ার কোম্পানীর ডিলার ইটাখোলা বাজারের আলিফ বীজ ভান্ডার এর স্বত্তাধিকারী ওসমান উজ্জামানের কাছে ধানী গোল্ড বীজের এমন বিপর্যয়ের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক কৃষক আমার কাছে অভিযোগ দিয়েছে।

আমি সরেজমিনে গিয়ে বীজতলা দেখে তাদের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। বিষয়টি বায়ার কোম্পানীর কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি, ইটাখোলা বাজারে খুচরা বীজ বিক্রেতা ইপিআই ট্রেডিং এর স্বত্ত্বাধীকারী হাবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, বায়ার কোম্পানীর ধানী গোল্ড বীজ আমিও বিক্রি করেছি। যারা নিয়ে গেছে তারা অনেকেই আমার কাছে অভিযোগ করেছে।

যারা অভিযোগ করেছে তাদের বীজ তলা দেখেছি অর্ধেক বীজ গজিয়েছে। ধানী গোল্ড বীজ আমার কাছে অত্যন্ত নিন্মমানের বীজ মনে হয়েছে। কারণ বায়ার কোম্পানী কৃষকদের ঠকাবে বলেই ডিলারদের অফার দিয়েছে ১০ টন বীজ বিক্রয় করতে পারলে বিনা খরচে ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ করাবেন কোম্পানী। অফারটি পেয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে বীজ ডিলাররা।  প্রতি কেজি প্যাকেট ৪শ ১৫ টাকা খুচরা মূল্য থাকলেও কম লাভে বেশী বিক্রির জন্য ৩শ ২০-৩০ টাকা দরে বিক্রয় করছেন তারা।   

বায়ার কোম্পানীর বগুড়া এরিয়া ম্যানেজার কৃষিবিদ হেফজুল কবির জানান, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা দিন, এমনটি কেন হল আমরা কারণ খোঁজে দেখব। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপুরণ দেয়া হবে কিনা এব্যপারে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বায়ার কোম্পানীর ধানী গোল্ড বীজের ব্যাপারে কৃষকদের অভিযোগ পেয়েছি।  বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। কৃষকদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে প্রমাণ হলে কোম্পানীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


এবিএন/মিজানুর রহমান/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ